আজ বৃহস্পতিবার। ৩০শে নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ। ১৫ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ১৫ই জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় বিকাল ৫:৫৫

বিনোদিয়ায় অন্যরকম একটা দিন

বিনোদিয়ায় অন্যরকম একটা দিন
নিউজ টি শেয়ার করুন..

মো. শাহজাহান হোসেন :

ফাগুনের শুরুতে বসন্তোৎসব যখন বাসন্তী রঙে রাঙিয়ে গেল ঠিক তার পরেই খুবির গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনে আয়োজন করা হয় এক প্রীতি শিক্ষাসফর।গন্তব্যস্থল যশোর বিনোদিয়া ফ্যামিলি পার্ক।দিনটি ছিল ১৬ ফেব্রুয়ারি।

স্নিগ্ধ সকাল।ক্যাম্পাসে চারিদিক গাছে গাছে কচি সবুজ পাতার বয়েছে হিল্লোল।সকালের হালকা উষ্ণ শীত।এমনই মুহূর্তে একে একে বিভিন্ন হল ও বাহির থেকে শিক্ষার্থীরা এসে জড়ো হলো ক্যাম্পাসের হাদী চত্বরে।মুটোফোন ও ক্যামেরার শাটারের ক্লিকের শব্দ।ঝটপট এসাথে সবাই ছবি তুলে এমসিজে শব্দে চিল করে দুটি বাসে উঠে পড়ে শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক পেরিয়ে জিরো পয়েন্ট পার হয়ে যশোর অভিমুখে দৌড় শুরু করল বাস।পথিমধ্যে কিছুক্ষণ থেমে দুই বাসের সবাই একসাথে সকালের নাস্তা সেরে নিল। আবার যাত্রা শুরু করল বাস। চলন্ত বাসে শিক্ষার্থীদের হইচই,সেলফি তেলা,গানের তালে নাচ আর শিক্ষার্থীদের সাথে শিক্ষকদের অংশগ্রহন যাত্রাকে আরো প্রাণবন্ত করে তুলেছিল।
বেলা ১১টায় পৌছে গেল জনাকীর্ণ এক উৎসব মুখর পরিবেশ বিনোদিয়া পার্কে। প্রধান ফটক পেরোতেই ডানে দেখা মিলল রুপকথার সেই জলপরীর।কৃত্রিমভাবে তৈরী এ জলপরী নিশ্চয় মনে করিয়ে দেয় চাঁদনী রাতে দাদি নানিদের সেসব ঘুমপড়ানির গল্পের কথা।
আরো একটু সামনে রয়েছে মিনি চিড়িয়াখানা।এখানে দেখা যায়,সুন্দরবনের চিত্রা হরিণ,মেছো বাঘ,বন বিড়াল,ময়ুর, ভাল্লুক সহ আরো কিছু প্রাণী। এছাড়া রয়েছে ছোটদের জন্য মিনি ট্রেন। সেকেলের রেডিও এবং মুক্তিযুদ্ধ আমলের কিছু জিনিস নিয়ে পার্কের মধ্যে আছে ছোট একটি জাদুঘর। তার পাশে আছি কৃত্রিম লেক। এবং পার্কের চারিপাশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা বিভিন্ন কটেজ।
অবশ্যই শিক্ষার্থীরা এর আগে থেকে বার্ষিক সাংস্কৃতিক সপ্তাহের আয়োজন টা শেষ করে গান,কবিতা,উপস্থিত বক্তৃতা,বাংলা ও ইংরেজি নিউজ প্রেজেন্টেশন, দাবা,ক্যারম এবং টেবিল টেনিস খেলে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে। এবং এসব প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহনকারী জয়ী শিক্ষার্থীদের ফলাফল জানিয়ে দেয়া হয়।কিন্তুু পুরস্কার বিতরন সেশন টা শিক্ষাসফরে হবে জানতে পেরে আরো প্রাণবন্ত করেছিল পুরো দিনটি।
দুপুরের খাবার শেষে পুরস্কার বিতরন করা হয় জয়ী শিক্ষার্থীদের মাঝে।এরপরে ছিল র্য্যাফেল ড্র যা মুল অনুষ্ঠানে চিত্তাকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু।কে হবে বিজয়ী?কে হবে বিজয়ী? এমনসব কৌতুহল উদ্দীপক কথায় পুরো সময়টা মাতিয়ে রেখেছিল সাংবাদিকতার শিক্ষক ছোটন দেবনাথ।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের সহকারী প্রফেসর মামুন অর রশিদ স্যার বলেন,এবারে পিকনিক গতবারের তুলনায় একদমই আলাদা ছিল।শিক্ষক এবং শিক্ষার্থীদের একটি মিলন – মেলা ছিল এটি। ৪ টি ব্যাচের শিক্ষার্থী এবং ৬ জন শিক্ষকের একসাথে হওয়ার অনন্যা একটি বিষয় ছিল।একসাথে যাওয়া- আসা এবং খাওয়া-দাওয়ার ফলে উভয়ে পারস্পারিক বন্ধনটা আরো সুদৃঢ় হয়েছে বলে আমি মনে করি।এটা আমাদের সংস্কৃতিরই একটি বড় অংশ।যা আমাদের মননকে আরো সমৃদ্ধ করে দেয়।
এরআগে হাড়িভাঙা ও কপালে টিপ পরানো পর্বটি ছিল যতেষ্ট মজার। সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শিহাব উদ্দীন বলেন,একদিনের এই সফরটি ছিল খুব মজার।একঘেয়েমি লেখাপড়ার ক্লান্তি দূর করতে এমন যায়গায় মাঝেমাঝে আমাদের আসা উচিত।
দিন শেষে পড়ন্ত বিকালে রওনা দিলাম ক্যাম্পাস অভিমুখে।স্মৃতিময় হয়ে থাকে এধরনের দিন গুলো।অনুপ্রেরণা যোগায় নতুন কিছু করার।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর