৩০০ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চূড়ান্ত

আগামীকাল থেকে আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ বৈঠকে ৩০০ আসনেই আওয়ামী লীগ মনোনয়ন চূড়ান্ত করবে বলে জানা গেছে। তবে আওয়ামী লীগ শেষ পর্যন্ত কোন বিন্যাসে নির্বাচন করবে তা এখন পর্যন্ত নিশ্চিত হয়নি। তবে জাতীয় পার্টি যে আলাদাভাবে নির্বাচন করবে এটা মোটামুটি নিশ্চিত হয়ে গেছে। জাতীয় পার্টির মধ্যে এখন পর্যন্ত ঐক্যমত্য তৈরি হয়নি। ঐক্যমত না হলে যদি শেষ পর্যন্ত জাতীয় পার্টি বিভক্ত হয়ে যায় তাহলে রওশন এরশাদপন্থিরা মহাজোটে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারে। আর যদি জাতীয় পার্টি শেষ পর্যন্ত অভিন্ন অবস্থানে আসে এবং একমত হয় সেক্ষেত্রে জিএম কাদেরের নেতৃত্বে জাতীয় পার্টি পৃথক অবস্থান থেকে লাঙ্গল প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করবে। তবে ১৪ দল আওয়ামী লীগের সঙ্গে মিলে মিশে নির্বাচন করবে। ১৪ দলের শরিকদের জন্য আওয়ামী লীগ কত আসন দেবে তার নিশ্চিত নয়। যদিও আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনে মনোনয়ন ফরম বিক্রি করেছে এবং আওয়ামী লীগ ৩০০ আসনেই প্রার্থী চূড়ান্ত করবে। 

আওয়ামী লীগের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চূড়ান্ত হওয়ার পর ১৪ দলের শরিকদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং এই বৈঠকে নির্ধারিত হবে ১৪ দলের জন্য আওয়ামী লীগ কয়টি আসন ছেড়ে দিবে এবং কারা কারা নৌকা প্রতীক নিয়ে প্রার্থী হবে। তবে বিভিন্ন সূত্র নিশ্চিত করেছে যে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত এবং এটি আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে রয়েছে। সংসদীয় বোর্ডের সভা একটি আনুষ্ঠানিকতা মাত্র। তবে কোন কোন নেতা বলছেন, প্রাথমিক তালিকা চূড়ান্ত হলেও সংসদীয় বোর্ডের সভায় সবার মতামত নেওয়ার রীতি আছে এবং শেখ হাসিনা অন্যের মতামতকে শ্রদ্ধা করেন। এই মতামতের ভিত্তিতে কয়েকটি আসনে পরিবর্তন হতেও পারে। বিশেষ করে মনোনয়ন বোর্ডের সদস্যরা কোন কোন ব্যক্তির ব্যাপারে আপত্তি বা কারও জন্য যথেষ্ট সুপারিশ করতে পারেন। সবকিছু নির্ভর করছে সংসদীয় বোর্ডের সভায় আওয়ামী লীগের সভাপতিকে যুক্তি দিয়ে একজন প্রার্থীর পক্ষে কে কতটুকু বক্তব্য উপস্থাপন করতে পারেন তার ওপর। 

তবে যে ৩০০ আসনে মনোনয়ন চূড়ান্ত হয়েছে সেখানে আওয়ামী লীগের অন্তত ১২৫ থেকে ১২৭ জন পুরনো সংসদ সদস্য রয়েছেন। যারা গত নির্বাচনে আওয়ামী লীগের টিকেট পেয়েছেন। বাকিদের ক্ষেত্রে নতুন মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। তবে সবাই যে একেবারে নতুন এমনটি নয়। ২০১৪ সালে মনোনয়ন পেয়েছিলেন ’১৮ সালে পাননি এমন প্রার্থীর সংখ্যাও রয়েছে অন্তত ২৫ থেকে ৩০ জন। শতাধিক সম্পূর্ণ নতুন প্রার্থী দেখা যেতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।  

বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে যে, আওয়ামী লীগ তার মনোনয়নের ক্ষেত্রে তিনটি ক্যাটাগরি নির্ধারণ করেছে। একটি ক্যাটাগরি হলো যারা আগামী নির্বাচনে যেকোনো পরিস্থিতিতে জয়ী হবেন, যাদেরকে নিয়ে কোনো আলোচনা এবং বিতর্ক নেই। এরকম ৯৩ জন ইতোমধ্যে সবুজ সংকেত পেয়েছেন। সেই ৯৩ জন ইতোমধ্যে তাদের নির্বাচনী এলাকায় প্রচার প্রচারণা শুরু করেছেন। আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রীর শেখ হাসিনা ছাড়াও এই তালিকায় রয়েছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা মন্ডলীর সদস্য আমির হোসেন আমু, তোফায়েল আহমেদ, প্রেসিডিয়ামের সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, আওয়ামী লীগের আরেকজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক সহ বিভিন্ন নেতৃবৃন্দ। 

২০০৮ এবং ’১৪ সালে নির্বাচনের প্রার্থী হয়েছিলেন কিন্তু ’১৮ তে প্রার্থী হতে পারেননি এমন ব্যক্তিদের মধ্য বেশ কয়েকজন গুরুত্বপূর্ণ নেতা আওয়ামী লীগের রয়েছেন বলে জানা গেছে। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য জাহাঙ্গীর কবীর নানক, বাহাউদ্দিন নাছিম আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে যাচ্ছেন এটা মোটামুটি নিশ্চিত বলে একাধিক সূত্র জানিয়েছে। 

সম্পূর্ণ নতুন প্রার্থীদের মধ্যে ইতোমধ্যে যারা সবুজ সংকেত পেয়েছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন জামালপুর-৫ আসনের আবুল কালাম আজাদ, ফরিদপুরের একটি আসনে কাজী দীন মোহাম্মদ যিনি নিউরো মেডিসিন বিশেষজ্ঞ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছেন। এরকম বেশ কয়েকজন সম্পূর্ণ নতুন প্রার্থীকে আগামী নির্বাচনের জন্য ইতোমধ্যে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। তবে আওয়ামী লীগের সূত্রগুলো বলছে, শনিবার সর্বোচ্চ রোববার নাগাদ আওয়ামী লীগ তাদের চূড়ান্ত প্রার্থী প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করতে পারে।

Leave a Comment