আজ বৃহস্পতিবার। ১৬ই মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ২রা জ্যৈষ্ঠ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৭ই জিলকদ, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় সকাল ১১:৪৪

আত্মবিশ্বাস আর অধ্যবসায়

আত্মবিশ্বাস আর অধ্যবসায়
নিউজ টি শেয়ার করুন..

আত্মবিশ্বাস আর অধ্যবসায়,একই মায়ের পেটের দুই ভাইয়ে ন্যায়। একজন ব্যক্তিকে সফলের দিকে অগ্রসর করার মন্ত্র হল অধ্যবসায়।ইচ্ছাশক্তি অধ্যবসায় পালনে প্রেরণা যোগায় এবং একটি জ্বলন্ত ইচ্ছা মানুষকে অধ্যবসায়ী করে তোলে।
ইচ্ছাশক্তি এবং আকাঙ্ক্ষা একটি শক্তিশালী জোড়া, যা অধ্যবসায় গঠনে সহায়তা করে।

আমার ইচ্ছাশক্তিকে যদি আকাঙ্ক্ষা দ্বারা চিন্তা করি,তাহলে অধ্যবসায় পালনে ভূমিকা রাখবে। বেশীর ভাগ লোকেরা যারা জীবনে সফল হয়েছেন তারা তাদের ইচ্ছাগুলো বাস্তব করেছেন অধ্যবসায় দ্বারা, তাদের সফল হওয়ার পেছনে প্রচন্ড ইচ্ছা কাজ করছে,আর তারা চেষ্টা পেছনে দৌড় ক্লান্ত হয় নি। তাদের নেতিবাচক সকল দিক ঐ কাজে লাগিয়েছে।
বেশীর ভাগ লোক যারা তাদের ইচ্ছাগুলো বাস্তবে রূপান্তর করতে চেষ্টা করেন, তারা প্রথম চেষ্টায় ব্যর্থ হওয়ার পর ইচ্ছাগুলো পানিতে ফেলে দেন, এরা কখনই জয়ী হতে পারে না।

কারণ তারা জয়ী হতে চায়, অধ্যবসায়ী নন। খুব অল্প সংখ্যক লোকই এই “সাময়িক বাঁধা” অতিক্রম করে নিজের ইচ্ছাগুলোকে পূরণ করেন,আর এরাই সফল হন। তারা অধ্যবসায় পালন করে নিজেদের সাফল্য নিশ্চিত করেন এবং প্রমাণ করেন, যেকোন ইচ্ছাকে বাস্তবে রূপান্তর করা যায়।
যেমন , “কাঁচা লোহা থেকে যেমন ইস্পাত সৃষ্টি করা হয়”। একই রূপে অধ্যবসায়ের গুণ হল ইহা ব্যক্তির চরিত্রকে লোহা থেকে ইস্পাতে পরিণত করে। যা দ্বারা সকল সাময়িক বাঁধা, পরাজয় হার মানাতে সক্ষম হয়।কিন্তু আমারা আমাদের ধারণাগুলো,,,,,,,কিভাবে চিন্তা করি!!!!!
সকলের একটা ধারণা আমি কি পারব ? আমার দ্বারা হবে??? আমার মত অনেক ব্যক্তি উচ্চ পড়াশুনা করে বসে আছি !! আরো অনেক ব্যক্তি লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করে ক্ষতি সাধিত হয়েছে ।। আজ তারা অসহায়, আমার মত অনেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে কোন চাকরি পায়নি । অলস সময় পাড় করছেন । আমি কি পারব ??আমার দ্বারা কি হবে ??এভাবে প্রশ্ন করে নিজেকে ধ্বংস করছে ।

একজন ব্যক্তি এ কথা হয়তো ভুলে যায় যে আজ সফলতা অর্জন করেছে যারা, সে তো আমার মতই মানুষ । তার ও ত দুইটা পা, দুইটা চোখ, একটি মাথা, আমার মতই । সে যদি পারে তাহলে আমি পারবো না কেন ? ব্যর্থ যদি না আসে তাহলে সফলতা কিসের ? যারা সফল হয়েছে তারা সবাই ব্যর্থ হয়েছে আগে । সফলতার আরেক নাম ব্যর্থ । তুমি যদি চাও তাহলে সব করতে পারবে । তোমার মনে যদি জোর থাকে তাহলে কোন কিছুই তোমার কাছে অসম্ভব হবে না। যদি আত্মবিশ্বাস আর লড়াই করার ক্ষমতা থাকে তাহলে তুমিও পৌঁছে যাবে সফলতার দিকে ।

তোমার অবস্থা যতই খারাপ থাকুক, যতই অনুকূলে থাকুক, মনে রাখতে হবে আমার চেয়ে অনেক খারাপ অবস্থা বা প্রতিকূলে থেকে তারা আজ সাফল্যের স্থানে পৌঁছেছে । আমি পারবো, আমার দ্বারা-ই হবে, ইনশাল্লাহ । আমরা যদি কিছু সফল ব্যক্তির দিকে তাকাই প্রথমেই আসে বিশ্ব বিখ্যাত বিজ্ঞানী “স্টিফেন হকিং” । যে ছিল একজন বিশ্বের আলোড়ন সৃষ্টিকারী পদার্থ বিজ্ঞানী।। যিনি বাক-প্রতিবন্ধী । যিনি বিগ-ব্যাং, ব্ল্যাক-হোল, ইউনিভার্সেল এর মত অনেক অজানা কথা আমাদের জানিয়েছেন । তার জীবন বৃত্তান্ত দেখলে কারও বিশ্বাসই হবে না যে, তিনি কিনা এমন বিজ্ঞানী ।

যার ১১ বছর বয়সে শরীরে এমন মারাত্ত্বক নিউরণ রোগ ধরা পড়ে, যা আজও পর্যন্ত কোনো ঔষধ বা চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি । যে কিনা নিজের খাবার দাবার নিজের পোশাক পায়খানা প্রসাব পর্যন্ত করতে পারত না । এমনকি নিজের হাতে টুকু মোঠ করতে পারত না, দাঁড়াতে পারত না, সোজা হয়ে বসতে পারত না । অন্যের সহযোগিতায় চলাফেরা করতে হতো । সে কি করে আজ বিশ্বের সবচেয়ে বড় বিজ্ঞানী হয় ? তার ছিল নিজের প্রতি আত্মবিশ্বাস ও অধ্যাবসায় । তাই সে পেড়েছে ।


ইতিহাস দেখলে আরও অনেকের কথা মনে হয়ে যায় , এপিজে আব্দুল কালাম । যিনি ভারতের প্রেসিডেন্ট ছিলেন এবং পরমানু বিজ্ঞানী ছিলেন ।অতি সাধারণ পরিবারের সন্তান তিনি। অামেরিকার প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা, আব্রাহাম লিংকন । যারা কি ছিলেন এবং কি হয়ে গেলেন । শুধুমাত্র তাদের আত্নবিশ্বাস ও অধ্যাবসায় তাদেরকে সাফল্যের উচ্চ শিখরে পৌছে দিয়েছে ।

ভারতের বর্তমান প্রধান মন্ত্রী নরেদ্র মোদি, যিনি রাস্তায় রাস্তায় চা বিক্রি করতেন। তিনি আজ প্রায় একশ কোটি মানুষের নেতা।কিভাবে হল, একটু চিন্তা করার বিষয়। তারা যদি পাড়ে,তাহলে আমি কেনও!!!!!!! পাড়ব না????
হ্যাঁ, আমার দাড়াঁতেই হবে,আমিও পাড়বই।।।
অধ্যবসায় আর ইচ্ছা শক্তিকে লালন করতেই হবে।
তাহলেই সম্ভব হবে সফলতা অর্জন করা।

লেখক : আসাদুজ্জামান নূর
প্রতিষ্ঠাতা ও অধ্যক্ষ, ভিক্টোরিয়া মডেল স্কুল ।
পরিচালক: মাধবদী সিটি স্কুল এন্ড কলেজ ।

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর