আজ শুক্রবার। ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৮ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় দুপুর ২:২৩

১০ টাকার গোলাপ আজ ১০০ টাকা

১০ টাকার গোলাপ আজ ১০০ টাকা
নিউজ টি শেয়ার করুন..

চার দিন আগে যে গোলাপ ফুল বিক্রি হয়েছিল ১০১৫ টাকা, সেটি এখন কুমিল্লার বাজারে ১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। চার দিনের ব্যবধানে এতটা দাম বেড়ে যাওয়ায় অবাক হয়েছেন ফুল কিনতে আসা অনেক ক্রেতা।

ফুল ব্যবসায়ীরা বলছেন, ফাল্গুন আর ভালোবাসা দিবস একই দিনে হওয়ায় চাহিদা বেড়েছে গোলাপের। ক্রেতারা বলছেন, সুযোগে অতিরিক্ত দাম নিয়ে বেশি মুনাফা করছেন ব্যবসায়ীরা।

ভালোবাসা দিবসের আগের দিন সোমবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় কুমিল্লার নিউমার্কেট, পুলিশ লাইনস, ধর্মসাগরপাড়, ঝাউতলা, কোটবাড়ি ক্যান্টনমেন্ট এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, সব দোকানে ১০০ থেকে ১১০ টাকা পর্যন্ত গোলাপ ফুল বিক্রি হচ্ছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, এসব এলাকার ফুলের দোকানগুলোতে ক্রেতাদের ভিড়। এই ভিড় সামলাতে দোকানের সামনে অস্থায়ীস্টল খুলে বসেছেন ব্যবসায়ীরা। কোনও দোকানে তিন জন, কোনোটায় ছয় জন পর্যন্ত কর্মচারী রয়েছেন।

এসব দোকানে তিন ধরনের গোলাপ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে একটি দেশি, বাকি দুটি চায়না৷ চায়না হলুদ গোলাপ চার দিন আগে বিক্রি হতো ১০১৫ টাকা, এখন তা ১০০১১০ টাকা। চায়না সাদা গোলাপ বিক্রি হতো ২০ টাকা, এখন তা ৯০ টাকা। দেশি গোলাপ আগে ছিল ১০১৫ টাকা, এখন ৬০৭০ টাকা।

ছাড়া জারবেরা, গ্লাডিওলাস, রজনীগন্ধা, ভুট্টা কেলেনডোলা, চন্দ্রমল্লিকা, জিপসি গাঁদাসহ নানা জাতের ফুল রয়েছে দোকানগুলোতে। সেগুলোর দামও বেড়েছে। তবে চাহিদা তুলনামূলক কম হওয়ায় সেগুলোর দামের বিষয়ে কারও অভিযোগ নেই।

এদিকে, প্রত্যেক স্টলে গোলাপ নিয়ে দরদাম করতে দেখা গেছে ক্রেতাদের। বেশি দাম হওয়ায় অনেকে চারটির স্থলে দুটি, ১০টিরস্থলে পাঁচটি কিনেছেন।

বন্ধুদের নিয়ে ফাল্গুন বরণের জন্য ফুল কিনতে এসেছেন কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া সরকারি কলেজের স্নাতক তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থীরিফা তাসনিয়া মৌটুসী, আতিকুর রহমান সিনথিয়া শারফিন।

নিউমার্কেট এলাকায় গোলাপের দরদাম করছিলেন রিফা তাসনিয়া মৌটুসী। তিনি বলেন, আগে ১৫ টাকা দিয়ে গোলাপ নিতাম, এখন ১০০ টাকা দিয়ে নিলাম। ভেবেছিলাম অনেকগুলো নেবো। কিন্তু মাত্র তিনটি নিয়েছি। আর ক্রাউনের দামও অনেক বেশি।কয়েকদিন আগেও ১৫০ টাকায় প্লাস্টিকের ফুলের ক্রাউন পাওয়া যেতো। এখন ২০০ টাকার নিচে ক্রাউন পাওয়া যায় না। এভাবেফুলের দাম বাড়িয়ে ফাল্গুন ভালোবাসা দিবসের আনন্দটাই মাটি করে দিলেন ব্যবসায়ীরা।

ফুল কিনতে আসা মিনহাজুর রহমান বলেন, বোনের জন্য ক্রাউন নিতে বলেছে। একটি ক্রাউনের দাম এক কেজি মুরগির মাংসের দামের চেয়েও বেশি। এভাবে দাম বাড়ালে কি আর আনন্দ থাকে?

১২ বছরের বেশি সময় ধরে নিউমার্কেট এলাকায় ফুলের দোকানে কাজ করছেন মো. ফারুক। তিনি বলেন, বিভিন্ন দিবসের সাতদিন আগে ফুল স্টক করতে হয়। না হয় ফুল পাওয়া যায় না। আর পাইকাররা চাহিদা বুঝে দাম বাড়িয়ে দেন। তাই আমাদের আরকিছু করার থাকে না। দাম বেশি দিয়েই কিনতে হয়। বেশি দামেই বিক্রি করতে হয়।

কুমিল্লার বাজারে গোলাপের চাহিদা বেশি উল্লেখ করে ফারুক বলেন, গোলাপের পাশাপাশি ক্রাউনের চাহিদাও বেশ। এজন্য দামবেশি। তবে অন্যান্য ফুলের চাহিদা কম। এজন্য দামও তেমন বাড়েনি।

তবে যেকোনো দিবস এলে সিন্ডিকেট করে ফুলের দাম বাড়ানো হয় বলে জানালেন কুমিল্লার সুগন্ধা ইভেন্ট প্ল্যানার্সের মালিক মো. জাফিন। তিনি বলেন, আমরা বেশি দামে কিনি বলে বেশি দামে বিক্রি করতে হয়। ছাড়া একদুই দিন আমাদেরও ব্যবসা করতে হয়। কারণ সারা বছর তো আর ফুলের চাহিদা থাকে না। দিবস ঘিরেই সবার ব্যবসা। সেজন্য দামটা একটু বেশি।এরপরও ফুলের টান পড়বে। মঙ্গলবার আরও বেশি দামে ফুল বিক্রি হবে।

তবে ফুলের দাম অতিরিক্ত রাখার বিষয়ে এখন পর্যন্ত কোনও অভিযোগ পাননি বলে জানিয়েছেন ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর কুমিল্লার সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আসাদুল ইসলাম।তিনি  বলেন, ভোক্তা অধিকারসংরক্ষণ অধিদফতর দাম নির্ধারণ করে না। তবে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন লঙ্ঘনের প্রমাণ পেলে ব্যবস্থা নেবোআমরা।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর