আজ রবিবার। ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ। ৯ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় রাত ১২:৪১

সেই গ্রেনেড হামলা: ২১ শে আগস্ট আহত হয়েছিল বাংলাদেশ : জসিম উদ্দিন আকন্দ রনি।

সেই গ্রেনেড হামলা: ২১ শে আগস্ট আহত হয়েছিল বাংলাদেশ : জসিম উদ্দিন আকন্দ রনি।
নিউজ টি শেয়ার করুন..

দ্যাটাইমসঅফবিডি.কম: ঢাকা -মঙ্গলবার-২১ আগস্ট ২০১৮ : ০৪ ভাদ্র ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

২০০৪ সালের ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউয়ের শেখ হাসিনাকে লক্ষ্য করে হয়েছিল ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা৷ সেই ঘটনার আজ ১৪ বছর৷ আতঙ্ক নাশকতার একটার পর এর একটা ঘটনা কাটিয়ে এগিয়ে চলেছে বাংলাদেশ৷ সেদিনের ঘটনায় আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমান সহ ২৪ জনের মৃত্যু হয়৷ শেখ হাসিনা সহ আহত হন প্রায় তিনশ জন৷ ফিরে দেখা সেই রক্তাক্ত ইতিহাস৷ লিখলেন,

মূলত ২০০৪ সালের ২১ শে আগস্টের হামলাটি ছিল ১৯৭৫ সালের ১৫ ই আগস্টের সেকেন্ড ভার্সন। বাংলাদেশে শেখ হাসিনাকে যতবার হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে ততবার অন্য কোনও নেতা বা নেত্রীর ক্ষেত্রে ঘটেনি। যতটুক জেনেছি প্রায় ২১ বার শেখ হাসিনার উপর হামলা হয়েছে। ২০০৪ সালে ২১ শে আগস্ট বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে আওয়ামীলীগের জনসভায় তৎকালীন বিরোধী নেত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা ট্রাকের উপর অস্থায়ী মঞ্চে ভাষণ দিচ্ছিলেন। ভাষণ শেষ করার কয়েক সেকেন্ডের মধ্যে চারদিক থেকে মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলা চালায় জামাত-বিএনপির জোট সরকারের মদতপুষ্ট জঙ্গিরা।

গ্রেনেড হামলায় প্রাণ হারান আইভি রহমান (প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী), তৎকালীন বিরোধী দলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার ব্যক্তিগত নিরাপত্তারক্ষী ল্যান্স করপোরাল (অব.) মাহবুবুর রশীদ, আবুল কালাম আজাদ, রেজিনা বেগম, নাসির উদ্দিন সরদার, আতিক সরকার, আবদুল কুদ্দুস পাটোয়ারি, আমিনুল ইসলাম মোয়াজ্জেম, বেলাল হোসেন, মামুন মৃধা, রতন শিকদার,লিটন মুনশী, হাসিনা মমতাজ রিনা, সুফিয়া বেগম, রফিকুল ইসলাম (আদা চাচা). মোশতাক আহমেদ সেন্টু, মোহাম্মদ হানিফ, আবুল কাশেম, জাহেদ আলী, মোমেন আলী, এম শামসুদ্দিন এবং ইসাহাক মিয়া ও অজ্ঞাত একজন।

সেদিন শেখ হাসিনা মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এসেছিলেন অসংখ্য নেতা কর্মীর দোয়া আর ভালবাসার জন্য। নিশ্চিত মৃত্যু জেনেও ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় শেখ হাসিনাকে রক্ষা করার জন্য মানব বর্ম তৈরি করে মঞ্চে উপবিষ্ট আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় নেতারা শেখ হাসিনাকে রক্ষা করেন।

তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনাকে লক্ষ করে ছোড়া মুহুর্মুহু গ্রেনেড হামলা ব্যর্থ হওয়ার পর উন্মাদ ঘাতকরা নেত্রীর বুলেটপ্রুফ গাড়িতে বৃষ্টির মতো গুলি ছুঁড়েছিল। বর্বরোচিত ও নারকীয় এই হামলায় প্রাণে বেঁচে গেলেও গ্রেনেডের প্রচণ্ড- শব্দের কারণে বাম কান মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। বাম কানে শ্রবণশক্তি হারান শেখ হাসিনা। দেশে-বিদেশে চিকিৎসা নেয়ার এতদিন পরও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে উঠতে পারেননি তিনি।

চারদিকে আহত মানুষের আর্তনাদ আর রক্তে রঞ্জিত হয়েছিল ২৩ বঙ্গবন্ধু এভিনিউ। সাহসী কয়েকজন সাংবাদিক ভাইদের তোলা কিছু স্থিরচিত্র ও ভিডিও ফুটেজ দেখলেই হামলার ভয়াবহতা অনুধাবন করা যায়। এই হামলায় আওয়ামীলীগের অনেক নেতা কর্মী ও মহিলা নেত্রী আহত হয়েছিলেন অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করেছেন স্থায়ীভাবে।

এই হামলার নাটের গুরু কে জানেন? নিকৃষ্টতম এই হামলার নীল নকশা করেছিলেন তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার ছেলে বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান ও উই আর লুকিং ফর শুত্রুজ খ্যাত সাবেক স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, খালেদা জিয়ার রাজনৈতিক সচিব হারিছ চৌধুরী সহ খালেদা -নিজামীর জোট সরকারের অনেক হোমরা চোমরা। ধিক্কার,ঘৃণা জানিয়েও এদের প্রতি ক্ষোভ শেষ হবেনা।

জজ মিয়া নাটক তৈরি করেও শেষ রক্ষা হয়নি অমানুষগুলোর। হামলার আলামত (প্রমাণ) নষ্ট করে দেয়া সহ অনেক চেষ্টা করা হয়েছিল মূল হোতাদের আড়াল করতে কিন্তু বিধিবাম, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময়ে অধিকতর তদন্তে আসল রহস্য উন্মোচিত হয়।খালেদা-নিজামী জোট সরকারই ছিল গ্রেনেড হামলার মূল মদত দাতা।

বর্বরোচিত হামলায় ২১ শে আগস্টে নিহত সকল শহীদদের আত্মার শান্তি কামনা করি ও তাদের প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি।

বর্তমান প্রজন্ম ভালো করেই জানে, দেশরত্ন শেখ হাসিনা বাংলাদেশের জন্য এক সম্পদ,এক অকুতোভয় সাহসী রাষ্ট্রপ্রধান, এক লৌহমানবী। ২১ আগস্টে শেখ হাসিনা আহত হয়েছিলেন, আহত হয়েছিল বাংলাদেশ। কারণ শেখ হাসিনা মানেই তো বাংলাদেশ।

লেখক: ছাত্রলীগের প্রাক্তন কেন্দ্রীয় নেতা জসিম উদ্দিন আকন্দ রনি

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর