আজ রবিবার। ১৯শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৫ই জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১০ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় বিকাল ৩:৪২

শরীকরা ক্ষুব্ধ বিএনপির উপর

শরীকরা ক্ষুব্ধ বিএনপির উপর
নিউজ টি শেয়ার করুন..

বিএনপি ২২টি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছিল। তাদেরকে নিয়ে যুগপৎ আন্দোলন করবেএমন ঘোষণাও দিয়েছিল।২০১৮ এর নির্বাচনের পর থেকে ২০ দলকে নিষ্ক্রিয় করে দেয় বিএনপি। আস্তে আস্তে ২০ দলের মৃত্যু ঘটে। সময় বিএনপি চেয়েছিল একটি নতুন রাজনৈতিক মেরুকরণ। আওয়ামী লীগের বাইরে যারা নির্দলীয়, নিরপেক্ষ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিকে সমর্থন করেতাদেরকে নিয়ে একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম করার প্রচেষ্টা ছিল গত দুই বছর ধরে। কিন্তু এই দুই বছরেও বিএনপি যুগপৎ আন্দোলনের কোনো রূপরেখা যেমন তৈরি করতে পারেনি, তেমনি অভিন্ন কর্মসূচিও দিতে পারেনি। এমনকি এই দলগুলোকে ঘুরিয়েফিরিয়ে বার বার তাদেরকে প্রতিশ্রুতি দেয়ার পরও এখন পর্যন্ত যৌথ ঘোষণা চূড়ান্ত করতে পারেনি।

রকম পরিস্থিতিতে এখন ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোযাদেরকে বিএনপি মুলা দেখিয়ে রেখেছিলতারা এখন বিএনপির উপর চটে গেছে। তারা বলছে, বিএনপির সাথে তারা থাকবে কি নাতাদেরকে চিন্তা ভাবনা এবং বিবেচনা করতে হবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি দলের নেতারা বিএনপির সাথে কথা বলেছে। বিএনপি নেতারা প্রতি সপ্তাহে সপ্তাহে যৌথ ঘোষণা এবং অভিন্ন কর্মসূচির দিন তারিখ পল্টাচ্ছে। কিন্তু তারা শেষ পর্যন্ত এসবের কিছুই করতে পারছে না। বিএনপির বিভিন্ন নেতারা বলছেন, তারা কয়েকটি বিষয় নিয়ে গভীরভাবে বিচার বিশ্লেষণ করার কারণেই, তাদের এই যুগপৎ আন্দোলন এবং অভিন্ন কর্মসূচি ঘোষণা দেয়া পিছিয়েযাচ্ছে। 

বিএনপির মধ্যে শরীকদের নিয়ে কিছু ভীতি কাজ করছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগে বিএনপি জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠন করেছিল। এই জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট গঠনটা বিএনপি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল বলে বিএনপির অনেক নেতা মনে করেন। তারা বলেন, এর ফলে বিএনপি অনেক বড় ক্ষতির মুখোমুখি হয়েছে। বিশেষ করে . কামাল হোসেনের নেতৃত্ব মেনে নিয়ে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট তাদের নেতাকর্মীদেরকে ভুল বার্তা দিয়েছে। কারণেই তারা এবারের জোট গঠন এবং যুগপৎ আন্দোলনের ব্যাপারে অনেক বেশি সন্দেহপ্রবণ এবং সংশয়ী। বিএনপির একজন নেতা বলেছেন, আমরা ২২টি বা ৩০টিযে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে জোবদ্ধ হই না কেন বা যুগপৎ আন্দোলন করি না কেনতাদের অনেককেই সরকার নির্বাচনে যাওয়ার জন্য টোপ দিবে। রকম টোপ যদি কেউ কেউ গিলে ফেলে, তাহলে পুরো জোটের মধ্যেই এক ধরনের সঙ্কট সৃষ্টি হতে পারে–  সেটি আমরা বিবেচনা করতেপারছি।

তাছাড়া ছোট ছোট রাজনৈতিক দলগুলোযেগুলোর কোন কর্মী নেই, ভিত্তি নেইতারা বড় বড় দাবি করছে। তারা এখনই জোটবদ্ধ আন্দোলন এবং জাতীয় সরকার কিভাবে গঠিত হবেকে কত আসন পাবেকার কত মন্ত্রীত্ব দরকারএইসব নিয়েই ব্যস্ত। এটি বিএনপি এখনই বিবেচনায় নিতে রাজি না। বিএনপি নেতারা বলছেন, আন্দোলন সফল হবে কি হবে নাতারইকোনো ঠিক নাই, কিন্তু তারা মন্ত্রীর ভাগবাটোয়ারা পর্যন্ত করতে চাচ্ছেন। অবশ্য শরীকরা ধরনের বক্তব্য অস্বীকার করেছেন।তারা বলেছেন, আমাদের একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি করতে হবে। আমরা কিভাবে আন্দোলন করব, আন্দোলনে বিজয়ী হলে কিভাবে নির্বাচন করব, নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার পর কিভাবে সরকার গঠন করা হবেপুরো বিষয়টি আগে সুনির্দিষ্ট হওয়া দরকার। কিন্তু বিএনপি ধরনের কোনো কিছুই সুনির্দিষ্ট করছে না। আর কারণে শরীকরা এখন নিজেদের মধ্যে আলাপআলোচনা করছে।  

শরীকদের মধ্যে থেকে একজন নেতা বলেছেন, বিএনপি নেতাদের আসলে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা নাই। তাদের সিদ্ধান্ত লন্ডন থেকে নাজিল হয়। কারণেই বিএনপি বার বার দ্বিধান্বিত। কিন্তু যুগপৎ আন্দোলন বা ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন করতে নাপারলে বিএনপি যে এবারও ব্যর্থ হবে এবং শেষ পর্যন্ত বিএনপি যে অস্তিত্বের সঙ্কটে পড়বেএটা মনে করে শরীকরা। তাই শরীকরা বিএনপিকে আর সময় দিতে রাজি নয়। তারা মনে করছে, বিএনপি যদি না চায়, তাহলে আমরাই ভিন্ন অবস্থান থেকে আন্দোলন করবো। 


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর