ফেনীর সোনাগাজী ইসলামিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির পরিবারের দুঃসময়ে পাশে ছিলেন আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।
শনিবার হাসপাতালে ভর্তি থেকে শুরু করে বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দাফন পর্যন্ত পরিবারের পাশে থেকে চিকিৎসা ব্যবস্থা, লাশের সুরতহাল সব কাজের তদারকি করেন তিনি।
গত ২৭ মার্চ অধ্যক্ষ সিরাজ-উদ-দৌলার বিরুদ্ধে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে মামলা করেন নুসরাতের মা।
নুসরাতের স্বজনদের অভিযোগ, মামলা প্রত্যাহারে রাজি না হওয়ায় অধ্যক্ষের পক্ষের লোকজন গত শনিবার সোনাগাজী ইসলামিয়া ফাজিল মাদ্রাসা কেন্দ্রে নুসরাতের গায়ে আগুন ঢেলে দেয়। এতে তার শরীরের ৮৫ শতাংশ পুড়ে যায়। পরে নুসরাতকে উদ্ধার করে স্বজনরা প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠান। এরপর সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়ার পর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়।
ঢাকায় আনার পরপরই হাসপাতালে ছুটে যান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে তিনি সেখানে অবস্থান করে রাফির চিকিৎসার ব্যবস্থার তদারকি এবং পরিবার ন্যায়ে বিচার পাবে বলে আশ্বস্ত করেন। এসময় তার সঙ্গে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও সোনাগাজী উপজেলা নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন মাহমুদ লিপ্টন সঙ্গে ছিলেন।
গতকাল রাতে চিকিৎসক যখন রাফিকে মৃত্যু ঘোষণা করেন সে সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। পরে সর্বশেষ আজ সকালে আলাউদ্দিন নাসিম ঢাকা মেডিকেলে পৌঁছালে নুসরাতের বাবা একেএম মুসা আলাউদ্দিন তাকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এসময় তিনি তাকে শান্ত্বনা দিয়ে বলেন, অপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নির্দেশ দিয়েছেন। কোন অপরাধীই পার পাবে না। সর্বোচ্চ শাস্তি হবেই। পরে তার উপস্থিতিতে রাফির লাশের সুরতহাল সম্পন্ন হয়, সুরতাহাল রিপোর্ট প্রস্তুত এবং গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যান। সন্ধ্যার দিকে নুসরাত জাহান রাফির জানাজায় অংশ নিতে হাজারো মানুষের ঢল নেমেছে। স্থানীয় ও বিভিন্ন জেলার হাজারো মানুষ জানাজায় অংশ নেন।
এসময় আলাউদ্দিন নাসিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নুসরাতের হত্যাকারীদের বিচারের আওতায় আনতে এবং শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে নির্দেশ দিয়েছেন। নুসরাতের মর্মান্তিক মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন। যে সব অপরাধী ধরা পড়েনি, তাদের ধরতে ফেনী জেলা পুলিশ প্রশাসনকে নিদের্শনা দিয়েছেন। রাফির পরিবারের পাশে প্রধানমন্ত্রী আছেন, আওয়ামী লীগ আছে। অপরাধী যেই হোক শাস্তি পেতেই হবে।