ফেঁসে যাচ্ছেন নুর


সংগঠনের শীর্ষ দুই নেতার বিভক্তির কারণে নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন পাওয়ার আগেই নতুন রাজনৈতিক দলটি এখনভাঙনের পথে। দলটি কার্যত দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছে। এক পক্ষ রেজা কিবরিয়ার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে আর অপর পক্ষনুরের। তবে পরিস্থিতি বলছে, দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বড় অংশটি রেজার পক্ষে অবস্থান নিয়েছে।

গণঅধিকার পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ কয়েকজন সদস্য ৬ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন, নুরুলহক নুর ও তার সমর্থকদের তৎপরতা অবৈধ। অপরদিকে দলের এই পক্ষের বিরুদ্ধে পালটা ষড়যন্ত্রের অভিযোগ আনেন নুরুলহক নুর। দুপক্ষই একে অপরের ওপর গণঅধিকার পরিষদকে ভাঙার দায় চাপাচ্ছে।

গণঅধিকার পরিষদের শীর্ষ এই দুই নেতাকে ঘিরে অনেক দিন ধরেই দলটিতে অস্থিরতা চলছিল। সম্প্রতি সেই অস্থিরতা প্রকটরূপ নেয়। দলের আহ্বায়ক রেজা কিবরিয়া ও সদস্য সচিব নুর- একে অপরকে পালটাপালটি অব্যাহতি দেন। এমনকিআহ্বায়ককে অপসারণের মতো ঘটনাও ঘটেছে। এরপরই সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলাদা সংবাদ সম্মেলন ডেকে নিজেদেরঅবস্থান তুলে ধরেন দুই শীর্ষ নেতা। তবে পরিস্থিতি বলছে, দলটির গুরুত্বপূর্ণ নেতাদের বড় অংশটি রেজার পক্ষে অবস্থাননিয়েছে। ফলে শেষ পর্যন্ত গণঅধিকার পরিষদে নিজের অবস্থান ধরে রাখতে পারবেন নাকি কর্তৃত্ব হারাতে যাচ্ছে নুরুল হক নুরসেটিই এখন কোটির টাকার প্রশ্ন। কারণ দলের গঠনতন্ত্র না মেনেই নুর ভুয়া স্বাক্ষর দেখিয়ে দলকে ভাঙ্গার অভিযোগ তুলেনুরুল হক, রাশেদ খান ও শাকিল-উজ জামানের বিরুদ্ধে এ মামলা করা হবে বলে জানিয়েছেন রেজা কিবরিয়া।

শুধু তাই নয়, গত ৪ জুলাই প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়ালকে চিঠি দেন রেজা কিবরিয়া। ইসিতেদেওয়া চিঠিতে নিজের বহিষ্কার প্রক্রিয়াকে অবৈধ দাবি করেন ড. রেজা কিবরিয়া। তিনি দলটির আহ্বায়ক দাবি করে ওই চিঠিতেতাকে বহিষ্কার প্রক্রিয়া এবং নুরুল হক নূর ও তার পরিবারের সদস্যদের সম্পদ তদন্তের অনুরোধ জানান। একই সঙ্গে নুরুল হকনূরের দেওয়া তথ্য আমলে না নেওয়ার কথাও বলেন চিঠিতে। সর্বশেষ ইসরায়েলের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এনসাফাদির সঙ্গে গোপনে রাষ্ট্রবিরোধী ষড়যন্ত্রের অভিযোগ এনে গণঅধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুরের নামেশাহবাগ থানায় আজ মামলার আবেদন করেছে মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চ। 

এদিকে মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে নুরের বৈঠকের বিষয়টি প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থাগ্রহণ করা হবে বলে জানিয়েছেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। উল্লেখ্য, মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গে বৈঠকেরবিষয়টি নুর স্বীকার করেছেন বলে দাবি গণঅধিকার পরিষদের একাংশ নেতাকর্মীদের। ফলে ভুয়া স্বাক্ষরের অভিযোগ যদি সত্যবলে প্রমাণিত হয়, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত যদি রেজা কিবরিয়ার পক্ষে যায় এবং মোসাদের এজেন্ট মেন্দি এন সাফাদির সঙ্গেনুরের বৈঠকের বিষয়টি যদি প্রমাণিত হয় তাহলে শেষ পর্যন্ত ফেঁসে যেতে পারেন নুর এবং শেষ হয়ে যেতে পারে তার রাজনৈতিকক্যারিয়ার।

Leave a Comment