“মানুষ মানুষের জন্য, জীবন জীবনের জন্য” জগদ্বিখ্যাত শিল্পী ভুপেন হাজারিকার এ গানের মর্মকথায় অনেকে ভালোবাসা খুঁজে পেয়েছেন। ভালোবাসা শব্দটির নানা অর্থ। নানা ব্যবহার। বর্তমান সময়ে আমাদের সমাজে ভালোবাসা বলতে সামনে চলে আসে তরুণ-তরুণীর ভালোবাসার কথা। সন্তান আর পিতা-মাতার ভালোবাসার কথাও কেউ কেউ সামনে নিয়ে আসেন। তবে এর বাইরেও মানুষের মাঝে এক অপার্থিব ভালোবাসা রয়েছে। যেখানে নেই কোনো চাওয়া পাওয়া, টাকার মোহ কিংবা কোনো ধরনের স্বার্থ। এমন একটি ভালোবাসার নাম ‘রক্ত দান’।
তাই বলা যায় অনেকেই রক্ত দান করা নিয়ে অহেতুক ভয় পান। রক্ত দিলে মনে করেন যে তার শরীরে হয়ত কোন সমস্যা হবে। কিন্তু এটি যে একদমই নিছক ভাবনা, নিচে কিছু তথ্য উপাত্ত দিয়ে সেটা প্রমান করা হলো। কেন রক্ত দানের পরেও আপনি সম্পূর্ন সুস্থ থাকবেন,সেটিই দেখে নিন।
একজন পুরুষের শরীরের ওজনের প্রতি কেজিতে ৭৬ মিলি (মিলি-লিটার) রক্ত থাকে এবং একজন মহিলার শরীরের ওজনের প্রতি কেজিতে ৬৬ মিলি রক্ত থাকে……
কিন্তু একজন মানুষের শরীরে প্রতি কেজিতে প্রয়োজন ৫০ মিলি রক্ত… তাহলে পুরুষের শরীরে রয়েছে প্রতি কেজিতে অতিরিক্ত (৭৬-৫০=) ২৬ মিলি রক্ত এবং মহিলার শরীরে রয়েছে প্রতি কেজিতে (৬৬-৫০=) ১৬ মিলি অতিরিক্ত রক্ত…
রক্তদান করলে এই অতিরিক্ত রক্ত থেকে প্রতি কেজিতে ৮ মিলি রক্ত নেয়া হয়…
অর্থাৎ রক্তদানের পরেও পুরুষের শরীরে অতিরিক্ত রক্ত থাকছে প্রতি কেজিতে (২৬-৮= ) ১৮ মিলি রক্ত এবং মহিলার শরীরে (১৬-৮ = ) ৮ মিলি রক্ত… হ্যাঁ, অতিরিক্ত রক্ত…
মানে রক্তদানের পরেও ৫০ কেজি ওজনের একজন পুরুষ রক্তদাতা এবং মহিলা রক্তদাতার শরীরে যথাক্রমে থাকছে অতিরিক্ত (৫০ x ১৮ = ) ৯০০ মিলি রক্ত এবং (৫০ x ৮ = ) ৪০০ মিলি রক্ত…
সুতরাং রক্তদানের পর আপনি রক্তশূন্যতায় মরে যাবেন না কনফার্ম কারন রক্তদানের পরেও প্রয়োজনীয় রক্তের থেকেও ‘অনেক’ বেশি পরিমান রক্ত আপনার শরীরে থাকছে…
একজন ৫০ কেজি ওজনের মানুষ দুশ্চিন্তামুক্ত ভাবে খুব সহজেই রক্তদান করতে পারেন… রক্তদানের পর ২০ মিনিট বিশ্রাম নিবেন, পরবর্তী ২৪ ঘন্টা প্রচুর পরিমানে পানি খাবেন… ব্যাস, আর কিছু লাগবে না…
৫০ কেজি ওজন হওয়া সত্ত্বেও যারা এতদিন ভয়ে রক্তদান করেননি, এবার নির্ভয়ে রক্তদান করে ফেলুন ।
লেখক : সাজ্জাদ হোসেন
শিক্ষার্থী ও ইউটিউবার