সীমার মাঝে, অসীম তুমি বাজাও আপন সুর।আমার মধ্যে তোমার প্রকাশ তাই এত মধুর।(গীতাঞ্জলি)
শুভ করোনময় বড়দিন। এ বছরই ২৮০ কোটি খ্রিস্টান এমন এক দুর্যোগময় বড়দিন উদযাপন করছেন। সাধারণত আমরা মনেকরি বড়দিনের আনন্দ–উৎসব শুধু খ্রিস্টিয় সমাজের জন্য। বস্তুত এ উৎসব সর্বজনীন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বলেছেন, ‘প্রতিদিনমানুষ ক্ষুদ্র, দীন, একাকী কিন্তু উৎসবের দিনে মানুষ বৃহৎ, সেদিন সে সমস্ত মানুষের সঙ্গে একত্র হইয়া বৃহৎ, সেদিন সে সমস্তমনুষ্যত্বের শক্তি অনুভব করিয়া মহৎ।’
৩২৫ খ্রিস্টাব্দ হতে শুরু করে প্রতি বছর গোটা বিশ্বের খ্রিস্টবিশ্বাসীরা ২৫ ডিসেম্বর যিশুখ্রিস্টের জন্মতিথি পালন করে আসছেন।আধ্যাত্মিক তাৎপর্যের বিবেচনায় খ্রিস্টের পুনরুত্থান উৎসবই সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ এবং মন্ডলীর শুরু থেকে যিশুখ্রিস্টেরপুনরুত্থানপর্ব বা ইস্টারই সবচাইতে বড় পর্ব হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। তবে বর্তমানে খ্রিস্টমাস বা বড়দিনটিই বেশি জাঁকজমকও আড়ম্বরের সঙ্গে পালিত হয়। যিশু খ্রিস্টকে খ্রিস্ট বিশ্বাসীরা মানবজাতির কাছে ঈশ্বরের প্রতিশ্রুত ত্রাণকর্তা বা মুক্তিদাতা বলেবিশ্বাস করেন। তাই তাঁর জন্মদিন পালন তাদের কাছে গুরুত্বপূর্ণ।
আজ খ্রিষ্টান ধর্মালম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব।
সাধারণভাবে খ্রিস্টান ধর্মালম্বীর কিছু সংখ্যাগোষ্ঠী বিশ্বাস করে এই দিনেই ঈশ্বরপুত্র যীশু খ্রীষ্টের জন্ম হয়েছিল। এই উপলক্ষেইপ্রতি বছর ২৫শে ডিসেম্বর তারিখটিকে যীশুর জন্ম জয়ন্তী হিসেবে পালন করা হয়। তবে এখনো যিশুখ্রিস্টের ঐতিহাসিকঐতিহাসিক সত্যতা সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের মধ্যে মতপার্থক্য রয়েছে।এই দিনটির ঠিক নয় মাস পরে আসলে যিশুখ্রিস্টের জন্ম হয়।তারা এই দিনটিকে যিশুখ্রিস্টের পৃথিবীতে আগমনের দিন হিসেবে উদযাপন করার পক্ষপাতী। আবার অনেকে ২৫শে ডিসেম্বরতারিখকে নিতান্তই একটি ঐতিহাসিক রোমান উৎসবের দিন বলে মনে করেন।
তবে ঐতিহাসিক গুরুত্ব যাই হোক না কেন পৃথিবী জুড়ে এই দিনটিকে ছুটির দিন হিসেবে পালন করা হয় এবং খ্রিস্ট ধর্মের মানুষএই দিন থেকে শুরু করে ১২ দিন ব্যাপী ক্রিসমাসটাইড উৎসব পালন করে।
ইতিহাস কিংবা শব্দগত ব্যুৎপত্তি যাই হোক না কেন কোনো উৎসবের প্রকৃত প্রাণ লুকিয়ে থাকে সেই উৎসবটির উদযাপনের মধ্যে।বিশ্বজুড়ে ২৫সে ডিসেম্বর তারিখে দিনটির ব্যাপক ভাবে উদযাপন বিশেষভাবে তাৎপর্যপূর্ণ। পৃথিবী জুড়ে বিভিন্ন জায়গায় এইদিননানা অনুষ্ঠান পালন করা হয়ে থাকে।
কোথাও মহাসমারোহে পালন করা হয় যীশুর জন্মোৎসব, আবার কোথাও বা নানা জাঁকজমকপূর্ণ কুচকাওয়াজের আয়োজন করাহয়। বিশ্বজুড়ে সকল গির্জা গুলিকে অতি সুন্দর সাজে সাজিয়ে তোলা হয়। কোথায় আবার আনুষ্ঠানিকভাবে আত্মীয়–পরিজনএর মধ্যে চলে উপহার দেওয়া নেওয়া। মানুষ এই দিনে যিশুখ্রিস্টের জন্ম দিবস উপলক্ষে কেক কাটে; ভোজসভার আয়োজন হয়পাশ্চাত্য বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায়।
লেখক : তমা হালদার,শিক্ষার্থী।