আল–আমিন (সজিব):
সারা বিশ্বে যখন মানুষ মারার মহা হত্যাযজ্ঞ চলছিলো। এখনো সারা বিশ্বব্যাপী মানুষ মারার হত্যাযজ্ঞ চলছে । শাস্ত্রে বলে এক, মানুষ করে আরেক। সারা বিশ্বে বড় বড় দেশগুলোই কোটি-কোটি, বিলিয়ন-বিলিয়ন, ট্রিলিয়ন-ট্রিলিয়ন ডলারের অস্র তৈরি হচ্ছে। এইগুলো একটাও বাঘ, ভালুক, সিংহ মারার জন্য না। সব মানুষ মারার জন্য। সারা বিশ্বের কোটিপতিরা নেপথ্যে থেকে হিরোইন, ইবা, আফিম, ও বিভিন্ন ধরনের মাদকদ্রব্য তৈরি করছে আর যুব সমাজের মাঝে ছেড়ে দিচ্ছি এটাও এক ধরনের হত্যাযজ্ঞ। এটা কৌশলে মানুষকে হত্যা করছে। এই ভাবে প্রতিদিন মানুষ হয়ে মানুষকে হত্যা করে চলছিলো।
ঠিক এই সময়, মহান সৃষ্টিকর্তা করোনা ভাইরাস নামক এক অণুজীব দিয়ে বুঝিয়ে দিলেন পৃথিবীতে সবাই সমান। পৃথিবীতে কেউ আমার থেকে শক্তিশালী নয়। ইরাক, সিরিয়া, ফিলিস্তিন, চীনের (উইঘুর), মায়ানমারের (রাখাইন), ভারতের জুম-কাশ্মীরে কি নির্মম নির্যাতন করেছে। মানুষ হয়ে পশুর মত মানুষকে কি ভাবে হত্যা করেছে। তখন বিশ্ববিবেক একটুও জাগ্রত হয়নি। আজ এক অণুজীব করোনা ভাইরাসের ভয়ে আমরা সবাই গৃহবন্ধী। সমস্ত পৃথিবী আজ নির্বিকার।
যেভাবে আমাদের দেশে প্রতিদিন সাধারণ লোকজন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ও আইনশৃঙ্খলার কাজে প্রত্যেক্ষ ভাবে জড়িতরা করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হচ্ছে। সেই সাথে রোগীর সংখ্যা অত্যধিক বেড়েই চলেছে। এই ভাবে বাড়তে থাকলে দেশের হাসপাতাল গুলোতে কিছুদিন পর হয়তো জায়গা হবে না। ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্য কর্মীরা অধিক সংখ্যায় আক্রান্ত হলে চিকিৎসা দেওয়ার কেউ হয়তো থাকবে না। চিকিৎসক, নার্স ও আইনশৃঙ্খলায় নিয়োজিত বাহিনীরা সুরক্ষিত থাকলে দেশের জনগণ সুরক্ষিত থাকবে। এই সাধারণ বিষয়টা আমাদের দেশের জনগন বুঝে না। সত্যি বলতে কর্তাব্যক্তিরাই বুঝে না, এবং কি ব্রিটেন, আমেরিকার, ইতালি, স্পেনের মতো উন্নত দেশগুলো এখন চরম ভাবে সাফার করছে। আমাদের দেশের জনগণ অত্যধিক মাত্রায় অসচেতন । বিশেষ করে গ্রামের লোকজন এখনো অনেক বর্বর। তারা এখনো বিনাপ্রয়োজনে দিব্যি রাস্তাঘাটে ঘুরাঘুরি করতাছে, প্রতিদিন বাজারে, রাস্তার মোড়ে, চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছে। এমনিতেই জনসংখ্যায় আমরা অনেক ঘনবসতি, সেই সাথে আমাদের চিকিৎসা ব্যবস্থা তেমন উন্নত না। তার মধ্যে যুক্ত হয়েছে নকল মাস্ক, নকল পিপিই সরবরাহ। অলরেডি ১৮০ জনের বেশী চিকিৎসক ও নার্স আক্রান্ত হয়ে গেসে। এই অবস্থা প্রতিনিয়ত চলতে থাকলে, সমস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা কলাপ্স করবে।
উপরোক্ত কথা গুলো যেন ভুল প্রমাণিত হই। ইহায় হোক সৃষ্টিকর্তার কাছে একমাত্র চাওয়া। আল্লাহপাক আমাদের সহায় হোন। হে মহান প্রতিপালক (আল্লাহ্), আপনি আমাদের ক্ষমা করেন। আপনার সৃষ্টি সেরা জীব মানুষকে এই বিপদ থেকে রক্ষা করুন (আমিন)।
করোনা ভাইরাসের জন্য পৃথিবীতে উল্লেখিত কিছু পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়েছেঃ
১. সমস্ত পৃথিবীর ইকো-সিস্টেমের ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ২. প্রাকৃতিক পরিবেশে অনেকটা দুষণ মুক্ত হয়েছে। ৩. মানুষ পরিষ্কার -পরিছন্ন সম্পর্কে ব্যাপক সচেতন হয়েছে। ৪. ধর্ষণ, খুন, হত্যা ইত্যাদি অনেকাংশ কমে গেছে।
সর্বোপরি মানুষের মধ্যে এক ধরনের সুন্দর পরিবর্তন ঘটেছে, যা আগামী প্রজন্মের জন্য খুব প্রয়োজন ছিলো।
লেখকঃ সাবেক শিক্ষার্থী, মানব সম্পদ ব্যবস্থাপনা বিভাগ, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়, ত্রিশাল, ময়মনসিংহ।