আজ শনিবার। ২৭শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ১৪ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় সকাল ৬:২৮

যে কারণে নারী-পুরুষের বন্ধ্যত্ব হয়, চিকিৎসা

যে কারণে নারী-পুরুষের বন্ধ্যত্ব হয়, চিকিৎসা
নিউজ টি শেয়ার করুন..

বন্ধ্যত্ব বর্তমান সময়ে নারীপুরুষের জটিল সমস্যা। নানা কারণে এই সমস্যা দেখা দিতে পারে। মাদকগ্রহণ, অস্বাস্থ্যকরজীবনযাপন, হরমোনজনিত সমস্যা এর অন্যতম কারণ। 

বন্ধ্যত্বের কারণ চিকিৎসা নিয়ে বিস্তারিত জানিয়েছেন বি আই এইচ এস হাসপাতালের ফার্টিলিটি কনসালটেন্ট গাইনোকোলজিস্ট ডা. হাসনা হোসেন আখি। 

কোনো দম্পতি যখন কোনো ধরনের জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি ছাড়া দুবছর একসঙ্গে বসবাসের পরও সন্তান ধারণে ব্যর্থ হয়, তখনতাকে আমরা বন্ধ্যত্ব বলব। বন্ধ্যত্ব দুধরনের। প্রাইমারি অর্থাৎ যাদের কখনোই সন্তান হয়নি। সেকেন্ডারি অর্থাৎ আগে গর্ভধারণহয়েছে কিন্তু এখন আর হচ্ছে না। 

সমীক্ষা অনুযায়ী দেখা যায় ৮০ শতাংশ দম্পতি সাধারণ চেষ্টায় প্রথম বছরই গর্ভধারণে সমর্থ হন। দশ শতাংশের ক্ষেত্রে দ্বিতীয়বছরে গর্ভধারণ হয়। বাকি যে দশ শতাংশ থাকে তাদের মূলত চিকিৎসার প্রয়োজন হয়। অতএব, বিয়ের পর সন্তান ধারণেরসিদ্ধান্ত নেওয়ার থেকে বছর নিজেরা চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে চিকিৎসকের সহায়তা নেওয়া উচিত। বন্ধ্যত্ব ৪০ শতাংশ নারী, ৪০শতাংশ পুরুষ, বাকি ২০ শতাংশ নারীপুরুষের কারণে হয়ে থাকে।

মেয়েদের বন্ধ্যত্বের কারণের মধ্যে সবচেয়ে বেশি যে কারণ হচ্ছে, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম, এন্ডোমেট্রিওসিস, ফাইব্রয়েড, হরমোনজনিত সমস্যা, জরায়ু ইনফেকশন, এডিনোমাইসিস ইত্যাদি। 

ছেলেদের মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণ হচ্ছে, স্পার্মের সংখ্যা, আকৃতি এবং গতির সমন্বয় ঠিক না থাকা, সঙ্গে হরমোনজনিত সমস্যা, ডায়াবেটিস, ধূমপান।

প্রতিকার হিসাবে নারী/পুরুষ উভয়কে যে উপদেশ দেওয়া হয়

* খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করা, শর্করাজাতীয় খাবার কমিয়ে প্রোটিন, ভিটামিন এবং মিনারেল জাতীয় খাবার বেশি খেতে হবে।ফলমূল শাকসবজি বেশি খেতে হবে। প্রসেসফুড, জাঙ্কফুড, ফাস্টফুড, কফি, অ্যালকোহল, কোমল পানীয়, ধূমপান বাদ দিতেহবে।

* সঠিক বিএমআই নির্ণয় করতে হবে অর্থাৎ উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন নিশ্চিত করতে হবে। স্থূলতা পরিহার করতে হবে।

* রাতে আগে ঘুমানো এবং সকালে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাস করতে হবে।

* নিয়ম মতো হাঁটা এবং শরীরচর্চা করতে হবে।

* সানবাথ বা শরীরে সূর্যের আলো লাগাতে হবে, কারণ ভিটামিনডি ঘাটতি বন্ধ্যত্বের অন্যতম একটি কারণ।

* বন্ধ্যত্বের চিকিৎসায় স্বামী/স্ত্রী উভয়েরই পরীক্ষানিরীক্ষা এবং চিকিৎসা প্রয়োজন। এক্ষেত্রে সংকোচ, দ্বিধা রাখলে হবে না।

* সময় মত ধৈর্য নিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে, চিকিৎসকের কথা শুনতে হবে, মানতে হবে।

প্রাথমিক চিকিৎসার পরও যদি কেউ সন্তান লাভে ব্যর্থ হয়, সেক্ষেত্রে তার টারশিয়ারি লেভেলের একটি ফ্যাটিলিটি সেন্টারে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন। আধুনিক চিকিৎসার যেসব পদ্ধতি বন্ধ্যত্ব চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, ট্র্যান্স ভ্যাজাইনাল সোনোগ্রাফি, স্যালাইন ইনফিউশন সোনোগ্রাফি (টিউব দেখার জন্য), আই ইউ আই, আইভিএফ বাটেস্টটিউব বেবি, ল্যাপেরোস্কপি, হিস্টোরিস্কপি, ইকসি, প্রি ইমপ্লান্টেশন জেনেটিক ডায়াগনোসিস, প্রিজারভেশন অফ ওভারি অ্যান্ডটেস্টিস ইত্যাদি।

বন্ধ্যত্বের মতো জটিল সমস্যাও এখন খুব সহজেই সমাধান হচ্ছে। প্রয়োজন শুধু আপনার সদিচ্ছা, সচেতনতা এবং সুচিকিৎসানেওয়া।

সূত্র : যুগান্তর

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর