আজ সোমবার। ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৬ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১১ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় সকাল ৭:১৭

সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে শিশু-কিশোর

সিগারেটের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে শিশু-কিশোর
নিউজ টি শেয়ার করুন..

শরিফুল খান প্লাবন, মুন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি:-

শিশুর অন্তরে ঘুমিয়ে আছে গোটা জাতি। আগামী দিনে দেশ-জাতির উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বপ্ন নিয়ে জাতি তাকিয়ে আছে দেশের কোমলমতি শিশুর অন্তরে। আজকের নবীন প্রজন্ম আগামী দিনের সোনালি ভবিষ্যৎ। জাতির আগামী দিনের স্থপতি।

আর এই শিশু কিশোররা জড়িয়ে পড়ছে ধূমপানের সাথে। মুন্সীগঞ্জের নামিদামি স্কুলের শিক্ষার্থী থেকে শুরু করে রাস্তায় বেড়ে ওঠা শিশুটিও ঝুঁকছে ধূমপানের দিকে। আস্তে আস্তে তারাই জড়িয়ে পড়ছে নেশার জগতে। নতুন ক্রেতা পেতে সুপরিকল্পিতভাবে জাল পাতছে মাদক ব্যবসায়ীরা। আর মাদকের সেই জালে সবার আগে আটকে যাচ্ছে শিশু কিশোররাই।

মুন্সীগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার শ্রীনগর পাইলট ইস্কুল এন্ড কলেজ এর দক্ষিণ পাশে চারজন শিক্ষার্থীদের একটি ঝটলা চোখে পড়ল। তারা যেন কিছু একটা করার চেষ্টা করছে। একটু এগিয়ে দেখলাম – শিক্ষার্থীরা একটি সিগারেট জ্বালানোর চেষ্টা করছে।নিজের পরিচয় গোপন রেখে কথা বললাম ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়ুয়া সাদমান এর সঙ্গে। জানতে চাইলাম তার কাছে, এই সব খেয়ে কি লাভ? তোমরা তো এখনো অনেক ছোট! সাদমান কে করা প্রশ্নের উত্তর দিলো পাশ থেকে ফয়সাল, ভাই স্মার্ট হতে হলে এগুলো খেতে হয়, বলতে পারেন এটা স্টাইল বা ফ্যাশন। কথাটা শুনে আমি একটু আতকে গেলাম।

কিছুক্ষণ পরে কথা হল অষ্টম শ্রেণীতে পড়ুয়া নিলয়ের সাথে তিনি বললেন – ধূমপান খারাপ কিছু না। আমার বাবা,মামা ধূমপান করে, খারাপ হলে তো তারা ধূমপান করত না। অষ্টম শ্রেণীর সাফি জানালেন – এগুলো আবার নেশা কিসের। আমরা তো নেশা করি না। তাছাড়া জীবনে সব অভিজ্ঞতা রাখার দরকার আছে। একই ক্লাসে পড়া সজীব একটু ভিন্ন সুরে বললেন -বন্ধু বান্ধব দের সাথে আড্ডায় এলে খাই। এছাড়া আমি খাইনা। বন্ধু বান্ধব খায়, তাই আমিও চেষ্টা করি। বন্ধুবান্ধব ছাড়া তো আর চলা যায় না।

এইতো গেল শিক্ষার্থীদের কথা।এবার কথা হলো একজন বাস হেলপার ১৩ কি ১৪ বছরের অনিকের সাথে। লিকলিকে শরীরের অনিক বলেন, ভাই সিগারেট খেলে শান্তি লাগে। আমার লগে সবাই সিগারেট খায়। তাই আমিও খাই, আমার ভালো লাগে।

শ্রীনগর বাজারে গড়ে ওঠা দোকানদাররা চাওয়ামাত্র শিক্ষার্থীদের কাছে সিগারেট বিক্রি করছে। শ্রীনগর পাইলট ইস্কুল এন্ড কলেজের এখানে সিগারেট বিক্রেতা চোখে পড়ার মতো। জানতে চাইলাম সিগারেট বিক্রেতা একজনের কাছে, আপনি কেন এই ১১/১২ বছরের ছেলেদের কাছে সিগারেট বিক্রি করছেন? তিনি বলে মামা সবাই করে, তাই আমিও করছি।

শ্রীনগর সরকারি কলেজে যেতে ভাগ্যকুল রোডে চায়ের দোকানের পিছনে স্কুল পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা নির্ভয় করছেন ধূমপান।

কয়েকজন অভিভাবকের সাথে এই বিষয়ে কথা বললে তারা জানান- বর্তমানে শিশুদের খেলার মাঠ নেই বললেই চলে। নেই সুস্থ বিনোদনের সুযোগ। কিন্তু পড়ালেখার পাশাপাশি তাদের শারীরিক ও মানসিক বিনোদন তো প্রয়োজন। মা বাবাকে আরো সজাগ দৃষ্টি দিতে হবে সন্তানদের প্রতি।সরকারের উচিত কঠিন আইন করা যাতে স্কুলের ছাত্রদের কাছে সিগারেট বিক্রি না করে দোকানদাররা এবং স্কুল কলেজের সামনে কোন দোকানদার যেন সিগারেট না রাখে।

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর