আবু নোমান,ঢাকা কলেজঃ-
ঢাকা কলেজ থেকে এইচএসসি সম্পন্ন করে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে রসায়নে ভর্তি হোন। সেখান থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সফলতার সঙ্গে সম্পন্ন করে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগের জন্য সুপারিশ প্রাপ্ত হোন।
তখন শৈশব কাটানো প্রাণের ক্যাম্পাসের মায়া ত্যাগ করতে পারেননি। প্রভাষক হিসেবে ঢাকা কলেজেই যোগ দেন৷ দক্ষ মানুষ গড়ার একনিষ্ঠ কারিগর হিসেবে আত্মনিয়োগ করেন। এরপর সহকারী অধ্যাপক, সহযোগী অধ্যাপক এবং অধ্যাপক সব পদে থেকেই মানুষ গড়েছেন।
বিভাগীয় প্রধান, ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ এবং অধ্যক্ষ হিসেবে গৌরব আর ঐতিহ্যের বিদ্যাপীঠকে নেতৃত্ব দিয়েছেন শ্রদ্ধেয় প্রিয় মোয়াজ্জেম হোসেন মোল্লাহ্ স্যার।নির্বাচিত হয়েছেন শ্রেষ্ঠ কলেজের প্রধান হিসেবে।
আমার সঙ্গে আলাপচারিতায় বলেছিলেন, আমি কংক্রিটের উন্নয়ন নয়, ঢাকা কলেজের শিক্ষার মানোন্নয়নে কাজ করার চেষ্টা করেছি। মহৎ মানুষটি নিজেকে উপস্থাপন করার প্রশ্নে খুব সহজ-সরল। তিনি সবসময় বলেন, আমার হয়তো যোগ্যতা কম! তাই তো বন্ধুদের মধ্যে সবচেয়ে ছোট পেশায় আমি। কথাটা শুনে নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না। বললাম স্যার আপনি নিজেকে এভাবে তুলে ধরেন কেন! আপনি যে সংখ্যক মানুষ তৈরি করেছেন সেটা কি আপনার ঐসব বন্ধুরা পেরেছে! আপনার ছেলেরা দেশের মানচিত্র ছাড়িয়ে সারাবিশ্বে নেতৃত্ব দিচ্ছে। তখন এ মানুষটি বললো, এটাই তো আমার প্রশান্তির! আমি দেশ গড়ার দক্ষ নাগরিক তৈরি করছি। এসব ভেবেই তো কোনদিন এ ক্যাম্পাস ছেড়ে যাইনি!
নিজের অফিস কক্ষের চেয়ার-টেবিল দেখিয়ে বললেন, এসব রঙচটা বহুদিন আগের পুরনো আসবাবপত্র ব্যবহার করে গেলাম! আমি ঢাকা কলেজের অধ্যক্ষ চাইলেই তো জাঁকজমকপূর্ণ জীবন যাপন করতে পারতাম! কিন্তু আমি এ কলেজের ছাত্র থেকে শিক্ষক! আমার জন্য এসব নয় বরং আমার কাজ ছিলো ছাত্রদের শিক্ষার মানোন্নয়ন! সেটা কতটা পেরেছি জানি না তবে চেষ্টা করেছি শতভাগ!
গতকাল ২৭ এপ্রিল এই অভিভাবকের শেষ কর্মদিবস ছিলো! স্যার সত্যি আপনার অনুপস্থিতি মানতে আমাদের কষ্ট হবে! কবি গুরুর ভাষায় বলতে হয়, যেতে নাহি দিব হায় , তবু যেতে দিতে হয় , তবু চলে যায়…!!
আমরা আপনার জন্য দোয়া করি। আপনি সুস্থ থাকুন। ভালো থাকুন। আমাদের জন্য দোয়া করবেন, আপনার চিন্তা শক্তির সামান্যতম হলেও যেন মনে ধারণ করতে পারি। খুব মিস করবো আপনাকে স্যার!
লেখকঃ-মাহমুদ