আজ বৃহস্পতিবার। ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় সকাল ১১:১৮

লাল বালির মায়াবী সোমেশ্বরী

লাল বালির মায়াবী সোমেশ্বরী
নিউজ টি শেয়ার করুন..

সোমেশ্বরী। এক অসাধারণ মায়াবী সুন্দরী নদী। সোমেশ্বরী নদী বাংলাদেশ ও মেঘালয়ের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। অর্থ্যাৎ বাংলাদেশ ভারতের একটি আন্তঃসীমান্ত নদী। নদীটির বাংলাদেশ অংশের দৈর্ঘ্য ৫০ কিলোমিটার, গড় প্রশস্ততা ১১৪ মিটার এবং প্রকৃতি সর্পিলাকার।

সোমেশ্বরী নদীটি ভারতের মেঘালয় রাজ্যের বাঘমারা বাজার হয়ে গারো পাহাড়ের বিঞ্চুরীছড়া, বাঙাছড়া প্রভৃতি ঝরনাধারা ও পশ্চিম দিক থেকে রমফা নদীর স্রোতধারা একত্রিত হয়ে সোমেশ্বরী নদীর সৃষ্টি।

এটি মূলত ওপারের মেঘালয় রাজ্যের পর্বত শ্রেণি বাহিত শীতল পানির স্রোতধারা। ভারতের মেঘালয়ে উৎপত্তি লাভ করে সীমান্ত পেরিয়ে বাংলাদেশের নেত্রকোনা জেলার দুর্গাপুর উপজেলার কুল্লাঘোরা ইউনিয়ন দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অতঃপর নদীটি দুর্গাপুর সদর ইউনিয়নে এসে দুটি শাখায় বিভক্ত হয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

বিভাজিত দুটি শাখাই সোমেশ্বরী নামে পরিচিত। একটি শাখা পূর্বধলা উপজেলার জারিয়া ইউনিয়ন পর্যন্ত প্রবাহিত হয়ে ভোগাই-কংস নদীতে পতিত হয়েছে। অপর শাখাটি দুর্গাপুর ও কলমাকান্দা উপজেলার মধ্য দিয়ে প্রবাহিত হয়ে উপদাখালী নদীতে পতিত হয়েছে। ইতিহাস বলে, ৬৮৬ বঙ্গাব্দের মাঘ মাসে সোমেশ্বর পাঠক নামে এক সিদ্ধপুরুষ অত্রাঞ্চল দখল করে নেয়ার পর থেকে নদীটি সোমেশ্বরী নামে পরিচিতি পায়।

হ্যাঁ, শরতের এ সময়ে ঘুরে আসতে পারেন সোমেশ্বরীতে। এর জন্য আপনাকে নেত্রকোনার বিরিশিরিতে যেতে হবে। বিরিশিরিতে যাওয়ার বাস ছাড়ে ঢাকার মহাখালী বাসস্ট্যান্ড থেকে। ভাড়া ২৫০ টাকা। বিরিশিরি থেকে সোমেশ্বরী নদীতে ঘুরতে ইঞ্জিনচালিত নৌকার ভাড়া পড়বে এক হাজার টাকা। বিরিশিরিতে যাওয়ার আগেই থাকার জায়গা ঠিক করে নেয়া ভালো। ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী কালচারাল একাডেমি, ওয়াইএমসিএ ও ওইডাব্লিউসিএর গেস্টহাউস ছাড়াও একাধিক ছোটখাটো হোটেল আছে এখানে। ভাড়া ৫০০-১২০০ পর্যন্ত। তবে রাস্তার অবস্থা তেমন একটা ভালো না।

যাক তেরিবাজার ঘাট থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় ঘুরে আসতে পারেন মেঘালয়ের পাহাড় ঘেরা সোমেশ্বরীতে। সর্পিলাকারের সোমেশ্বরীর হৃদয়পটে যতই আপনি নিজেকে আবিষ্কার করবেন দেখবেন ওপারের মেঘে ঢাকা পাহাড়গুলো আপনাকে ইশারায় ডাকছে। শুধু বাধা হয়ে পাহাড়ের গায়ে দাঁড়িয়ে আছে কাঁটাতারের বেড়া। ছোট ছোট চরে বেড়ে ওঠা ধবধবে সাদা কাশবনগুলো সত্যিই হৃদয়ে দোল খেয়ে যাবে।

সোনালির বুকে সাদা রঙের আঁচড় কাটা যেন স্বচ্ছ পানির সঙ্গে মিশে গেছে। লাল বালিতে হেঁটে হেঁটে কাশবনের পরশ নিয়ে সূর্যাস্ত দেখার জন্য অবস্থান নিতে পারেন বিজয়পুর বিজিবি ক্যাম্পে। মেঘ আকাশ পাহাড় আর নদীর পানির ক্ষণে ক্ষণে রং বদলানোর দৃশ্য সূর্যাস্তের অপূর্ব মনোমুগ্ধ চোখের পলক আপনার সব ক্লান্তি দূর করে শান্তির পরশ এনে দেবে এ ভ্রমণে।

লেখক :   নাজমুল করিম ফারুক

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর