পূর্ব বাংলা এবং পরর্বতী স্বাধীন বাংলার ইতিহাস

বহুমানুষের  রক্তঝরা ত্যাগের বিনিময়ে অাজকের বাংলাদেশ।।

একটি বিপ্লবী ভাষণ, অকুতোভয় ডাঃ এম এ মান্নান  একজন বীর মুক্তিযোদ্বা ও মুক্তিযুদ্ধের অন্যতম সংগঠক…

এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ তাদের কর্মের মাধ্যমে চির অমর হয়ে থাকেন। অর্থ যশের বুভুক্ষু না হয়ে মানুষের মনি কৌঠায় তারা ঠাঁই পান অতি সহজে। তিনি নিঃস্বার্থভাবে দেশ জাতি ও সমাজের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। যেখানে কল্যাণের কাজ, যেখানে সেবার কাজ, সেখানেই তিনি অকুণ্ঠচিত্তে বিনা দ্বিধায় এগিয়ে গেছেন। মানব সেবায় অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন এবং সমাজের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। সেবার এ ধরনের মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব সমাজে আজ বিরল। আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য সেবার এ ধরনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা গেলে জাতির কল্যাণ বয়ে আসতে পারে। দৃঢ় চেতা মনোবল ও অমায়িক ব্যবহারে মন্ত্রমুগ্ধের মত মানুষকে কাছে নিয়ে আসতেন। চলনে ও কথাবার্তায় অহমিকা ছিল না বলেই তিনি সকলের প্রিয়জন ছিলেন। নিজের কর্মকান্ডের প্রমাণ করে গেছেন সরল জীবন-যাপনের ও মানুষের প্রতি মমত্ববোধের মাধ্যমে চিরদিন নিজেকে জীবন্ত রাখা যায়। তাই আজও তিনি জনগণের কাছে অমর হয়ে আছেন শুধুমাত্র তার কর্মকান্ডে। কিন্তু দুঃখের সংগে বলতে হয় যার হৃদয়ের প্রসারতায়, সেবায় ও দানে চট্টগ্রামের সামাজিক, রাজনৈতিক জীবন সঞ্জিবীত সেই মহৎ প্রাণ পুরুষ ডাঃ এম, এ মান্নানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্টরা কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।

মুক্তিযুদ্ধকালীন ৫ বৎসরের শিশু ছিলাম।কিন্তু স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে এত বেশি মুক্তিযুদ্ধের কথা শুনেছি, ভাবলে মনে হয় ভয়ঙ্কর দিনগুলোর অবুঝ স্বাক্ষী আমি। সহিংস বর্বর দূর্বৃত্ত অত্যাচারিদের বিভীষিকাময় দিনগুলির চিত্র তখন ভেসে উঠে চোখের পাতায়। তখন পাকিস্তানের প্রতি ঘৃণা মিশ্রিত মন বিদ্রোহী হয়ে উঠে অজান্তেই। পাকিস্তানী বর্বরতায় মন বিষন্ন হলেও গর্বের কথা এই, বীর প্রসবনী বাংলার সিংহ শার্দুলরা সব ঘৃণীত হানাদারদের বিরুদ্ধে মরণপন লড়াই করে আমাদের উপহার দিয়েছে লাল সবুজের একখন্ড বাংলাদেশ। সেই স্বাধীন বাংলাদেশে বসে অকৃতজ্ঞের মতো আমরা অনেকে ভুলে গেছি আমাদের রক্তের রঙ্গীন অতীতকে, বীর মুক্তিযোদ্ধাদেরকে। আমাদের এই উদাসীনতার আজ অনেক যোদ্ধার কাহিনী বিম্মৃত, তাই আজ এমন এক বীর মুক্তিযোদ্ধার গল্প শোনাব যিনি রণাঙ্গনে যেমন ছিলেন কঠোর আপোষহীন সেনানী ব্যক্তিগত জীবনে তেমন ছিলেন নরম ও কোমল হৃদয়ের অধিকারী। সেই সমাজসেবী সাহসী ব্যক্তিত্বের নাম মরহুম ডা: এম এ মান্নান ১০ মে ১৯২৮ সালে বোয়ালখালীর পশ্চিম গোমদন্ডী গ্রামে সম্ভান্ত জমিদার পরিবারে জন্ম গ্রহন করেন এবং ২৫ এপ্রিল তার ২৭তম মৃত্যু বাষিকী। এই দিনে তার প্রতি রইল অকৃত্রিম শ্রদ্ধাঞ্জলী।

মহান মুক্তিযোদ্ধের অন্যতম এই সংগঠক, মুক্তিযোদ্ধকালীন জোনাল কমান্ডার চট্টগ্রাম দক্ষিণ অঞ্চল উপ পরিচালক, যুব শিবির পূর্বজোন, বোয়ালখালীর কৃতিসন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ডা: এম. এ মান্নান এমপি। তিনি ছিলেন ১৮৬৩ সালে উপমহাদেশের বিখ্যাত দিল্লির  দেওবন্দ ইসলামী মাদ্রাসা বিশ্ববিদ্যালয়ের সবোর্চ্চ  ডিগ্রীপ্রাপ্ত  মৌলানা মরহুম আলীম উল্লাহ চৌধুরীর তৃতীয় পুত্র।৫২ এর ভাষা সৈনিক ডাঃএম,এ,মান্নান। ৫২ এর ভাষা অান্দোলনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এবং ১৪ ফেব্রুয়ারী লালদীঘির  ময়দানে বাংলা ভাষা প্রতিষ্টার দাবীতে বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখেন। ১৯৫৪ ডাক্তারী পাশ করে নিজেকে মানব সেবায় নিয়োজিত করেন।

তিনি বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী ডা: এম.এ মান্নান ছিলেন একজন রাজনীতিবিদ, চিকিৎসক, মুক্তিযোদ্ধা ও সমাজসেবক। ১৯৫৭ সালে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠিত হবার পরই ৫৭ এর ছাত্র সংসদের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। ডাঃএম,এ,মান্নান চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়  প্রতিষ্টা তরান্বিত করার দাবীতে গঠিত সংগ্রাম কমিটিতে, চট্রগ্রাম মাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ প্রতিষ্টা কমিটির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন এবং গুরুর্ত্বপূর ভূমিকা রাখেন।চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্টার দাবীতে ৯ ডিসেম্বর লালদীঘির বিশাল জনসভায় বক্তব্য রাখেন:: ফজলুল কবির চৌধুরী এম,পি,এ। অাবুল খায়ের সিদ্দিকী, অধ্যক্ষ রেজাউল করিম চৌধুরী, দীপংকর মহাথের,ক্যাপটেন মুহাম্মদ বকতেয়ার,মোঃ অাইয়ুব খান, ইউ,এন,সিদ্দিকী, বাদশা মিয়া চৌধুরী, অধ্যাপক এ,বি,এম,সুলতানুল অালম চৌধুরী,সাধারণ সম্পাদক: চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় সংগঠনী কমিটি অধ্যাপক অাহমদ হোসেন ও ডাঃ এম,এ,মান্নান সহ অন্যান্য সদস্যবৃন্দ।

তিনি বোয়ালখালী সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রী কলেজের প্রতিষ্টাতা উদ্যোক্তা এবং পশ্চিম গোমদন্ডী উচ্চ বিদ্যালয়ের উদ্যোক্তা হয়ে মানব সমাজের শিক্ষার উন্নয়নে গুরুর্ত্বপূন  ভূমিকা রাখেন।

৬৬ এর ৬ দফা অান্দোলনে  ও তিনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন।৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণা দেওয়ার পর চট্রগ্রাম জেলা অাওয়ামী লীগের সমর্থনে ও ৬ দফার পক্ষে প্রথম জনসভার ব্যাপারে পূর্বেকার সিন্ধান্তক্রমে অাবদুল্লাহ হারুন বলেন “” ইত্তেফাকের সাংবাদিক মইনুল অালম টেলিফোনে অামাদের চট্রগ্রামে ৬ দফার ব্যাপারে দ্রুত সিন্ধান্ত নিতে অনুরোধ করেন।চট্রলার ক্ষনজন্মা অভিসংবাধিত কিংবদন্তি রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এম,এ,অাজিজ ছিলেন৬ দফার ব্যাপারে অনমনীয়তাপূূর্ন অবস্হানে।এম,এ,অাজিজ সবাইকে নিয়ে বৈঠকে বসেন।জনাব মইনুল অালম অনুরোধ সংক্রান্ত বিষয়ে এবং সিন্ধান্তক্রমে বিবৃতি প্রদান করা হয়।বৈঠকে উপস্হিত ছিলেন যথাক্রমে:: এম,এ,অাজিজ,জহুর অাহমেদ চৌধুরী,এম,এ,হান্নান,অাবদুল্লাহ হারুন,ডাঃএম,এ,মান্নান,এম,এ,ওয়াহাব সহ অন্যান্যরা। ৬ দফা ঘোষনার পর প্রথম চট্রগ্রামের রাজনীতিতে ব্যাপক পরির্বতন  পরিলক্ষিত  হয়,তাতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এম,এ,অাজিজ।

২৫ ফেব্রুয়ারী ৬ দফার পক্ষে প্রথম জনসভা করেন।জনসভায় ব্যাপক জনগণের উপস্হিতি লক্ষ্য করা যায়।উল্লেখ্য তখন পযর্ন্ত ৬ দফা অাওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটিতে পাশ করা হয়নি।এভাবে ৬ দফার ব্যাপারে অাওয়ামী লীগের উপর চাপ সৃষ্টির লক্ষ্য দলের কাছে পেশের পূর্বেই ৬ দফাকে জনগণের কাছে পৌছে দেওয়া হলো।পরর্বতীতে চট্রগ্রামের ছাত্র সমাজের সক্রিয়তা দৃঢ়ভাবে পক্ষে  অানতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ ফেব্রুয়ারী জনসভা শেষে অাওয়ামী লীগ ও ছাত্র নেতাতের সাথে বৈঠকে বসেন।এই বৈঠকে ছিলেন যথাক্রমে:: এম,এ,অাজিজ,অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী,জহুর অাহমেদ চৌধুরী,ডাঃ এম,এ,মান্নান,ফেরদৌস অাহমেদ কোরাইসী, এম,এ,মান্নান,অাবু সালেহ,সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, শায়েস্তা খান প্রমূখ।৬ দফা ঘোষণা  দেওয়ার পর পাক সরকার অাওয়ামী লীগ নেতাদের গনহারে গ্রেফতারী শুরু করেন।মে- জুন মাসে গ্রেফতার হন এম,এ,অাজিজ,জহুর অাহমেদ চৌধুরী,এম,ইদ্রিস,অধ্যাপক নুরুল ইসলাম চৌধুরী,মানিক মিয়া,এম,এ মান্নান,এ,কে,এম,অাবদুল মান্নান,জিতেদ্র প্রসাদ নাথ মন্টু,রবিউল হোসেন,বাদশা মিয়া সহ অারো অনেকেই।

গ্রেফতারের উদ্দেশ্য ছিল৭ জুনের হরতালকে বানচাল করার অপচেষ্টা।কিন্তু ৭ জুন অত্যন্ত সফলতার সাথে ৬ দফার পক্ষে  হরতাল পালনের মাধ্যমে জনগনের ব্যাপক সাড়া পাওয়া যায়।এই হরতালকে সফল করতে যারা প্রথম সাড়িতে থেকে নেত্বর্ত্ব দিয়ে হরতালকে সফলতা লাভে বিশেষ ভূমিকায় ছিলেন যথাক্রমে :: এম,এ,হান্নান,অাবদুল্লাহ হারুন,ডাঃএম,এ,মান্নান,অাবু সালেহ,কফিলউদ্দিন, এস,এম,জামালউদ্দিন, শাহজাহান চৌধুরী,অাবদুল রব,অাবুল কালাম অাজাদ,মোক্তার অাহমেদ,অাবু মোহাম্মদ হাসেম,হাফেজ জামাল,নাসিরুদ্দিন, এম,এ,ওয়াহাব,এম,এন,ইসলাম,মোজাম্মেল হক,রহমতউল্লা চৌধুরী,ডাঃ সৈয়দ সহ অাওয়ামী লীগও ছাত্র সমাজের নেতৃবৃন্দ।

৭০ সালে এসে ডাঃ এম, এ মান্নানকে সভাপতি, শেখ মোজাফফর আহমেদকে সাধারণ সম্পাদক করে শক্তিশালী বোয়ালখালী থানা আওয়ামী লীগ গঠন করা হয়। ৭০ এর নির্বাচনে ডাঃ এম, এ মান্নান বোয়ালখালী পাঁচলাইশ আসনে বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য নির্বাচিত হন। ৭০ এর ১ জানুয়ারী থেকে ৭১ এর ২৬ মার্চ পর্যন্ত।

হালিশহর শ্রমিক সভা হয়। প্রধান অতিথি ছিলেন কিংবদন্তি জননেতা এম.এ আজিজ। বক্তব্য রাখেন ডাঃ এম, এ মান্নান এমপি, এস এম ইউচুপ, নিজামুল হক, আবদুর রব, মাহমুদুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ।

নির্বাচন পরবর্তীতে আওয়ামী লীগ সংগ্রাম পরিষদ গড়ে উঠে। ডাঃ এম,এ মান্নান এম,পি শেখ মোজাফফর আহমেদ, এম, এন, ইসলাম, প্রফেসার দীলিপ চৌধুরী (পরে শহীদ হন) এম, এ জব্বারের নেতৃত্বে। ১৪ মার্চ লালদীঘিতে শ্রমিক লীগের সভায় বাংলাদেশের দাবী মেনে নেওয়ার আহবান জানিয়ে বক্তব্য রাখেন শামসুল হক, আতাউর রহমান খান কায়সার এম,পি, ডাঃ এম, এ মান্নান এম,পি, আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবু, আবদুল্লাহ আল হারুন, মীর্জা আবু মনসুর এমপি প্রমুখ। ২২ মার্চ ক্যাপ্টেন রফিক ও মেজর জিয়ার আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামীলীগ নেতা আতাউর রহমান খান কায়সার এমপি, ডাঃ এম.এ মান্নান এমপি। ২৬ মার্চ চট্টগ্রামকে চারটি সেক্টরে ভাগ করেন আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ। কালুরঘাট সেক্টরের দায়িত্ব দেওয়া হয় এম.এ.মান্নান এমপি, আতাউর রহমান খান কায়সার এমপি ও ডাঃ আবু জাফর প্রমুখকে।

২৬ মার্চ দুপুর ২টা থেকে ২.৩০ মিনিটের মধ্যে আওয়ামী লীগ নেতা এম.এ হান্নান কালুরঘাটস্থ চট্টগ্রাম বেতার কেন্দ্র থেকে বঙ্গবন্ধুর পক্ষে স্বাধীনতার ঘোষণাটি সর্ব প্রথম পাঠ করেন। এই ঘোষণার মাধ্যমে কালুরঘাটস্থ বেতার সম্প্রচার কেন্দ্র স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্র হিসাবে কাজ শুরু করে। বেতারে এই প্রথম অধিবেশনের সাথে যারা যুক্ত ছিলেন, মোশারফ হোসেন এমপি, আতাউর রহমান খান কায়সার এমপি, ডাঃ এম, এ মান্নান এমপি, মির্জা মনসুর এমপি, ডাঃ আবু জাফর, মোঃ শাহজাহান, রাখাল চন্দ্র বণিক, এম,এ হালিম (সরকারী কর্মকর্তা) উল্লেখযোগ্য।

২৭ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র চালু করে দ্বিতীয় অধিবেশন শুরু হলে প্রথম জ্বালাময়ী ভাষণ দেন ডাঃ এম,এ মান্নান এমপি। তিনিই প্রথম দেশ-বিদেশের কাছে আমাদের স্বাধীনতার যুদ্ধের কথা প্রচার করে সাহায্যের জন্য আবেদন জানালেন। নিরস্ত্র বাঙালী জাতীর উপর পশ্চিমা হানাদারদের অত্যাচারের কথা, গণ্য-হত্যার কথা, চট্টগ্রাম বেতার থেকে তার কণ্ঠে সর্ব প্রথম প্রচারিত হয়। তার এই বক্তব্য স্বাধীনতার ইতিহাসে এক অনন্য দলিল। মিথ্যার জাল ছিন্ন করে যেদিন স্বাধীনতার সত্যিকার ইতিহাস লিখা হবে সেদিন সমাদৃত হবে তার এই ভাষণ।

ভাষণটি হুবহু তুলে ধরা হলো।

বিপ্লবী বেতার কেন্দ্র থেকে-১৯৭১

ভাইয়েরা আমার গত রাত্রি সারা বাংলার উপর যে ভাবে গুলি-গোলা চালানো হয়েছে তাতে বাঙালীরা দমেনাই। হাজার হাজার পশ্চিমা হানাদার বাহিনীকে তারা ধ্বংস করে চলছে। জনতা তাদের সাথে এগিয়ে যাচ্ছে, লাখো লাখো জনতা লয় আর মাঠে ময়দানে ছুটে চলছে। টিক্কা খানের মার্শাল্ল কে মানে না। ইয়াহির মার্শাল্লকে মানে না। ভাইয়েরা আমার, বাঙ্গালী ভাইয়েরা আমার যদি বাংলাকে বাচাতে চান, যদি মানুষের মতো বাঁচতে চান, বাংলার নয়ন মনি বঙ্গবন্ধু, বঙ্গশার্দুল শেখ মজিবুর রহমান সাহেব আজকে যে বাংলার স্বাধীনতা ঘোষণা করেছেন সেই স্বাধীনতা যদি রক্ষা করতে চান, যদি স্বাধীন নাগরিকের মতো এ পৃথিবীর বুকে বাচতে চান তাহলে আপনাদের কাছে আমার আকুল আবেদন বাংলার নয়নমনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের পক্ষ হয়ে বলছি আপনাদের কাছে আকুল আবেদন সর্বাত্মক সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়ুন। পশ্চিমা হানাদার বাহিনীদের এদেশ থেকে চিরতরে খতম করে তাদের জীবনে বিষাতরী ভাইয়েরা আমার বাংলায় আজ দুর্ভিক্ষ অনাহার তবুও বাংলার মানুষ জানে কি করে স্বাধীনতা রক্ষা করতে হয়।

বাহিরের শান্তি কামী মানুষের প্রতি বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রতি আমাদের আকুল আবেদন, আপনারা মানবতার খাতিরে আমাদের সংগ্রামে নিজেদের একাত্ম করুন। আমাদের বাংলার মানুষকে রক্ষা করুন। আজ মরিয়া হয়ে এ পৃথিবীর বুকে প্রমাণ রেখে যেতে চাই সারা বাংলাদেশ পৃথিবীর মধ্যে একটা রেকর্ড স্থাপন করতে চাই। শান্তিকামী পৃথিবী বাসীদের কাছে আমাদের আবেদন এই বাংলার সাড়ে সাতকোটি মানুষকে রক্ষা করার জন্য এগিয়ে আসুন এবং ঐ পশ্চিমা হানাদার শোষকদের বিরুদ্ধে আপনাদের অস্ত্র তুলে ধরুন। আর মানবতার খাতিরে আপনাদের কাছে আহবান জানাই, আপনারা এগিয়ে এসে আমাদের এদেশকে রক্ষা করুন। এ মাত্র তথাকথিত পাকিস্তান রেডিও থেকে প্রচার করা হয়েছে শেখ সাহেব এরেষ্ট হয়েছে এ একটা ডাহা মিথ্যা। শেখ সাহেব এখন আত্মগোপন করে সারা বাংলার মানুষকে পরিচালিত করছেন আর বাঙ্গালী ই.পি.আর, ইষ্ট বেঙ্গল এবং পুলিশ বাহিনী জনতার সাথে একাত্ম হয়ে পশ্চিমা হানাদারদের বুকে মরণ-কামড় এনেছে। তারা আজ হাজারো হাজারো সৈন্য, ঐ পশ্চিম পাকিস্তানের মানুষকে আমরা রাস্তায় লুঠিয়ে দিচ্ছি বুলেটের আঘাতে, লাঠির আঘাতে ভাইয়েরা আমার আপনাদেরকে ভয় ভীতি প্রদর্শন করার জন্য এসব নানাভাবে মিথ্যা প্রচারণা করা হচ্ছে।

আমরা বাঙ্গালীরা আজ যে সর্বাত্মক সংগ্রামে ঝাপিয়ে পড়েছি পৃথিবীর শান্তিকামী মানুষের কাছে আমাদের আবেদন আপনারা বিশেষ করে আমার প্রতিবেশীরা আপনারা এগিয়ে আসুন বাংলার সাড়ে সাতকোটি মানুষকে রক্ষা করুন। যদি মানবতার আপনাদের বিশ্বাস হয় আপনারাও যদি মানুষ হয়ে পৃথিবীতে জন্ম গ্রহণ করে থাকেন তাহলে এ মানুষকে বাঁচানোর নৈতিক দায়িত্ব আজ পৃথিবীর সর্বদেশের শান্তিকামী জনসাধারণের। তাই আমরা যে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছি, সেই স্বাধীনতাকে রক্ষা করার জন্য, পশ্চিমা হানাদার বাহিনী থেকে বাংলার নিরীহ অস্ত্রহীন মানুষকে রক্ষার জন্য আপনাদের কাছে আবেদন জানাই। ভাইয়েরা আমরা আজ সারা চট্টগ্রাম, ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা বাংলাদেশের প্রতিটি ডিষ্ট্রিকে আজ যেভাবে বাঙ্গালীরা একাত্ম হয়ে ই.পি.আর এবং পুলিশ বাহিনীকে সঙ্গে নিয়ে পশ্চিমা হানাদার বাহিনীদের উপর আঘাত হানছে তাতে তারা সহ্য করতে না পেরে এখন লুকিয়ে গেছে। আমরা সবখানে আমাদের কর্তৃত্ব স্থাপন করেছি। আজ বাংলাদেশের স্বাধীন বেতার কেন্দ্র থেকে আপনাদের কাছে এ আহবান জানাচ্ছি। এ বেতার কেন্দ্র আপনাদের মাঝে মাঝে খবর দিবে।

আপনারা সদাসর্বদা তৈয়ার থাকবেন কখন কোন নির্দেশ আপনাদের প্রতি আসে। বাংলার নয়ন মনি বঙ্গবন্ধু, বঙ্গশার্দুল শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের নির্দেশ যে বাঙ্গালী উঠো, জাগো, পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তোমরা নিজের হাতুড়ি, শাবল, লৌহা, লংঙ্কর, পিস্তল, কামান, বন্দুক যাহাই আছে তা নিয়ে ছুটে যাও। স্বাধীনতাকে রক্ষা করো, বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে। আজ বাংলাদেশের স্বাধীন বেতার কেন্দ্র থেকে আপনাদের কাছে এ আহবান জানাচ্ছি। এ বেতার কেন্দ্র আপনাদের মাঝে মাঝে খবর দিবে। আপনারা সদাসর্বদা তৈয়ার থাকবেন কখন কোন নির্দেশ আপনাদের প্রতি আসে। বাংলার নয়ন মনি বঙ্গবন্ধু, বঙ্গশার্দুল শেখ মুজিবুর রহমান সাহেবের নির্দেশ যে বাঙ্গালী উঠো, জাগো, পশ্চিমা হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে তোমরা নিজের হাতুড়ি, শাবল, লৌহা, লংঙ্কর, পিস্তল, কামান, বন্দুক যাহাই আছে তা নিয়ে ছুটে যাও। স্বাধীনতাকে রক্ষা করো, বাংলা বেতার কেন্দ্র থেকে প্রচারিত তার এই বক্তব্যের কেসেট দীর্ঘ বাইশ বৎসর পর এখন মরহুম ডাঃ এম, এ মান্নানের পরিবার বহু কষ্টে সংগ্রহ করেছে।

১২ এপ্রিল শত্রুবাহিনী কর্তৃক কালুরঘাট পতনের পর তিনি সামরিক প্রশিক্ষণের জন্য দেশ ত্যাগ করেন। রাজনীতিবিদদের কবজা করার লক্ষ্যে ২৬ মার্চ সরকার পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক তৎপরতার উপরে নিষেধাজ্ঞা জারী করেন। ২১ এপ্রিল রাজনৈতিক নেতাদের সামরিক কর্তৃপক্ষ বিচারের জন্য সামরিক আদালতে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেন। পরে এদের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করা হয়। ১৯৩ জন প্রাদেশিক পরিষদ সদস্যকে বিচারের জন্য ডাকা হয়। এদের মাঝে চট্টগ্রামের জহুর আহমদ চৌধুরী, ডাঃ এম. এ মান্নান, মোশারফ হোসেন, মির্জা আবু মনসুর, আবদুল ওহাব, ডাঃ বি,এ, ফয়জুর রহমান প্রমুখ প্রাদেশিক পরিষদ সদস্য ছিলেন। এদের দুস্কৃতিকারী আখ্যা দিয়ে, তাদের ধরিয়ে দেওয়ার জন্য পুরস্কার ঘোষণা করা হয় ৫০০/থেকে ২০০০/- টাকা পর্যন্ত।

জুনে পূর্বাঞ্চলীয় জোনে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন একটি কমিটি গঠন করা হয়। এই কমিটির নাম ছিলো বেঙ্গল লিবারেশন কাউন্সিল। আহবায়ক ছিলেন জহুর আহমদ চৌধুরী, সদস্যরা হলেন নুরুল হক, শামসুদ্দোহা, আবদুল কুদ্দুছ মাখন, জহিরুল কাইয়ুম, মিজানুর রহমান চৌধুরী, ডাঃ এম, এ মান্নান, ডাঃ মোশারফ হোসেন, ডাঃ কাজী সিরাজ। দক্ষিণ পূর্ব জোন ১ এর জন্য একটি উপদেষ্টা কমিটি গঠন করা হয়্ এম, ওয়াহাব এমপি কে চেয়ারম্যান, ডাঃ এম, এ মান্নান এমপি, ডাঃ বিএম ফয়েজুর রহমান এমপি, তালেব আলীকে সদস্য করা হয়। ডাঃ এম, এ মান্নান এমপি, সামরিক প্রশিক্ষণ গ্রহণের জন্য সাবরুম ও হরিনা ক্যাম্পে যান।

এখানে সংসদ সদস্যদের ট্রেনিং দেওয়া হতো। এখানে ট্রেনিং নেন, ডাঃ এম,এ মান্নান এমপি, মোশারফ হোসেন এমপি, মির্জা আবু মনজুর এমপি প্রমুখ। ভারতে ট্রেনিং নিয়ে সৈয়দকে প্রধান করে গঠিত গ্রুপ ডাঃ এম,এ মান্নান এমপি, হতে শপথ নিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেন।

৪ থানার এফ এফ নেতা বোয়ালখালী হতে নির্বাচিত এমপি ডাঃ এম, এ মান্নান হতে সমগ্র দক্ষিণ জেলার এফএফ গ্রুপ গুলোর সার্বিক পরিচালনার দায়িত্ব নিয়ে ভারতের হরিয়াণা এ সাবরুম ক্যাম্পে সামরিক প্রশিক্ষণ শেষে মেজর পদবি  গ্রহন করেন।১৭ জন গেরিলা যোদ্ধাসহ ৩৫০০ জনের সামরিক প্রশিক্ষণ প্র্যাপ্ত একটি বিরাট দলসহ বাংলাদেশে প্রবেশ করেন এবং সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন করেন দেশ শত্রুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তিনি রনাঙ্গনে কাটিয়েছেন। স্পেশাল গ্রুপে ১৭জন ট্রেনিং প্রাপ্ত গেরিলা ছিলেন লাতু বড়ুয়া, শুকুমল চৌধুরী, ললিত কুমার দাশ, বিন্দু বড়–য়া, পান্না লাল ঘোষ, হোসেনুজ্জামান, আহমেদ হোসেন, আজিম, ওবায়দুল হক সিকদার, জহিরুল হক সিকদার, অজিত। অন্য ছয় জনের নাম এই মুহুর্তে মনে নেই। ১৪ ডিসেম্বর রাতে উত্তর ভূষি গ্রামে তার সঙ্গে তার পরিবারের দেখা হয় দীর্ঘ ৯ মাস পর এবং বলেন ইনশাআল্লাহ আবার দেখা হবে, স্বাধীন বাংলাদেশের মাটিতে।

১৬ ডিসেম্বর লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে স্বাধীনতা অর্জন করে বাংলাদেশ। ১৭ ডিসেম্বর তিনি পরিবারের সাথে দেখা করেন স্বাধীন রাষ্ট্র বাংলাদেশের মাটিতে। যুদ্ধকালীন সময়ে ডাঃ এম, এ মান্নান মেরুদণ্ডে মারাত্মক আঘাত প্রাপ্ত হন। ৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সরকারী খরচে ডাঃ এম,এ মান্নান এমপিকে উন্নতর চিকিৎসার জন্য পূর্ব জার্মানী পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। ৬ মাস চিকিৎসার পর তিনি সুস্থ হয়ে দেশে ফিরে আসেন। তিনি ছিলেন মরহুম জননেতা এম, এ আজিজের একান্ত অনুসারী।

মৃত্যুকালে ডাঃ এম, এ মান্নান দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতি ছিলেন।

সমাজ এবং মানবেতার সেবক ডাঃ এম, এ মান্নান জ্ঞানে গুনে বিত্তে পরিপূর্ণ ছিলেন। এই মানুষটি সবাইকে বিনয়ী হতে নিলোর্ভ থাকতে মানুষকে বালবাসতে, সৎ চিন্তা ও সৎ কাজ দিয়ে সমাজে শান্তি রাখতে সেবা ও কল্যাণ কাজে ব্রতী হতে, জুলুম হত্যাচারের প্রতিবাদ কাজে ব্রতী হতে, জুলুম হত্যাচারের প্রতিবাদ করতে শিখিয়ে গেছেন।

জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে তিনি ছিলেন সবার জন্য সমান, গোষ্ঠিগত আভিজাত্য বোধ ও ধর্মীয় বৈষম্য উর্ধে থেকে সমাজ সংসারে ধনী নির্ধন উচু নিচুর ভেদাভেদকে তিনি অতিক্রম করেন। অতি সাধারণ মানুষ যারা সমাজের দৃষ্টিতে অস্পৃশ্য যাদের ছাড়া মাড়ালে জাতড় যায়। যাদের ছোয়া থেকে বিত্তবানেরা নিজেদের দূরত্বে রাখেন সেব অস্পৃশ্য অসহায় মানবেতর জীবন যাপনকারী মানুষগুলোর পাশে সেবক হিসাবে থাকতে ভালবাসতেন ডাঃ এম,এ মান্নান। তিনি ছিলেন সংবিধাণ প্রনেতা, সংবিধাণে স্বাক্ষরকারী বীর মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের  অন্যতম সংগঠক রাজনীতিবিদ সমাজ সেবক এবং একজন সফল চিকিৎসক আত্মমানবতার কল্যাণে সত্যিকার সেবকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পিছপা হননি। অসহায় মানুষের প্রতি ছিল তার অকৃত্রিম ভালোবাসা কে ফিস দিল কে দিল না সে খেয়াল তার ছিল না। তিনি প্রায় চিন্তা করতেন টাকা নেই বলে কি অসহায় মানুষ চিকিৎসা পাবে না? এছাড়াও রাজনীতিক কর্মীদের তিনি মাসের পর মাস বাসায় রেখে চিকিৎসা করেছেন, ঔষধ দিয়েছেন। যতদিন না পর্যন্ত কর্মী সুস্থ না হন, ততদিন রোগীকে তিনি বাসায় রেখে দিতেন। তার পরিবারকে তিনি গড়ে তোলেন সে মানসিকতায়। আত্ম মানবতায় তার পরিবার কর্মীদের সেবা শুশ্রুষা করেছেন কোনদিন বিরক্তি প্রকাশ করেননি।

এই পৃথিবীতে কিছু মানুষ তাদের কর্মের মাধ্যমে চির অমর হয়ে থাকেন। অর্থ যশের বুভুক্ষু না হয়ে মানুষের মনি কৌঠায় তারা ঠাই পান অতি সহজে। তিনি নিঃস্বার্থভাবে দেশ জাতি ও সমাজের সেবায় আত্মনিয়োগ করেছিলেন। যেখানে কল্যাণের কাজ, যেখানে সেবার কাজ, সেখানেই তিনি অকুণ্ঠাচিত্তে বিনা দ্বিধায় এগিয়ে গেছেন। মানব সেবায় অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত রেখে গেছেন এবং সমাজের কল্যাণে জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। সেবার এ ধরনের মনোভাব সম্পন্ন ব্যক্তিত্ব সমাজে আজ বিরল।

আমাদের ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য সেবার এ ধরনের দৃষ্টান্ত তুলে ধরা গেলে জাতির কল্যাণ বয়ে আসতে পারে। দৃঢ় চেতা মনোবল ও অমায়কি ব্যবহারে মুন্ত্রমুগ্ধের মত মানুষকে কাছে নিয়ে আসতেন। চলনে ও কথায় বার্তায় অহমিকা ছিল না বলেই তিন সকলের প্রিয়জন ছিলেন। নিজের কর্মকান্ডে প্রমাণ করে গেছেন সরল জীবন-যাপনের ও মানুষের প্রতি মমত্ববোধের মাধ্যমে চিরদিন নিজেকে জীবন্ত রাখা যায়। তাই আজও তিন জনগণের কাছে অমর হয়ে আছেন শুধুমাত্র তার কর্মকান্ডে। কিন্তু দুঃখের সংগে বলতে হয় যার হৃদয়ের প্রসারতায়, সেবায় ও দানে চট্টগ্রামের সামাজিক, রাজনৈতিক জীবন সঞ্জিবীত সেই মহৎ প্রাণ পুরুষ ডাঃ এম,এ মান্নানের স্মৃতি ধরে রাখার জন্য চট্টগ্রামের সংশ্লিষ্টরা কোন ব্যবস্থা করেননি। চট্টগ্রামের রাজনীতিক নেতাদের এই দীনতা পরবর্তী প্রজন্ম ক্ষমা করবে না।অাজ সে সকল  বীর পুরুষ অবমূল্যায়নের শীর্ষে।তারপরও ইতিহাসের পাতায় ডাঃ এম, এ মান্নান চির অম্লান, চির অক্ষয়।চলমান।

তথ্য সূত্র, বাঙালী জাতীয়তাবাদীর সংগ্রাম মুক্তিযুদ্ধে চট্টগ্রাম।

লেখক  : ডাঃ এম এ মান্নান এর জ্যেষ্ঠ পুত্র পারভেজ মান্নান।

Leave a Comment