দাবি মেনে নিতে রাবি প্রশাসনের আশ্বাস, আটক ৪ লাপাত্তা মূল হোতা

Rabi administration assures to accept demands

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষার্থী সোহরাব হোসেনকে মারধরের ঘটনায় আন্দোলন মুখে শিক্ষার্থীদের দেয়া চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসে প্রথম দিনের মতো আন্দোলন স্থগিত করেছে শিক্ষার্থীরা।

 আজ শনিবার বিকেল ৩ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের বাসভবনে এক বৈঠকে আলোচনা শেষে শিক্ষার্থীদের সকল দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেন ফিনান্স বিভাগের সভাপতির পক্ষে ড. আবু সাদেক মো: কামারুজ্জামান ।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য আনন্দ কুমার সাহা, ছাত্র উপদেষ্টা লায়লা আরজুমান বানু, সহকারী প্রক্টর ও ফাইন্যান্স বিভাগের বেশ কিছু শিক্ষক।

তবে ২৪ ঘন্টার মধ্যে দাবিগুলোর বাস্তবায়ন না হলে ফের আন্দোলনের ডাক দেবে বলে হুশিয়ারি দিয়েছেন তারা।

এর আগে এ ঘটনার প্রতিবাদে শনিবার বেলা ১১ টা থেকে তিন দফা দাবিতে ঢাকা-রাজশাহী মহাসড়ক অবরোধ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩ শতাধিক শিক্ষার্থী। এসময় উপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য সহ প্রশাসনের উদ্দেশ্য করে সামনে চার দফা দাবি উত্থাপন করে শিক্ষার্থীরা।

তাদের দাবিগুলো হলো- অনতিবিলম্বে নাহিদ ও আসিফসহ যারা হত্যা চেষ্টায় জড়িত ছিল তাদের গ্রেপ্তার, তাদের স্থায়ীভাবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার, হল প্রশাসন নিরাপত্তা প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় হল প্রাধ্যক্ষের পদত্যাগ, গুরুতর আহত শিক্ষার্থীর চিকিৎসার সকল ব্যয়ভার বহন করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে এবং মামলার যাবতীয় দায়িত্ব নিতে হবে।

এদিকে এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী সোহরাব বাদী হয়ে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে মতিহার থানায় হত্যাচেষ্টা মামলা দায়ের করেছেন বলে নিশ্চিত করেছে নগরীর মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাফিজুর রহমান।

এঘটনায় প্রাথমিক প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ জনকে নিয়ে গেছে পুলিশ। তারা হলেন—

১.আকিমূল ইসলাম রিফাত (ইসলামিক স্টাডিজ ৪র্থ বিভাগ)

২.সূজন (২য় বর্ষ ইসলামিক স্টাডিজ)

৩. আসিফ (লোক প্রশাসন ২য় বর্ষ)

৪. হাসানুজ্জামান (৪র্থ বর্ষ ইসলামি স্টাডিজ)

অপর দিকে ঘটনার মূল হোতা আসিফ ও নাহিদের কোনো হোদিশ পাওয়া যাচ্ছে না।

প্রসঙ্গত, শুক্তবার দিবাগত রাত দেড়টায় ল্যাপটপ চুরির সন্দেহে ছাত্রলীগ কর্মী আসিফ লাকের নেতৃত্বে সোহরাবসহ ফ্যাইনান্স বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শামছুজ্জোহা হলের ছাদ থেকে ডেকে তৃতীয় ব্লকের ২৫৪ নাম্বার কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে সোহরাবকে নানা রকম কথা জিজ্ঞাসাবাদ করে আসিফ লাক ও হুমায়ুন কবির নাহিদ। এক পর্যায়ে বাকবিতন্ডা শুরু হলে তারা দুজন সোহরাবের মাথা ও হাতে পিটাতে থাকে। এক পর্যায়ে সোহরাব রক্তাক্ত হলে তারা মারধর বন্ধ করে। একপর্যায়ে বন্ধুরা মিলে রাবি মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যায় । অবস্থার অবনতি হলে এ্যাম্বুল্যান্সে করে সোহরাবের বন্ধুরা গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করা হয়। তার গায়ে, হাঁটুতে ও মাথায় আঘাতে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়েছে। তিনি আট নাম্বার ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তার মাথায় ১৫টি সেলাই দেয়া হয়েছে।

মারধরে অভিযুক্ত দুই ছাত্রলীগ কর্মীরা হলেন- ইসলামিক স্টাডিস বিভাগের ৪র্থ বর্ষের শিক্ষার্থী আসিফ লাক ও বাংলা বিভাগের ৪র্থ শিক্ষার্থী হুমায়ুন কবির নাহিদ। এরা দুইজনেই শামছুজ্জোহা হল শাখা ছাত্রলীগের দায়িত্বে রয়েছেন এবং রাবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি গোলাম কিবরিয়ার অনুসারী।

এম আর/টাইমস

Leave a Comment