আজ শনিবার। ১৮ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৪ঠা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৯ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় দুপুর ২:০৬

পল্লী বিদ্যুৎতের অবৈধ সংযোগর কারণে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে বাবা ও দুই ছেলে নিহত

পল্লী বিদ্যুৎতের অবৈধ সংযোগর কারণে বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে বাবা ও দুই ছেলে নিহত
নিউজ টি শেয়ার করুন..

পঞ্চগড় প্রতিনিধি
পঞ্চগড় সদর উপজেলার হাফিজাবাদ ইউনিয়নের মাহানপাড়া এলাকায় শনিবার রাতে মাছ ধরতে গিয়ে বিদ্যুৎ স্পৃষ্টহয়ে একই পরিবারের বাবা ও দুই ছেলে নিহত হওয়ার ঘটনায় এলাকায় ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

পরিবার এবং এলাকাবাসী পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের কারণেই এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তারা ঘটনার সঠিক তদন্ত করে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে জড়িতদের বিচার দাবি করেছেন। মৃত দুই ভাইয়ের মামা রশিদুল
ইসলাম জানান,পল্লি বিদ্যুতায়ন বোর্ডের কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের যোগ সাজসে
দীর্ঘদিন ধরে তারা এই ব্যবসা করছেন ।

সংযোগ দেয়া প্রত্যেক বাড়ি থেকে তারা মাসে ৬শ থেকে ৭শ টাকা নেয়। পরিবারের সদস্যরা অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগে যারা জড়িত তাদের বিচার এবং ক্ষতি পূরনের দাবি করেছেন। নিহতদের প্রতিবেশি আব্দুর রাজজ্জাক জানান, অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগকারী তৌহিদুল আব্দুল মজিদের নিজস্ব বাড়ি রয়েছে। তারপরও তারা আশ্রায়ন
প্রকল্পে বাড়ি বরাদ্দ নিয়ে অবৈধ বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবসা করছে।

মৃত শহীদুল ইসলামের ৫ ছেলে । দ্বিতীয় ছেলে নাছির আলী জানান, ছোট ভাই আসাদুল ইসলাম মাত্র ২১ দিন আগে বিয়ে করেছিল। বড় ভাইয়ের দুই সন্তান স্কুলে লেখাপড়া করে। তাদের চলে যাওয়া আমাদের তিনটি পরিবারকে নিশ^ : করে দিল।


হাফিজাবাদ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুসা কলিমুল্লাহ প্রধান জানান, বিদ্যুতের লাইনটি
সম্পুর্ণ অবৈধ এবং ঝুঁকিপূর্ণ ছিল । পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির আগেই খোঁজ খবর নেয়ার
প্রয়োজন ছিলো। ঘটনাটির একটি সুষ্ঠু তদন্ত হোক এটাই আমাদের দাবি।
এ ব্যাপারে ঠাকুরগাঁও পল্লিবিদ্যুৎ সমিতির মহাব্যবস্থাপক আবু আশরাফ সালেকের সঙ্গে
যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। তিনি জানান খোঁজ খবর
নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে।


স্থানীয়রা জানায় শনিবার সন্ধার পর বাড়ির পাশেই একটি পানি জমা ক্ষেতে মাছ ধরতে গেলে প্রথমে বড় ছেলে নজিরুল ইসলাম(৩১) বিদ্যুৎ স্পৃস্ট হয়। পরে তার ছোট ভাই আসাদুল ইসলাম (২১) তাকে উদ্ধার করতে গেলে সেও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়। শেষে বাবা শহিদুল ইসলাম (৬০)তাদের উদ্ধার করতে গেলে তিনিও বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়। স্থানীয়রা বিদ্যুত সংযোগ বন্ধ করে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করালে চিকিৎসক তাদের মৃত ঘোষণা করেন। রাতেই হাসপাতালে গিয়ে নিহত পরিবারের খোঁজ খবর নেন জেলা প্রশাসক। রোববার সকালে নিহতদের দেখতে হাজার হাজার উৎসুক জনতা তাদের বাড়িতে ভির জমান। রোববার দুপুরে তাদের দাফন সম্পন্ন হয়।


স্থানীয় ও পরিবারের লোকজন জানায় পানিমাছ পুকুরী আশ্রায়ন প্রকল্পের দুটি বাড়ি থেকে বাশের খুটি দিয়ে এই অবৈধ বিদ্যুৎ লাইন দেয়া হয়েছে।পঞ্চগড়ের পানিমাছ পুকুরী
আশ্রায়ন প্রকল্প থেকে অবৈধ ভাবে বাঁশের খুটি এবং একটি মাত্র তার দিয়ে মাহান পাড়া
এলাকার প্রায় ৩০/৪০টি বাড়িতে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ সংযোগ দেয়া হয়েছে। এই সংযোগের
একটি তার ছিড়ে গিয়ে পানিতে পড়লে ঐ এলাকাটি বিদ্যুতায়িত হয়ে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
আশ্রায়ন প্রকল্পে বসবাস কারী আব্দুল মজিদ ও তৌহিদুল ইসলাম তাদের বাড়ি থেকে এই
সংযোগ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন আশ্রায়ন প্রকল্পের অধিবাসীরা।

জেলা প্রশাসক সাবিনা ইয়াসমিন জানান থেকে নিহত পরিবারকে তাৎক্ষণিক ৫০ হাজার
টাকা অর্থসহায়তা দেয়া হয়েছে। এছাড়া অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে প্রধান করে
তিনসদস্য বিশিষ্ট্য একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটিকে তিন কার্যদিবসের
মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর