আজ বুধবার। ১৭ই এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ। ৪ঠা বৈশাখ, ১৪৩১ বঙ্গাব্দ। ৭ই শাওয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় রাত ৩:০১

বিদ্যুৎ-দ্রব্যমূল্য নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে অসন্তোষ, মন্ত্রীদের প্রকাশ্য সমালোচনা

বিদ্যুৎ-দ্রব্যমূল্য নিয়ে আওয়ামী লীগের তৃণমূলে অসন্তোষ, মন্ত্রীদের প্রকাশ্য সমালোচনা
নিউজ টি শেয়ার করুন..

তৃণমূল আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ক্রমশ ক্ষুব্ধ হয়ে উঠছেন। ভয়াবহ লোডশেডিং, দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতির কারণে তাদেরকে জনগণের কাছ থেকে বিরূপ সমালোচনা শুনতে হচ্ছে। আর এই সমালোচনার জন্য তারা বিভিন্ন রকম সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে বাধাগ্রস্ত হচ্ছেন। আর এ নিয়ে কিছু মন্ত্রীর ব্যাপারে তাদের ক্ষোভ এখন প্রকাশ্য রূপ নিতে শুরু করেছে। যে কোনো আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে গেলেই দেখা যায় যে, আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা প্রকাশ্যে কিছু মন্ত্রীর সমালোচনা করছেন। সেই সমস্ত মন্ত্রীদের কারণেই সরকারের অবস্থা এখন চাপের মধ্যে বলে তারা মনে করছেন।

উল্লেখ্য যে, গত কিছুদিন ধরেই সারাদেশে লোডশেডিং ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী গত রোববার সংবাদ সম্মেলন করে বলেছেন যে, বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উন্নতি হতে আরও দুই-তিন সপ্তাহ লাগবে। আবার অন্যদিকে বিদ্যুতে সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, ডলার সংকট যতদিন থাকবে ততদিন বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে না। কিন্তু বিদ্যুৎ পরিস্থিতির এই অসহনীয় অবস্থার জন্য আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী এবং জ্বালানী ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টাকে দায়ী করছেন। তারা মনে করছেন যে, সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন না করার কারণে এবং আওয়ামী লীগ ঘোষিত যে নির্বাচনী ইশতেহার তার যথাযথ বাস্তবায়ন না করার কারণেই আজকে নির্বাচনের আগে সরকারকে সংকটে পড়তে হচ্ছে।

উল্লেখ্য, আওয়ামী লীগের একাধিক নেতা বলেছেন যে, প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করছেন। তিনি দেশকে একটা সম্মানজনক জায়গায় নিয়ে গেছেন। কিন্তু কিছু কিছু মন্ত্রীর ব্যর্থতা ও দায়িত্বহীনতার কারণে এখন সরকার জনগণের সমালোচনার মুখে পড়ছে। বিদ্যুৎ নিয়ে যে অসহনীয় পরিস্থিতি তৈরী হয়েছে তা অনতিবিলম্বে যদি সমাধান না করা যায় তাহলে সামনে জনগণ ক্ষুব্ধ হয়ে পড়তে পারে বলে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন। ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামী লীগের একজন নেতা বলেছেন যে, মানুষের কাছে কথা বলা যায় না। মানুষ এখন বিভিন্নভাবে বিদ্যুৎ নিয়ে সরকারের সমালোচনা করে। এই সমালোচনাটা সহ্যের সীমার বাইরে চলে গেছে। অথচ এজন্য দায়ী মুষ্টিমেয় কিছু মন্ত্রী এবং আমলা।

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের কাছে আরেকটি মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি। দ্রব্যমূল্য পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে। এতোদিন ধরে আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা জনগণকে বিভিন্ন বক্তৃতায় বলছিলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণেই জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। কিন্তু এখন দেখা যাচ্ছে জিনিসপত্রের দাম যতটা না বিশ্ববাজারের কারণে বেড়েছে তার চেয়ে বেশি বেড়েছে স্থানীয় সিণ্ডিকেটের কারণে। একটি মহল সিণ্ডিকেটের মাধ্যমে রীতিমতো লুটপাট করছে এবং এর ফলে দ্রব্যমূল্যের পরিস্থিতি অসহনীয় হয়ে পড়েছে।

আওয়ামী লীগের একজন কেন্দ্রীয় নেতা বলেছেন যে, ভারতে যেখানে পেঁয়াজের দাম দশ টাকা সেখানে বাংলাদেশে পেঁয়াজের দাম একশো টাকা হবে কেন? আর পেঁয়াজ আমদানি করলেই যে পেঁয়াজের দাম কমবে এমন নিশ্চয়তা কে দিচ্ছে, এমনটিই মন্তব্য করেছেন অন্য একজন নেতা। তারা বলছেন যে, আসলে সিণ্ডিকেট বন্ধ করতে হবে। সিণ্ডিকেট কারা করছে তাদেরকে চিহ্নিত করতে হবে।

আওয়ামী লীগের একাধিক তৃণমূলের নেতা বাংলা ইনসাইডারকে বলেছেন, এখন আমাদেরকে জনগণের কাছে যেতে হচ্ছে। সামনে নির্বাচন, নির্বাচন নিয়ে আমাদেরকে নানা রকম সাংগঠনিক তৎপরতাও চালাতে হচ্ছে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করছি যে, সাধারণ মানুষ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের পেলেই বিদ্যুৎ এবং দ্রব্যমূল্য নিয়ে প্রশ্ন করছে। অথচ বাংলাদেশ গত ১৪ বছরে অসাধারণ ভাবে এগিয়ে গিয়েছে। আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতারা মনে করেন যে, প্রধানমন্ত্রী যে স্বপ্নযাত্রা শুরু করেছিলেন তা হোঁচট খাচ্ছে কিছু মন্ত্রী এবং আমলার জন্য। অবিলম্বে এদেরকে মন্ত্রীসভা থেকে সরিয়ে জনগণের আস্থা অর্জন করতে হবে বলেও কেউ কেউ মনে করেন।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর