রাকিব আল হাসান>>
প্রতিটি শিশুর জন্ম হয় ভিন্ন কিছু গুন নিয়ে কখনো সেটা প্রকাশ পায়, কখনো না। এর পিছনে সবচেয়ে বড় ভুমিকা পালন করে তার শৈশব – কৈশোর তথা তার বয়:সন্ধিকাল সময়। আবার কখনও সমাজ – তার বেড়ে উঠার পরিবেশ। এ কথা চিরায়ত সত্য যে একটা শিশু তার বাবা-মায়ের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ। মায়ের নাড়ি ছেড়া ধন, বাবা’র আবেগ, ভালোবাসা সকল কিছু নিয়েই একটি শিশু। অামরা বইয়ের পাতায় পড়ি, ঘুমিয়ে আছে শিশুরই অন্তরে। সে কথা শুধু পঠন বা শ্রবনেই বোধ করি আজকাল সীমাবদ্ধ আছে।
এখন হরহামেশাই শুনি সন্তান দ্বারা বাবা কিংবা মায়ের প্রাননাশ। ধরে নেওয়া যাক এটি সত্যি, কিন্তু কোন শিশু কি হত্যাকারী হয়ে জন্ম নিয়ে থাকে। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সবার দায়িত্ব একটি শিশুকে পরিপূর্ণ মানুষরুপে সৃষ্টি করা। যখন আমরা আমাদের দায়িত্ব যথাযতভাবে পালনে ব্যর্থ হই তখনই এমন অনাকাঙ্খিত ঘটনা ঘটে থাকে। যার অন্যতম হলো কিশোর অপরাধ। যার জন্য কি অামরা কখনো পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্রকে দায়ী করি?
কিশোর অপরাধের দিকে তাকালে বিস্মিত না হয়ে উপায় নেই। এ অপরাধ এখন জ্যামিতিক হারে বাড়ছে। চোরাকারবারী, হত্যা, গুম, চুরি থেকে শুরু করে তারা এখন প্রায় সকল শ্রেনীর অপরাধের সাথে যুক্ত হয়ে যাচ্ছে। যার কারণ স্বরুপ বলা যায় অতিরিক্ত অাদর – শাষণ, অপরিপক্ব সম্পর্ক, পারিবারিক কলহ, অার্থিক অসচ্ছলতা, হতাশা, সুশিক্ষার অভাব,পশ্চিমা সংস্কৃতি, অসুস্থ বিনোদন, মাদক, সামাজিক নীতি ও নৈতিকতার অবক্ষয়।
পারিবারিক – সামাজিক কলহ ক্রমশ বেড়েই চলছে। পারিবারিক ভাঙ্গন তো এখন চিরায়ত সত্যে রুপ নিবে। শুধু যে দ্রারিদ্র্যতার অভাবে এ অপরাধ হচ্ছে এমন নয়, বিত্তশালী পরিবারের সন্তানেরাও এ অপরাধের বাহিরে নয়। কিশোর অপরাধের অন্যতম কারণ হলো মাদক। তারা অাজ ভয়াবহ ভাবে এ রোগে অাক্রান্ত। প্রথমত, শুধু একবার টেষ্ট করার জন্য নিয়েই আর ফেরা হয় না। কিংবা আধুনিক সমাজের দোহাই দিয়ে অনেক এ পথে চলে অাসে। এ বয়সে তাদের কাছে এ বিষয়ে পুর্ণাঙ্গ জ্ঞান থাকে না। কিংবা যা থাকে তার কিছু ভুল/ সঠিক। তারা অনেকটা বিপরীতমূখী অাকর্ষণে জড়িয়ে পড়ে।
image.png
এখনই যদি এ ব্যাধির প্রতিকার না করা হয় তবে অদূর ভবিষ্যতে এটি একটি দুরারোগ্য ব্যাধিতে পরিনত হবে। সন্তানকে নৈতিক – মানবিক শিক্ষা দেওয়া প্রয়োজন। সন্তানের যে অধিকারগুলো রয়েছে তা যদি পূর্ণ করা প্রয়োজন। কর্মমূখী বাবা – মা কে অবশ্যই তাদের সন্তানকে সময় দিতে হবে। তবেই এ ব্যাধি থেকে সমাজ মুক্তি পাবে। পাঠ্য বইয়ের লেখাগুলো বাস্তবতার আলো দেখবে।