“অদম্য উৎসাহ ও উদ্দীপনায় শেষ হলো বিওয়াইএলসি ইয়ুথ কার্নিভাল ২০১৯”

অনেক আগ্রহ ও উদ্দীপনা নিয়ে অবশেষে শেষ হলো বিওয়াইএলসি ইয়ুথ কার্নিভাল। ঢাকার মোহাম্মদপুরের সরকারি শারীরিক শিক্ষা কলেজে গত ২৭ ও ২৮ শে ডিসেম্বরে প্রায় পাঁচ হাজারের অধিক তরুণদের নিয়ে অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো এই মিলনমেলা। আবহাওয়ার প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার তরুণরা জড়ো হয়েছিল এই অনুষ্ঠানে। দিনভর চলতে থাকা কার্নিভালে ছিল তরুণদের সমসাময়িক ইস্যু যেমন বেকারত্ব, সড়ক দুর্ঘটনা, জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ু দূষণ এবং সামাজিক সম্প্রীতির উপরে মুক্ত আলোচনা। পাশাপাশি এই প্রতিযোগিতার যুগে তাদের কর্মসংস্থানের উপযোগী করার জন্য ছিল দক্ষতর হওয়ার উপর বিভিন্ন ওয়ার্কশপ। এছাড়াও এই অনুষ্ঠানে প্রায় ৫০ টি সংস্থার স্টলে তরুণদের নানা উদ্যোগ ও কার্যক্রম প্রদর্শিত হয়।

সমাপনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশের ডিএফআইডি প্রধান জুডিথ হারবার্টসন বলেন নেতৃত্ব চর্চা করতে হলে তরুণদেরকে ব্যক্তি স্বার্থ থেকে বেরিয়ে আসতে হবেই এবং কাজকে গুরুত্ত্ব দিতে হবে, তিনি আরো বলেন “যদি নেতৃত্বের অনুশীলন নিজের জন্য হয়ে থাকে তবে তা এখনই বর্জন করা উচিত। নেতৃত্ব ব্যক্তিকেন্দ্রিক নয় বরং সমষ্টিগত ভালোর দিকে মনোনিবেশ করাই এর লক্ষ্য।”

বিওয়াইএলসির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি এজাজ আহমেদ জুডিথ হারবার্টসনের বক্তব্যের সাথে সহমত পোষণ করে বলেন, “প্রত্যেকেরই জীবনে একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকা উচিত। ব্যক্তিকেন্দ্রিক মনোযোগ আকর্ষণ নেতৃত্বচর্চা নয় বরং এটি হলো সবাইকে নিয়ে যে কোনো একটি কাজকে সঠিকভাবে সম্পন্ন করা।”

অনুষ্ঠানে সেন্টার ফর রিসার্চ এন্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) আয়োজিত “বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্ব: বর্তমান তরুণদের জন্য শিক্ষণীয়” শীর্ষক অধিবেশনে প্যানেল সদস্যরা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বের কয়েকটি বিষয়ের উপর গুরুত্বারোপ করেছেন। “নেতৃত্বচর্চায় প্রয়োজন দূরদর্শিতা এবং সেটা হতে হবে দীর্ঘমেয়াদের”, বলে মন্তব্য করেন প্যানেলটির সঞ্চালক শাহ আলী ফরহাদ। প্যানেলটির অন্য দুই আলোচক তারানা হালিম এবং মোহাম্মদ আলী আরাফাত বলেন “বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন দূরদর্শী নেতা এবং তিনি সবসময় জনস্বার্থকে নিজ স্বার্থের চেয়ে এগিয়ে রাখতেন এবং তার এক অভূতপূর্ব ক্ষমতা ছিল লক্ষ-লক্ষ মানুষকে একটি নির্দিষ্ট গন্তব্যের দিকে ধাবিত করার।” তার জীবন এবং নেতৃত্বচর্চা থেকে আজকের যুবকদের অনেক কিছু শেখার আছে বলেও মন্তব্য করেন প্যানেল সদস্যরা।

কার্নিভালে সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রনালয়ের প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেন বাংলাদেশকে একটি উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হওয়ার জন্য দেশের “ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ডকে” কাজে লাগাতে হবে। এই উপলব্ধি থেকেই বিওয়াইএলসি তরুণদের নেতৃত্ব প্রশিক্ষণ, পেশাগত উন্নয়ন এবং উদ্যোক্তা তৈরির জন্য গত দশ বছর ধরে কাজ করে যাচ্ছে যা বাংলাদেশের অর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রেখে চলেছে। তরুণদের সমসাময়িক ভাবনাগুলোকে নিয়ে এইরকম তথ্যমূলক ও আকর্ষণীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য তিনি বিওয়াইএলসিকে অভিনন্দন জানান।

যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং এনজিও বিষয়ক ব্যুরোর অংশীদারিত্বে ও মানুষের জন্য ফাউন্ডেশেন এবং ইউকেএইড এর সহযোগিতায়, বিওয়াইএলসি ইয়ুথ কার্নিভাল ২০১৯ আয়োজিত হয়েছে। সমাপনী অনুষ্ঠানে একটি মনোমুগ্ধকর সাংস্কৃতিক পর্বে গান পরিবেশন করেন আর্টসেল, রেভোলুটাস এবং এভয়েড রাফা। এই সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আলোচিত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা ও সমাধানকল্পে তরুণদের উৎসাহিত করা হয়।

Leave a Comment