আজ শুক্রবার। ১৭ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৩রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৮ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় বিকাল ৪:৩৯

আব্বু আম্মু ওরা আমায় বাঁচতে দিল নাঃইডেন ছাত্রীর সুইসাইড নোট

আব্বু আম্মু ওরা আমায় বাঁচতে দিল নাঃইডেন ছাত্রীর সুইসাইড নোট
নিউজ টি শেয়ার করুন..

আবু নোমান রুমি,ঢাকাঃ-

দীর্ঘদিন প্রেমের সম্পর্কের পর বার বার বিয়ের আশ্বাস দিয়ে বিয়ে না করায় সুইসাইড করা ইডেন কলেজের ছাত্রী সায়মা কালাম মেঘার সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে৷ শুক্রবার (২৬ এপ্রিল ২০১৯) মেঘার ট্রলি ব্যাগে এই সুইসাইড নোট পাওয়া যায়৷

মেঘার বড় ভাই সম্রাট জানান,মেঘার ব্যবহৃত কাপড় গরীব ও অসহায়দের দেওয়ার উদ্দেশ্যে আমরা ওর ট্রলি ব্যাগ খুলি পরে ব্যাগের মধ্যে মেঘার লেখা একটি সুইসাইড নোট আমরা পাই৷”

হুবহু সুইসাইড নোটঃ-

“আমি বাঁচতে চাইছিলাম কিন্তু মাহিবি আর ওর মা আমারে বাঁচতে দেয় নায়৷ আমি বার বার মাহিবির কাছে কুত্তার মতো যাই আর ও দিনের পর দিন আমারে পায়ে ঠেলে, ওর মা বোন আমারে যা তা বলে৷ ওর আর আমার রিলেশন এমন পর্যায়ে চলে গেছে যে আমি ফিরে আসতে পারবো না৷

আব্বু আম্মু আমারে মাফ কইরা দিও৷ আমার লাশের আশে পাশেও যেন মাহিবি আসতে না পারে৷ আল্লাহ মানুষরে মাইয়া দেয় কিন্তু সবাইরে দেওয়া উচিত না৷ আল্লাহ যাদের অনেক টাকা পয়সা দেয় শুধু যেন তাদেরই দেয়, তাইলে আমার মতো গরিবের মাইয়া নিয়া ওরা খেলতে পারবে না৷

আম্মু আমি জানি আমি ছাড়া তোমার কেউ নাই কিন্তু আমি নিরুপায়৷ তুমি মুক্তা চাচির কাছে জিজ্ঞেস কইরা দেইখো আমার পিঠ দেয়ালে ঠেইকা গেছে তাই আজকে আমি মইরা গেলাম, আমার ভাইটারে মানুষ বানাইয়ো যেন আমার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে পারে৷

আর আব্বুরে সামলাইয়ো৷ আব্বুরে বুঝাইয়ো আমি নিরুপায় হইয়া করছি”। (মেঘা)

উল্লেখ্য,গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকার কাঁঠালবাগান এলাকার ৭৪/১ ফ্রি স্কুল স্ট্রিটের চারতলা বাড়ির শয়ন কক্ষ থেকে গলায় ফাঁস লাগানো অবস্থায় মেঘার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

আত্মহত্যার কারণ হিসেবে মেঘার বাবা আবুল কালাম আজাদ বলেন,মাহিবির সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মেঘার। ২০১৭ সালে মেঘা ঢাকার ইডেন কলেজে ভর্তি হয়। ঢাকায় গিয়ে মাহিবি প্রায়ই মেঘার সঙ্গে দেখা করতো। মাস ছয়েক আগে মেঘা এবং মাহিবি বিয়ের ব্যাপারে একমত হন। কিন্তু এতে বাধা হয়ে দাঁড়ান মাহিবির মা ঝালকাঠির কীর্ত্তিপাশা হাসপাতালের নার্স সেলিনা বেগম।

শবে বরাতের দুদিন আগে কাউকে না জানিয়ে ঢাকায় তাদের বিয়ে হওয়ার কথা ছিল। এজন্য মেঘা কিছু কেনাকাটাও করেছিলেন। কিন্তু মাহিবি ওইদিন কথা দিয়ে বিয়ের জন্য আসেনি। এ নিয়ে মোবাইলে তাদের ঝগড়া হয়। রোববার বিকেলে মৃত্যুর কিছুক্ষণ আগেও মেঘা এবং মাহিবির ইমোতে কথা হয়। ভিডিও কলে কথা বলার সময়ই মেঘা তার প্রেমিক মাহিবিকে বলেছেন, যদি বিয়ে না করো তাহলে এখনই আমি আত্মহত্যা করব। পরে মাহিবিকে ভিডিও কলে রেখে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করে মেঘা।

এ ঘটনায় রোববার রাতেই কলাবাগান থানায় মামলা করেন মেঘার চাচা আবুল বাশার। মামলায় তিনি উল্লেখ করেছেন, ঝালকাঠি শহরের পূর্ব চাঁদকাঠি এলাকার মাহিবি হাসানের (২৫) প্ররোচনায় গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে মেঘা।

কলাবাগান থানা পুলিশের এসআই মো. সেলিম রেজা বলেন, মেঘার চাচা যে মামলা করেছেন সেটির তদন্ত চলছে। মেঘার আত্মহত্যার পেছনে কারও প্ররোচনা থাকলে তা তদন্তে বেরিয়ে আসবে। দণ্ডবিধির ৩০৬ ধারায় আত্মহত্যায় প্ররোচনাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয়া হবে। এরই মধ্যে মেঘার সুইসাইড নোট পাওয়া গেছে।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর