সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার সোনাবাড়িয়া গ্রামের আনছার আলীর ছেলে আব্দুল মোমিন (১১)। সে কলারোয়া উপজেলার ১২০নং কোমরপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্র। আন্ত:প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতি প্রতিযোগিতা-২০১৮ এর ১০০ মিটার দৌড়ে থানা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান এবং জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে ছেলেটি।
আর এই পুরস্কারের মধ্যদিয়ে শিশু আব্দুল মোমিন গোটা সাতক্ষীরার জন্য বয়ে এনেছে সুনাম। জাতীয় পর্যায়ে উজ্জল করেছে সাতক্ষীরার মুখ। পরে গত ১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজ হাতে আব্দুল মোমিনের হাতে তুলে দেন একটি চেক, পুরস্কার ও সার্টিফিকেট।
তবে আব্দুল মোমিনের বাবা আনছার আলী অভিযোগ করেছেন, মোমিনের পাওয়া সেই চেকের অর্থ আত্মসাত করেছেন তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি মুনছুর আলী। শুধু তাই নয়, জেলা পর্যায়ে পুরস্কার পাওয়া ৫ হাজার টাকা ও বিভাগীয় পর্যায়ে পুরস্কার পাওয়া ১০ হাজার টাকাও গায়েব করেছেন প্রধান শিক্ষক।
পুরস্কারের টাকা আত্মসাতের বিষয়টি মঙ্গলবার লিখিতভাবে সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসককে জানিয়েছেন আনছার আলী।
সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের কাছে করা লিখিত ওই অভিযোগপত্রে তিনি বলেছেন, আমার ছেলে আব্দুল মমিন ২০১৮ সালের আন্ত:প্রাথমিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতি প্রতিযোগিতার ১০০ মিটার দৌড়ে থানা, জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে প্রথম স্থান এবং জাতীয় পর্যায়ে তৃতীয় স্থান অধিকার করে। গত ১৩ মার্চ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ বিবেচনা করে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আমার ছেলের হাতে জাতীয় প্রাথমিক শিক্ষা পদক-২০১৮ প্রদান করেন। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তার হাতে একটি সার্টিফিকেট ও চেক তুলে দেন। পরবর্তীতে আমার ছেলের কাছ থেকে স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ওই চেকের পেছনে জোর করে দু’টি স্বাক্ষর করে চেকটি নিয়ে নেন। এর আগে একই ভাবে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায় পুরস্কার পাওয়া আরও ১৫ হাজার টাকা নিয়ে নেন তিনি। প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম আমার ছেলেকে বলেন, স্কুলে একটি সংবর্ধনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে এসব টাকা ও সার্টিফিকেট তোমার হাতে তুলে দেওয়া হবে। কিন্তু আজও তা দেওয়া হয়নি।
তিনি বলেন, গত ১৫ এপ্রিল আমি স্কুলে গিয়ে প্রধান শিক্ষকের কাছে চেকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উত্তেজিত হয়ে আমাকে মারতে আসেন। এ সময় প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলাম ও স্কুলের সভাপতি মুনছুর আলী হুমকি দিয়ে আমাকে বলেন, ‘তোমার ছেলেকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হবে। বিষয়টি জানাজানি হলে তোমার ছেলের আরও ক্ষতি হবে।’
আনছার আলী বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি আমার ছেলের এসব টাকা ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন।
শিশু মোমিন বলে, আমি প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পাওয়া চেকটি ফিরে পেতে চাই।
এ ব্যাপারে ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক শহিদুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি।সূত্র : সমকাল