আজ রবিবার। ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় দুপুর ২:৩০

গ্যাসের দাম বাড়ানোর ‘পাঁয়তারা’ জনস্বার্থ বিরোধী : বাংলাদেশ ন্যাপ

গ্যাসের দাম বাড়ানোর ‘পাঁয়তারা’ জনস্বার্থ বিরোধী : বাংলাদেশ ন্যাপ
নিউজ টি শেয়ার করুন..

নতুন করে পুনরায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, গ্যাসের দাম বাড়ানোর ‘পাঁয়তারা’ জনস্বার্থ বিরোধী। জ্বালানি খাতের সঙ্কটের জন্য সরকারের দুর্নীতি, ভুল নীতিই দায়ী, এর খেসারত কেন জনগণকে দিতে হবে ?

মঙ্গলবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় এসব কথা বলেন।

তারা বলেন, বর্তমানে জ্বালানী গ্যাস নিয়ে লুট পাট ও দুর্নীতি চলছে। এই সমস্ত লুটপাটকারি, দুনীতিবাজদের সহতা করার জন্য গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পায়তারা করা হচ্ছে। কোন ভাবেই গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা যাবে না। মূল্য বৃদ্ধির পায়তারা করা হলে তার বিরুদ্ধে তীব্র আন্দোল গড়ে তুলতে হবে সকল রাজনৈতিক দলকে সম্মিলিতভাবে।

নেতৃদ্বয় বলেন, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির খড়্গ পড়বে সাধারণ মানুষের ঘাড়ে। এর প্রভাব পড়বে সকল সেক্টরে। এমনিতেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। অন্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের মূল্যও আকাশছোঁয়া। মানুষের বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। এর ওপর গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পায়তারা মরার ওপর খাড়ার ঘাঁ হয়ে দাড়াবে। গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পায়তারা দেখে জনমনে প্রশ্ন জাগে সরকার কি শুধু দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের স্বার্থ ধেকার জন্যই ? এই সরকারের কি মানুষের ওপর দরদ নেই ?

ন্যাপ নেতৃদ্বয় গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধির গণবিরোধী পায়তারা বন্ধের আহ্বান জানিয়ে বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধির পায়তারা সরকারের সম্পূর্ণ গণ বিরোধী পদক্ষেপ। এই পদক্ষেপ জনগণের পকেট কেটে রাষ্ট্রের কিছু লুটেরা ব্যক্তিদের লাভবান করার,দুর্নীতিকে আরো উৎসাহিত করার জন্য। সরকার জনগণের বিরুদ্ধে লেগেছে। তারা ১০ বছরে ৬ বার গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করেছে।

তারা বলেন, তিতাসের কতিপয় অসাধু কর্মকর্তা সাড়া দেশে অবৈধ ভাবে গ্যাস সংযোগ দিয়ে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। সাড়া দেশে অন্তত ২০ থেকে ২৫ লাখ অবৈধ গ্যাস সংযোগ রয়েছে। এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগ থেকে প্রতিমাসে সরকারের কোষাগারে টাকা জমা দেওয়ার কথা বলে টাকা নিয়ে আসা হয় কিন্তু সেই টাকা সরকার পায় না। আর ওই টাকা পূরণ করার জন্যই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির প্রস্তাব করা হয়েছে। দেশবাসীকে বাঁচাতে হলে অবিলম্বে গ্যাসের অনুসন্ধান কাজ করতে হবে। দূর্নীতিগ্রস্থ তিতাসের কর্মকর্তাদের চাকুরীচ্যুত ও অবৈধ গ্যাস সংযোগ বন্ধ না করে ৫০ গুণ মূল্য বৃদ্ধি করলেও লাভের মুখ দেখবে না।

তারা বলেন, যখন বলা হয় যে, আন্তর্জাতিক মূল্যের সাথে সমন্বয় না করলে বিশ্বায়নের অংশীদার হওয়া যাবে না। এই কথা যে কতোটা ভাঁওতাবাজি তা বোঝা যায় যখন পাল্টা প্রশ্ন করা হয় যে, জ্বালানির দাম সমন্বয় করা যদি বিশ্বায়নের কারণে অপরিহার্য হয় তাহলে শ্রমিকের মজুরির হার তথা তার শ্রমশক্তির দাম কেন বিশ্ববাজারের সঙ্গে সমন্বয় করে বৃদ্ধি হবে না? পশ্চিমা দেশে যে ন্যূনতম মজুরি বর্তমানে বিদ্যমান রয়েছে, এদেশে তা বাস্তবায়নে কি সরকার উদ্যোগী হবে? গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি কেবলমাত্র গ্যাস ব্যবহারকীদেরকেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে বিষয়টি এমন নয়, তা ক্ষতিগ্রস্ত করবে সবশ্রেণী পেশার সব ধরনের মানুষকে। দেশে গ্যাসের মজুদ নিয়ে যেসব খবর প্রকাশিত হচ্ছে তাতেও হিসাবের গরমিল রয়েছে। আমাদের সমুদ্রের গ্যাস অনুসন্ধানের বিষয়টি মুখ থুবড়ে পড়েছে। প্রতিবেশী দেশের সাথে গ্যাস নিয়ে যেসব চুক্তি হচ্ছে তা থেকে আমাদের উপকৃত হবার সুযোগ কতটা রয়েছে তা পরিষ্কার নয়। উন্নত বিশ্বের দেশগুলো এক থেকে অন্য দেশে গ্যাস রফতানি করছে। অথচ আমাদের প্রতিবেশী ভারতের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলে এবং মিয়ানমারে অতিরিক্ত গ্যাসের মজুদ থাকার পরেও আমরা তা আমদানি করতে পারছি না। সেদিকে নজর না দিয়ে এলপিজি চাপিয়ে দেয়ার প্রবণতা কেন এই বিষয়টির বিশদ বিবরণ থাকা দরকার।

নেতৃদ্বয় বলেন, এভাবে যদি দিনের পর দিন নাগরিকদের স্বার্থ বিবেচনা না করে বিশেষ শ্রেণীর প্ররোচনায় গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হয় তাহলে নাগরিকদের মনে দ্রোহের সৃষ্টি হতে পারে এই বিষয়টি সংশ্লিষ্টদের ভেবে দেখা প্রয়োজন। আমরা আশা করব সরকার দেশের সার্বিক পরিস্থিতির বিষয়টি বিবেচনা করে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে জনগণ ও শিল্প উদ্যোক্তাদের বাড়তি ভোগান্তি দূর করবেন।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর