আজ শুক্রবার। ২৯শে মার্চ, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ১৫ই চৈত্র, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ১৮ই রমজান, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় রাত ৪:০০

আমন ধানের বাম্পার ফলন : দামে হতাশ কৃষক

আমন ধানের বাম্পার ফলন : দামে হতাশ কৃষক
নিউজ টি শেয়ার করুন..

হেমন্তের মৃদু বাতাসে সোনালি শীষে দোল খাচ্ছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠে নতুন ফসলের ঘ্রাণ ছড়াচ্ছে পাকা আমন ধান। চলতি মৌসুমের ধান ঘরে তুলতে কাটা-মাড়াইয়ের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত কৃষক-কৃষাণীরা। ক’দিন পরেই নতুন ধানে ভরে উঠবে তাদের গোলা।

এবছর আবহাওয়া অনুকূলে ছিল, ফলন হয়েছে প্রত্যাশার চেয়েও বেশি। প্রতি বিঘা জমিতে ১৮ থেকে ২০ মণ ধান পাওয়া যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। মাঠের প্রায় ৯০ ভাগ আমন ধান পেকে গেছে। এরই মধ্যে শুরু হয়েছে ধান কাটার কাজও। তবে, আশানুরূপ দাম পাওয়া নিয়ে এখনো শঙ্কা রয়েছে কৃষকদের মনে।

মহাদেবপুর উপজেলার মাতাজীহাট এলাকার একাধিক কৃষক বলেন, এবছর আমনের ফলন অনেক ভালো। এখন ফসল ঘরে তোলার ব্যস্ততা। তবে, ধানের দাম নিয়ে আমরা চরম হতাশ। প্রতিবছর সরকার ঘোষণা দেয় ধান বেশি দামে কিনবে। কিন্তু, ধান কাটার পর সেই দাম আর পাওয়া যায় না। বাজারে আমাদের কম দামেই ধান বিক্রি করতে হয়। তাছাড়া, অনেক কৃষক সরাসরি সরকারকে ধান দিতেও পারে না।

তারা বলেন, ধান লাগানো থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত প্রতি বিঘা জমিতে নয় থেকে ১০ হাজার টাকা খরচ হয়। কিন্তু, বাজারে ধানের মূল্য ৬শ’ থেকে সর্বোচ্চ ৭শ’ টাকা মণ। প্রতি বিঘা জমিতে যদি ১৮ মণ ধান হয়, তাহলে সেই ধান বেচে আমরা পাবো মাত্র ১২ হাজার টাকা।

নওগাঁ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, এবছর জেলায় ১ লাখ ৬৭ হাজার হেক্টর জমিতে আমন চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। চাষ হয়েছে ১ লাখ ৯৭ হাজার হেক্টর জমিতে। আবহাওয়া ভালো থাকায় ফলনও হয়েছে ভালো।

গত ৯ নভেম্বর নওগাঁর নিয়ামতপুরে আসেন খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার। সেসময় ধানক্ষেত পরিদর্শন করে তিনি জানান, এর মধ্যে যদি প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলা করতে না হয়, তাহলে আমনের বাম্পার ফলন ঘরে উঠবে। কৃষকদের উৎপাদিত ফসলে লাভবান করতে অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে প্রথমবারের মতো সরকারিভাবে ছয় লাখ মেট্রিক টন ধান কেনার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২৬ টাকা কেজি দরে ২০ নভেম্বর থেকে সারা দেশে একযোগে সরাসরি প্রকৃত চাষিদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহ শুরু হবে, চলবে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত।

তিনি আরও জানান, সারা দেশে এবার আমনের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় দেড় কোটি মেট্রিক টন। বাম্পার ফলন হলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। সেদিক খেয়াল রেখেই সরকারি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ধানের পাশাপাশি সরকারিভাবে সাড়ে তিন লাখ মেট্রিক টন সেদ্ধ চাল ও ৫০ লাখ মেট্রিক টন আতপ চালও সংগ্রহ করা হবে।

সরকারি গুদামে ধান-চাল সরবরাহে কোনোভাবেই মধ্যস্বত্বভোগী, দালালচক্র কিংবা দলীয় নেতা স্থান পাবে না বলেও প্রতিশ্রুতি দেন মন্ত্রী। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই সরাসরি খাদ্যগুদামে ধান সরবরাহ করতে কৃষকদের প্রতি আহবান জানান তিনি।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর