২৩ বছর বয়সী বৃষ্টির বিয়ে হয়েছে মাস কয়েক আগে। অন্য সব মেয়েদের মতো সুখের সংসার বাধার স্বপ্ন ছিল বৃষ্টির চোখেও। কিন্তু যার সাথে ঘর বাধবেন, সেই স্বামী মাহবুব যেন মানুষরূপী হিংস্র পশু। যৌতুকের দাবিতে বৃষ্টির উপর চালিয়েছেন মধ্যযুগীয় বর্বরতা। পাষ- স্বামী তাকে লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করেছেন। আগুনের ছ্যাঁকা দিয়েছেন সারা শরীরে। লোকের সামনে যেন মুখ দেখাতে না পারেন, সেজন্য স্ত্রীর মাথা ন্যাড়া করে দিয়েছেন নির্দয় মাহবুব। ফরিদপুর শহরের আলীপুর শাপলা সড়ক এলাকায় এমন নির্মম ঘটনা ঘটেছে।
স্থানীয়রা জানান, কয়েক মাস আগে রথখোলা এলাকার মিলন সরদারের কন্যা বৃষ্টি বেগমকে (২৩) বিয়ে করেন আলীপুরের মো. মাহবুব। বিয়ের পর থেকেই যৌতুক দাবি করে বৃষ্টিকে মারধর করত মাহবুব। একাধিকবার নির্যাতনের শিকার হন বৃষ্টি। একপর্যায়ে স্বামীর ঘর ছেড়ে বাবার বাড়ি চলে আসেন। কিন্তু মাহবুব আর নির্যাতন না করার শর্তে বৃষ্টিকে তার কাছে নিয়ে আসেন। তবে কথা রাখেননি।
গত বৃহস্পতিবার বৃষ্টির ওপর বর্বর নির্যাতন চালান মাহবুব। মারধর করে ফরিদপুর শহরের বাইরে নিয়ে যায় বৃষ্টিকে এবং একটি বদ্ধ ঘরে আটকে রাখেন। এদিকে বৃষ্টির কোনো খোঁজ না পেয়ে গতকাল শনিবার বিকালে ফরিদপুর কোতোয়ালি থানায় জিডি করেন স্বজনরা। সন্ধ্যায় রথখোলার একটি বাড়ি থেকে বৃষ্টিকে গুরুতর আহত অবস্থায় উদ্ধার করে পুলিশ। এ সময় মাহবুবকেও আটক করা হয়।
আহত বৃষ্টি জানান, মাথার চুল কেটে দেওয়ার পর তাকে কয়েক দফায় লোহার রড ও হাতুড়ি দিয়ে পেটানো হয়। গতকাল বৃষ্টির এমন করুণ দশা দেখে স্বজনরা কান্নায় ভেঙে পড়েন। তারা মাহবুরের কঠোর শাস্তি দাবি করেন।
বৃষ্টিকে ফরিদপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ফরিদপুর কোতোয়ালি থানার ওসি এএফএম নাসিম জানান, বৃষ্টির ওপর নির্মম নির্যাতন চালানো হয়েছে। তার স্বামী মাহবুবের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।