কিছুদিন আগেও প্রযুক্তিপ্রেমীদের ফেসবুকে পদচারণা বেশ লক্ষণীয় ছিল। বিশেষত টিনেজারদের ফেসবুকপ্রেম বৃদ্ধির পারদ এতোটাই দৃশ্যমান ছিল যে, শেষ পর্যন্ত এটাকে আসক্তিও বলতে হয়েছিল। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমটির এ উম্মাদনায় শামিল ছিল উন্নত বিশ্ব থেকে শুরু করে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোর স্কুল-কলেজপড়ুয়া বিপুলসংখ্যক টিনেজার।
তবে এবার হয়তো অভিভাবকরা কিছুটা নিশ্চিন্ত হতে পারেন। কারণ সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে, ফেসবুকের প্রতি আসক্তি ক্রমশ কমছে। শুধু কমছে বলা ভুল, যুবসমাজ নাকি ফেসবুকের প্রতি রীতিমতো বিতৃষ্ণ। আমেরিকার বিখ্যাত সংস্থা পিউ রিসার্চ সেন্টার গবেষণাটি চালিয়েছে।
গবেষণার জরিপে উঠে এসেছে, বিরক্তির কারণে ২৬ শতাংশ গ্রাহক তাদের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছেন। দেশটির গ্রাহকদের মধ্যে ফেসবুকের আসক্তি ক্রমান্বয়ে কমছে বলেও দাবি করা হয় ওই গবেষণায়। প্রতিবেদনে বলা হয়, যুক্তরাষ্ট্রের একটা বিরাট অংশের মানুষ নিয়মিত ফেসবুক প্রোফাইল চেক করা বন্ধ করে দিয়েছেন। প্রায় ৪২ শতাংশ মানুষ জানিয়েছেন, তারা কয়েক মাস ফেসবুক থেকে বিরত থাকতে চান। প্রায় ১ চতুর্থাংশ মানুষ বলছেন, ফেসবুকের প্রতি বিরক্ত হয়ে স্মার্টফোন থেকে অ্যাপটিই ডিলিট করে দিয়েছেন তারা। আরো অনেকেই ঝুঁকছেন এদিকে।
তবে আরো মজার কথা হল- ২৬ শতাংশ মানুষ ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ডিলিট করে দিয়েছেন বলে জানা গিয়েছে তাঁদের প্রায় অর্ধেকই ছাত্র এবং যুবসম্প্রদায়ের। কারণ অ্যাকাউন্ট ডিলিট করা গ্রাহকদের মধ্যে ৪৪ শতাংশ ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সের মধ্যে। বয়স্ক মানুষদের মধ্যে অবশ্য এই সোশ্যাল মিডিয়া প্লাটফর্মটির প্রতি তেমন একটা বিতৃষ্ণা নেই। মাত্র ১২ শতাংশ বৃদ্ধ (৬৫ বছরের ঊর্ধ্বে) মানুষ বলছেন যে তাঁরা ফেসবুক ব্যবহার করে সন্তুষ্ট নন, এবং অ্যাকাউন্ট ডিলিট করতে চান। বাকি ৮৮ শতাংশ মানুষ এখনও ফেসবুকের প্রতি আসক্ত।
সব মিলিয়ে, সময়টা খুব একটা ভাল যাচ্ছে না ফেসবুকের। সম্প্রতি, ওয়াল স্ট্রিটেও ফেসবুকের শেয়ারের দর অনেকটা পড়েছে এক ধাক্কায়। কেমব্রিজ অ্যানালিটিকা, মার্কিন নির্বাচনে ফেসবুকে হ্যাকিংয়ের অভিযোগ, এসবের পর জনপ্রিয়তা যেভাবে কমছে তাতে আরও বড় লোকসানের মুখে পড়তে হবে ফেসবুককে।