স্থাপনের জায়গা না থাকার কথা বলে কুষ্টিয়ায় তাঁত বোর্ডের ৩৪ কোটি টাকার বেশ কয়েকটি যন্ত্র ফেলে রাখা হয়েছে খোলাআকাশের নিচে। ৯ মাস ধরে তাঁত বোর্ড কার্যালয়ের ভেতর মাটির ওপর পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে যন্ত্রগুলো। পলিথিনছিদ্র হয়ে ভেতরে ঢুকছে পানি।
তাঁতশিল্পের আধুনিকায়ন ও ভারত–চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পাল্লা দিতে একটি প্রকল্পের আওতায় যন্ত্রগুলো কেনাহয়েছিল। কাপড়ের রং, সাইজিং, সেন্টারিং ও ফোল্ডিংয়ের কাজে যন্ত্রগুলো ব্যবহারের কথা।
কুষ্টিয়া তাঁত বোর্ডের কার্যালয় কুমারখালী উপজেলায়। বোর্ড সূত্রে জানা গেছে, কুমারখালীর ঐতিহ্যবাহী তাঁতশিল্পেরআধুনিকায়নে সরকার ২০১৬ সালে প্রকল্প হাতে নেয়। এরপর ৩৪ কোটি টাকায় এসব আধুনিক যন্ত্র কিনে গত বছরের ডিসেম্বরেকুষ্টিয়ায় পাঠায় বাংলাদেশ তাঁত বোর্ড।
তাঁতসংশ্লিষ্টরা বলছেন, আধুনিক এসব যন্ত্র বসাতে দুই সপ্তাহ সময় লাগার কথা। কিন্তু নানা অজুহাত দেখিয়ে মাসের পর মাসফেলে রাখা হচ্ছে। অথচ আধুনিক যন্ত্র ব্যবহার করে তাঁতশিল্পের সুদিনের অপেক্ষায় তাঁতিরা।
কুমারখালীর তেবাড়িয়া এলাকার আব্দুল মালেক নামের এক তাঁতি বলেন, ‘যন্ত্রগুলো ব্যবহার করতে পারলে বড় বড় বস্ত্রকারখানার পাশাপাশি ক্ষুদ্র তাঁতিরা বেশি উপকৃত হবেন। এতে এ এলাকায় আরও নতুন নতুন তাঁত গড়ে উঠবে।
কুমারখালী তাঁতি সমিতির সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘এত টাকার মেশিন সরকার তাঁতিদের উপকারের জন্য দিলেওস্থাপন না হওয়ায় কোনো উপকারেই আসছে না। আমরা চাই এই যন্ত্রগুলো দ্রুত স্থাপন করা হোক। এ নিয়ে তাঁত বোর্ডের সঙ্গেদফায় দফায় কথা বলেও কাজ হচ্ছে না।’
কুমারখালীর লক্ষাধিক তাঁতি নিজেদের তৈরি কাপড় রপ্তানি করে ভারত ও চীনের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেন।
রানা টেক্সটাইলের পরিচালক মাসুদ রানা বলেন, ‘গত বছরের ডিসেম্বরে যন্ত্রগুলো আসার পর এখনো স্থাপন করা হয়নি। এসবইলেকট্রনিক যন্ত্র রাখার জন্য নিরাপদ স্থান দরকার। কিন্তু খোলা আকাশের নিচে ফেলে রাখায় স্থাপনের পর আদৌ তা ঠিকভাবেকাজ করবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ তৈরি হয়েছে।’
এ বিষয়ে তাঁত বোর্ডের সহকারী মহাব্যবস্থাপক মেহেদী হাসান বলেন, ‘ভেতরে পুরোনো মেশিন থাকার কারণে কিছু মেশিন বাইরেপড়ে আছে। ৮০ ভাগ মেশিন ভেতরে আছে। চলতি মাসের মধ্যে পুরোনো যন্ত্রগুলো সরিয়ে ফেলা হবে। তখন ফাঁকা স্থানে নতুনযন্ত্রগুলো বসবে।’
মেহেদী হাসান বলেন, ‘বোর্ডের চেয়ারম্যানও আগামী তিন মাসের মধ্যে মেশিনগুলো স্থাপন ও চালু করার ব্যাপারে বলেছেন।
বাইরে ফেলে রাখার বিষয়ে মেহেদী হাসান বলেন, ‘যন্ত্রগুলো বাইরে সুরক্ষিতভাবেই রাখা হয়েছে। এগুলো নষ্ট হওয়ার আগেইস্থাপনের চেষ্টা চলছে।
তথ্য সূত্র : দৈনিক বাংলা
