আজ রবিবার। ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় বিকাল ৪:২০

ব্যাংকের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে

ব্যাংকের টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে
নিউজ টি শেয়ার করুন..

দেশের অর্থনীতিতে প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের চেয়ে ইসলামি ব্যাংকিংয়ের অর্থায়ন অধিক তাৎপর্যপূর্ণ। ইসলামি ব্যাংকিং প্রথাগত ব্যাংকিং থেকে আলাদা পদ্ধতি। এটি একটি পূর্ণাঙ্গ ব্যাংকিং ব্যবস্থা। বিশেষ করে সামাজিক কার্যক্রমে গতানুগতিক ব্যাংকিং থেকে অনেক এগিয়ে। এই ধারার ব্যাংক সতর্কতার সঙ্গে চালাতে হবে। ইসলামি ব্যাংকিংয়ে অর্থায়নে সাবধান থাকতে হয়। তা না হলে ব্যাংকের টাকা বিদেশে পাচার হবে। এখনো হচ্ছে। এ বিষয়ে পদ্ধতি মেনে চলতে হবে।

শনিবার রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক ফিন্যান্সের (বিআইআইএফ) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ।

তিনি বলেন, দেশের মুদ্রানীতি ও মুদ্রাবাজারে ইসলামিক অর্থায়ন নিয়ে তেমন কিছু উল্লে­খ থাকে না। কারণ সুদভিত্তিক বিষয়ে বর্ণনা থাকে। বাস্তবে মুদ্রানীতিতে সুদের হারের বাইরেও অর্থায়নের অনেক কিছু থাকে। আর ইসলামি ব্যাংকিংয়ে সুদের কারণে ভূমিকা রাখার সুযোগ নেই। আবার ব্যাংকের মাধ্যমে ঝুঁকি ভাগাভাগি করা যায় না, যা পুঁজিবাজারে করা সহজ না। এজন্য অনেকে ব্যাংক ঋণে বেশি ঝুঁকে থাকে।

ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, ইসলামি ব্যাংকিং কল্যাণকর, মুনাফানির্ভর ও অর্থায়নের ভালো উৎস। তবে শরিয়াহ পরিভাষা বিষয়ে সাধারণ মানুষের তেমন ধারণা নেই। এটা নিয়ে প্রচার নেই। তবে প্রচার অর্থ আবার মাইকিং করা না। এ বিষয়ে তথ্যভিত্তিক প্রচার চালাতে হবে। তাড়াহুড়া করার কিছু নেই। ব্যাংকের প্রতি আস্থা বাড়াতে কাজ করতে হবে। যেন গরিব মানুষও ইসলামি অর্থায়নে আগ্রহী হয়ে উঠে। কেননা, ব্যাংকে সাধারণত গরিব মানুষের টাকা থাকে না। ইসলামি ব্যাংকিংয়ের প্রসারে কাজ করতে হবে। বিশেষ করে তরুণদের এই ধারার ব্যাংকিং বুঝাতে হবে। সম্প্রতি তারা ব্যাংকিং থেকেই দূরে সরে যাচ্ছে। তারা অনেকটা আয় করব ও ভোগ করব নীতিতে বিশ্বাসের দিকে ঝুঁকছে। অথচ ইসলাম বলে তোমার টাকা শুধু তোমার না। এটাতে গরিবের ভাগ রয়েছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুহাম্মদ আবদুল মজিদ বলেন, ‘দেশে অর্থায়নের প্রধান উৎস ব্যাংক। আবার ব্যাংকিং খাতের মধ্যে ইসলামি ব্যাংকের অবদান প্রায় ৬৯ শতাংশ। তবে এ খাত অসুস্থ হয়ে পড়েছে। এটা নিয়ে চিন্তা করার সময় এসেছে। এক্ষেত্রে বিআইআইএফ কনসাল্টিং ফার্ম ও থিংক ট্যাংক হিসেবে কাজ করবে।

সাবেক সচিব ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, এখন অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় শব্দে ইসলাম আছে। বাস্তবে নেই। তাই ইসলামি ব্যাংকিংয়ে শরিয়ার যথাযথ ব্যবহার করতে হবে। বিনিয়োগের শর্ত মানতে হবে। দেশের টাকা বিদেশে যাচ্ছে কিনা- তা খতিয়ে দেখতে হবে। নয়তো ঢাকার গুলশান ১ ও ২ এর আদলে দুবাইয়ে গড়ে উঠবে গুলশান-৩।

সেন্ট্রাল শরিয়াহ বোর্ড ফর ইসলামিক ব্যাংকস অব বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির চেয়ারম্যান মো. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, ইমোশন ও বস্তবতা দিয়েই ইসলামি ব্যাংকের যাত্রা শুরু। অনেকটা শূন্য দিয়েই শুরুটা ছিল বলা যায়। এখন দেশের ৩৬টি ব্যাংকে ইসলামি ব্যাংকিং রয়েছে। আর ইসলামি ব্যাংকিং বুঝতে প্রথাগত ব্যাংকিং বোঝাটা সব সময় প্রয়োজন। শরিয়াহ ব্যাংক মুনাফা ও ভায়াবিলিটি প্রসারে ভূমিকা রাখছে। এখানে প্রতিশ্রুতির বিষয় রয়েছে। তবে এখন ব্যাংকগুলো তা রক্ষা করতে পারছে না। এছাড়া এ ধারার ব্যাংকিং নিয়ে শিক্ষাক্রমে সিলেবাসের ব্যবস্থা নেই। এসব হওয়া দরকার। বিশেষ করে প্রথাগত ব্যাংকিংয়ের মতো ইসলামি ব্যাংকিংয়ে গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ক্যাপিটাল মার্কেটের (বিআইসিএম) নির্বাহী সভাপতি প্রফেসর ড. মাহমুদা আক্তার, বিআইআইএফ’র প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. এম আব্দুল আজিজ, বিআইআইটির সিনিয়র রিসার্চ ফেলো ও ইসলামিক অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক ড. এসএম আলী আক্কাস, একাডেমিক কো-অর্ডিনেটর ড. তাসলিমা জুলিয়া ও বিআইআইটির পরিচালক মো. সোলাইমান মিয়া প্রমুখ।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর