আজ শনিবার। ২০শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৭ই বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ১০ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় দুপুর ১:২৮

সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারে শীর্ষে আমলারা

সুইস ব্যাংকে টাকা পাচারে শীর্ষে আমলারা
নিউজ টি শেয়ার করুন..

সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশিদের টাকা পাঠানোর নতুন রেকর্ড হয়েছে। বাংলাদেশিদের মোট আমানত দাঁড়িয়েছে ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে গত ১২ মাসেই জমা হয়েছে ২ হাজার ৯২৮ কোটি টাকা। সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশের এই বিপুল অর্থ নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে কারা টাকা পাঠাচ্ছে? গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সুইজারল্যান্ডের ন্যাশনাল ব্যাংক বার্ষিক প্রতিবেদনের ডাটা অংশে বাংলাদেশ থেকে টাকা পাঠানোর ভয়াবহ তথ্য উঠে এসেছে। উল্লখ্য যে, সুইস ব্যাংকে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের ব্যক্তিরা টাকা জমা রাখে এবং সুইস ব্যাংকে এই টাকা রাখাটাকে অনেকে নিরাপদ মনে করে। প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের ডিসেম্বরে সুইজারল্যান্ডে বাংলাদেশি আমানত দাঁড়িয়েছে ৮৭ কোটি ১১ লাখ সুইস ফ্রাঙ্ক যা বাংলাদেশি টাকায় ৮ হাজার ২৭৫ কোটি টাকা। প্রশ্ন উঠেছে এই টাকা পাচার করছে কারা? অনেকেই মনে করেন ব্যবসায়ীরা বা রাজনীতিবিদরা হয়তো টাকা পাঠাচ্ছে। কিন্তু অনুসন্ধানে দেখা গেছে যে, সুইস ব্যাংকে গত এক বছরে যে টাকা পাঠানো হয়েছে তার সিংহভাগই আমলাদের নিয়ন্ত্রনে। আমলারাই বিদেশে অর্থ পাচারের শীর্ষে রয়েছেন।

শুধু অর্থ পাচার নয়, বিদেশে অভিবাসন গ্রহণ, বাড়ি-গাড়ি ইত্যাদি ক্রয়েও আমলারা শীর্ষে রয়েছেন বলে জানা গেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে যে, গত এক বছরে অবসর গ্রহণ করা অন্তত পাঁচজন সচিব সুইস ব্যাংকে বাংলাদেশি টাকায় প্রায় এক হাজার কোটি টাকা জমা দিয়েছেন। এরা সবাই প্রভাবশালী সচিব ছিলেন। এদের মধ্যে একজন চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছিলেন এক বছরের জন্য। এখন তিনি অধিকাংশ সময় দেশের বাইরে থাকছেন। আরেকজন সচিব চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ পেয়েছেন। তিনি তার পরিবার কানাডায় রাখেন। কিন্তু সুইস ব্যাংকে তিনি টাকা পাঠিয়েছেন বলে নিশ্চিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছাড়াও আরও তিনজন আমলার সুইস ব্যাংকে টাকা পাঠানোর খবর জানা গেছে। যদিও কারা কারা এই টাকার মালিক সুইস ব্যাংক সে সম্পর্কে তথ্য জানায়নি। তবে বিভিন্ন সূত্রগুলো বাংলাদেশিদের মধ্যে যারা সুইস ব্যাংকে টাকা পাঠিয়েছে সে তথ্য নিশ্চিত করেছে।

গত এক বছরে সুইস ব্যাংকে টাকা পাঠানোর ক্ষেত্রে আমলাদের পাশাপাশি বিরোধী রাজনীতিবিদদের নামকও দেখা গেছে। সুইস ব্যাংকে দীর্ঘদিন ধরে তারেক জিয়ার একাউন্ট রয়েছে এবং নির্বাচনের সময় বা কমিটি গঠনের যে লেনদেনগুলো হয়, সেই লেনদেনগুলো সুইস ব্যাংকেই জমা হয় বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া বিএনপির প্রভাবশালী নেতা আবদুল আউয়াল মিন্টু এবং তার পরিবারেরও সুইস ব্যাংকে অ্যাকাউন্ট রয়েছে। তবে গত এক বছরে বিরোধী রাজনীতিবিদদের টাকা পাঠানো আমলাদের তুলনায় অনেক কম। ক্ষমতাসীন দলের দুই-একজনেরও সুইস ব্যাংকে টাকা রয়েছে বলে জানা গেছে। বিভিন্ন সূত্রগুলো বলছে, অন্তত দুজন সাবেক মন্ত্রীর সুইস ব্যাংকে একাউন্ট রয়েছে। এদের মধ্যে একজন ২০০৯ সালের মন্ত্রিসভার গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে ছিলেন। অন্যজন দুই দফায় দুটি মন্ত্রণালয়ের প্রভাবশালী মন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সম্প্রতি সরকার বিদেশ থেকে পাচারকৃত টাকা ফেরত আনার সুযোগ করে দিয়েছেন। কিন্তু অর্থনীতি বিশ্লেষকরা বলছেন, এই সুযোগ যারা টাকা পাচার করেছেন তারা কাজে এমন সম্ভাবনা খুবই কম।

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর