আজ বৃহস্পতিবার। ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় দুপুর ২:১১

হলি আর্টিজানে প্রাণ হারান যারা

হলি আর্টিজানে প্রাণ হারান যারা
নিউজ টি শেয়ার করুন..

রাজধানীর গুলশানে হলি আর্টিজান হামলার দিনটি ছিল সাপ্তাহিক ছুটির দিন। শুক্রবার সন্ধ্যা পর্যন্ত সবকিছুই ঠিক ছিল। এরপর যেন ‘অন্ধকারে’ বাংলাদেশ। ২০১৬ সালের ১ জুলাইয়ের সেই জঙ্গি হামলায় ২০ জন নিহত হন।
এদের মধ্যে তিন বাংলাদেশি, এক ভারতীয়, নয় ইতালীয় এবং সাত জাপানি নাগরিক নিহত হন। জাপানি নাগরিকদের বিস্তারিত পরিচয় পাওয়া না গেলেও বাংলাদেশি, ভারতীয় এবং ইতালীয় নাগরিকদের আংশিক পরিচয় পাওয়া গেছে।

নিহত তিন বাংলাদেশি নাগরিক:
ওই জঙ্গি হামলায় অবন্তি কবির (১৮) নামের এক যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী তরুণী নিহত হন। তিনি জর্জিয়ার ইমোরি অক্সফোর্ড কলেজের ছাত্র ছিলেন। পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে বেড়াতে ঢাকায় এসেছিলেন।

‪ওই হামলায় ফারাজ হোসেইন (২০) নিহত হন। তিনি অক্সফোর্ড কলেজ অফ ইমোরি ইউনিভার্সিটি থেকে ওই বছর স্নাতক অর্জন করেন। ২০১৬ সালের মে মাসের ১৮ তারিখ গ্রীষ্মকালীন ছুটিতে ঢাকায় এসে দুই বন্ধুকে নিয়ে হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নৈশভোজে গিয়েছিলেন।

এছাড়া হামলায় বাংলাদেশের শিল্প ব্যক্তিত্ব ইশরাত আকন্দ নিহত হন। তিনি প্রায় ২০ বছর ধরে শিল্পকলা চর্চা করে আসছেন। ইন্সটিটিউট অফ এশিয়ান ক্রিয়েটিভসের (আইএসি) তত্ত্বাবধানে ছিলেন তিনি। ইশরাত ইতালীয় ব্যবসায়ীদের সঙ্গে শুক্রবার গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে নৈশভোজে অংশ নিয়েছিলেন।

নিহত ভারতীয় নাগরিক:
হলি আর্টিজানের হামলায় তারুশি জেইন (১৮) নামের এক ভারতীয় নাগরিক নিহত হন। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়ার ছাত্রী ছিলেন। জঙ্গি হামলার শিকার হওয়ার এক সপ্তাহ আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন।

হামলায় নিহত নয় ইতালিয়ান নাগরিক:
ক্লাউদিয়া মারিয়া ডি এন্তোনা (৫৬) নামের এই ইতালির নাগরিক ফেডো ট্রেডিং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। ওই ইতালীয় কোম্পানী বাংলাদেশে কাজ করছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ভারতে ও তারপরে বাংলাদেশে ছিলেন। ইতালীয় নাগরিকদের মধ্যে একমাত্র মারিয়ার স্বামী গিয়ান গালিয়াজ্জো বোসছেত্তিই সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। তারা দুজন হলি আর্টিজানে নৈশভোজে অংশ নেন। পরে গিয়ান পালিয়ে যেতে সক্ষম হন।

সাত মাসের অন্ত:সত্ত্বা সিমোনা মন্টি (৩৩) রোম থেকে কিছু দূরের মাগলিয়ানো সাবিনো শহরে বাস করতেন। জঙ্গি হামলার ঘটনার ওই সপ্তাহে তার ইতালিতে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল। তাই বন্ধুদের বিদায় জানানোর জন্য তিনি হলি আর্টিজানে গিয়েছিলেন। সেখানেই নিহত হন।

গুলশানের রেস্টুরেন্টে হামলায় মারকো তোন্দাত নামে আরো এক ইতালীয় নাগরিক নিহত হন। তার বয়স ছিল ৩৯ বছর। এক বছর আগে তিনি কাজেরন সন্ধানে ঢাকায় এসেছিলেন।

ইতালীয় নাগরিক নাদিয়া বেনেদেত্তি (৫২) বাংলাদেশে কাজ করতেন। তিনি স্টুডিওটেক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন। ২০ বছর ধরে তিনি বাংলাদেশে বসবাস করছিলেন।

আদেলে পুগলিসি (৫০) ইতালির ক্যাটেনিয়ার নাগরিক। আদেলে আর্টসানায় একটি টেক্সটাইল গ্রুপের মাননিয়ন্ত্রক ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। তিনি শনিবারে নিজে দেশে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই শুক্রবারের হামলায় নিহত হন তিনি।

ক্রিসটিয়ান রোজি (৪৭) ফেলেত্তো আমবারতো প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপক ছিলেন। তিন বছরের জমজ কন্যা সন্তানের বাবা ছিলেন ক্রিসটিয়ান। তিনি বাংলাদেশে থেকে পণ্য নিয়ে ইতালিতে বিক্রি করতেন। ফিবরেস লিমিটেড নামে তার নিজের একটি প্রতিষ্ঠান রয়েছে। বাংলাদেশ এবং চীনে তার এই প্রতিষ্ঠান কাজ করছে।

ক্লাউডিও কাপেল্লি (৪৫) ভেদেনো ইতালির মোনজা প্রদেশের আল লামব্রো এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পাঁচ বছরের বেশি সময় ধরে বাংলাদেশে নিজের একটি টেক্সটাইল কোম্পানী চালাচ্ছিলেন। তার ৬ বছর বয়সী এক কণ্যা সন্তান ছিল।

ভিনসেনজো দাল্লেসত্রো (৪৬) ইতালির পিয়েদিমোনতে মাতেসের কাসেত্রার নাগরিক। তিনি ১৯৯৩ সালে গ্লোসোপের নাগরিক মারিয়াকে বিয়ে করেন। তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায়নি। টেক্সটাইলের কাজে তিনি ঢাকা এসেছিলেন।‪

মারিয়া রিবোলি (৩৪) স্বামী এবং তিন বছর বয়সী মেয়ে নিয়ে ইতালির সোলজায় বাস করতেন। তার তিন বছর বয়সের একটি কণ্যা সন্তান রয়েছে। তিনি ব্যবসায়িক কাজে কয়েক মাস আগে বাংলাদেশে এসেছিলেন। তিনি একটি টেক্সটাইল কোম্পানীতে কর্মরত ছিলেন। শুক্রবার রাতে গুলশান রেস্টুরেন্টে হামলায় নিহত হন মারিয়া।

নিহত হন জাপানী সাত নাগরিক:
‪গুলশান রেস্টুরেন্টে ওই হামলার ঘটনায় সাত জাপানি নিহত হন। এদের মধ্যে পাঁচ পুরুষ এবং দুই নারী। এরা হলেন, তানাকা হিরোশি, ওগাসাওয়ারা, শাকাই ইউকু, কুরুসাকি নুবুহিরি, ওকামুরা মাকাতো, শিমুধুইরা রুই ও হাশিমাতো হিদেইকো। এদের ছয়জনই মেট্রোরেল প্রকল্পের সমীক্ষা কাজে নিয়োজিত ছিলেন। এদের বিস্তারিত পরিচয় জানা যায়নি।

সূত্র : ডেইলি বাংলাদেশ


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর