রাশেদুজ্জামান রনি,বিশ্ববিদ্যালয় সংবাদদাতা:
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় ১ বছরের ৩৬৫ দিনের মধ্যে ১৮১ দিনই বন্ধ থাকে। বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক ক্যালেন্ডার সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যায়। যদিও নতুন বছরের একাডেমিক ক্যালেন্ডারে বন্ধ কমিয়ে অানা হয়েছে। সেমিস্টার সিস্টেমের নিয়ম অনুযায়ী ৬ মাসে এক সেমিস্টার ফাইনাল হওয়ার কথা থাকলেও বিশ্ববিদ্যালয়ই বন্ধ থাকে ৬ মাসেরও বেশি সময়। এ বন্ধের কবলে পড়ে ৬ মাসের সেমিস্টার ফাইনাল হয়ে থাকে ১০ মাস থেকে ১২ মাসে। যার ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি বিভাগের প্রতিটি ব্যাচ ভয়ানক সেশনজটের কবলে রয়েছে।
চলমান ক্যালেন্ডার অনুযায়ী বর্তমান সেশনে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক, জাতীয় ও ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে এক দিন করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে ১৬ দিন। ইদ-উল-আযহা উপলক্ষে ১৬ দিন, দুর্গাপূজা উপলক্ষে ০৫ দিন, শীতকালীন ছুটি উপলক্ষে ০৬ দিন এবং গ্রীষ্মকালীন ও ইদুল ফিতর উপলক্ষে ৩০ দিন বন্ধ থাকবে। আর শুক্রবার ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় বছরে ১০৪দিন ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা, বিভিন্ন বিভাগের ট্যুর, টিসার্স ডে, বর্ষপূর্তি এবং সরকার ঘোষিত বিভিন্ন জাতীয় ও রাজনৈতিক কর্মসূচী, রাজনৈতিক আন্দোলন, শিক্ষক আন্দোলন, ছাত্র আন্দোলন, বিভিন্ন বিভাগের অনুষ্ঠানসহ নানা ইস্যুতেও অন্তত ১৫ থেকে ২০ দিনেরও বেশি সময় যে কোন বিভাগের ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকে।
সাংবাদিক সমিতির উপদেষ্টা মেহেদি জামান লিজন বলেন, নানা ইস্যু, দীর্ঘ ছুটির তালিকা এবং অনাকাঙ্খিত বন্ধ, শিক্ষকদের আন্তরিকতাহীনতার কারণে আমাদের এই দীর্ঘ সেশন জটিলতা কারণ। তাই আমাদের স্বপ্নের ভবিষ্যৎ বিনির্মানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন আরও আন্তরিক হবেন।’
সাধারণ শিক্ষার্থী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহীন হোসাইন সাজ্জাদ বলেন, ‘পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় হচ্ছে বৈশ্বিক শিক্ষার আতুর ঘর। কিন্তু পরিতাপের বিষয়, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রায় অর্ধ বছর বন্ধই থাকে। যার ফলে,স্নাতক ও স্নাতকোত্তর করে বের হতে আমাদের ৬ থেকে ৭ বছর এবং কোন কেন ক্ষেত্রে তারচেয়েও বেশি সময় লাগে। জীবনের এই গুরুত্বপূর্ণ সময় অপচয় হচ্ছে যা রাষ্ট্র এবং শিক্ষার্থীদের ক্ষতিসাধন করছে। প্রশাসনের কাছে অনুরোধ জানাই যাতে বন্ধের পরিমাণ কমিয়ে সহনশীল পর্যায়ে নিয়ে আসা হয়।‘
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (ভারপ্রাপ্ত) ড. মো. হুমায়ুন কবীর বলেন, অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয়ে ন্যায় অামরা নিয়ম করে থাকি। বিশ্ববিদ্যালয়ে যে কোন বিষয়ে আমরা আন্তরিক।বিশ্ববিদ্যালয়ের চলমান সেশনে কিছু বন্ধ কমানোর সুযোগ এখনো রয়েছে। এ বিষয়ে আলোচনা করে আমরা সিদ্ধান্ত নিব।’