আজ রবিবার। ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ। ৯ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় রাত ১২:০০

মহানুভবতার দেয়াল : সমৃদ্ধ হোক চিন্তায়, চেতনায়, বিবেকে ও মননে!

মহানুভবতার দেয়াল : সমৃদ্ধ হোক চিন্তায়, চেতনায়, বিবেকে ও মননে!
নিউজ টি শেয়ার করুন..

দ্যাটাইমসঅফবিডি.কম: ঢাকা -শুক্রবার -১০ আগস্ট ২০১৮ : ২৬ শ্রাবণ ১৪২৫

সকলে মিলে চালু করলাম মহানুভবতার দেয়াল, মজবুত ভিত্তির আশায় দৃঢ় চেতনায়! সোনামনিদের মধ্যে গড়ে উঠুক সহযোগিতামূলক মনোভাব, পড়াশোনার সঙ্গে সঙ্গে তারাও সমৃদ্ধ হোক চিন্তায়, চেতনায়, বিবেকে ও মননে! একটু একটু করেই আমরা কাজ শুরু করি, ইনশাআল্লাহ পরিবর্তন আসবেই একদিন।’

এভাবেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজের টাইমলাইনে পোস্ট করেন কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার দক্ষিণ মুকসেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক তানজিনা নাজনীন।গত মঙ্গলবার (০৭ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে প্রধান শিক্ষকসহ অন্যান্য শিক্ষকরা মিলে ওই স্কুলে একটা দেয়াল তৈরি করেছেন। দেয়ালের নাম দেওয়া হয়েছে ‘মহানুভবতার দেয়াল’।

এসময় অফিস রুমে এসে প্রধান শিক্ষক তানজিনা নাজনীন  বলেন, হঠাৎ খেয়ালি মনে এমন আইডিয়া আসে। পরে সহকর্মী শিক্ষকদের সঙ্গে বিষয়টি শেয়ার করি। তারাও রাজি হয়ে যান। পরে নিজেদের টাকায় কালি আর তুলি কিনে নিজেরাই দেয়ালে লিখি কথাগুলো। আর নাম দিই ‘মহানুভবতার দেয়াল’। 

এ বিষয়টি জেনে বিদ্যালয়ের এসএমসি’র সভাপতি তমিজ উদ্দিনও সহযোগিতার কথা জানান। এরপর স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীসহ তাদের অভিভাবকরাও তাদের সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেন।

দক্ষিণ মুকসেদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ১৯৭০ সালে স্থাপিত হয়। বিদ্যালয়ের চার কক্ষ বিশিষ্ট সেমিপাকা ভবনটি পুরোনো হয়ে গেছে। পাশেই নতুন করে দুই তলা পাকা ভবন নির্মাণ কাজ চলছে। বর্তমানে শিশু শ্রেণিসহ পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত মোট ১৬৫ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষকসহ চারজন শিক্ষক দায়িত্ব পালন করছেন।

প্রধান শিক্ষক হিসেবে তানজিনা নাজনীন ২০১৭ সালের ৩০ অক্টোবর এ বিদ্যালয়ে যোগ দেন। এরপর তিনি বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের মেধা বিকাশ ও কল্যাণের জন্য নানামুখী কার্যক্রম হাতে নেন। এরমধ্যে হাতধোয়া কর্মসূচিতে যেসব শিক্ষার্থী ভালো করেছে তাদের পুরস্কার হিসেবে নিয়মিত কলম উপহার দেন।

এছাড়াও দরিদ্র মেধাবী শিক্ষার্থীদের কাগজ ও কলম দিয়ে সহযোগিতা করেন। এরমধ্যে বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের নিয়ে শ্রদ্ধাভক্তি ও নৈতিকতা শিক্ষা নেওয়ার জন্য মায়েদের পা ধোয়া কর্মসূচি চালু করেন। অভাবগ্রস্ত শিক্ষার্থীদের স্কুল ড্রেস ও ব্যাগ দেওয়ার ব্যবস্থা চালু করেন প্রধান শিক্ষক তানজিনা নাজনীন।

অসাধারণ এক স্কুলের সাথে বাংলাদেশের পরিচয় হোক এই স্কুলে একটি দেয়াল আছে যার নাম “মহানুভবতার দেয়াল” দেয়ালের বা পাশে লেখা – তোমার যা প্রয়োজন নেই তা এখানে রেখে যাও আর ডান পাশে লেখা- তোমার দরকারী জিনিস পেলে নিয়ে যাও সেখানকার ছাত্র ছাত্রীরা তাদের অব্যবহৃত জামাকাপড় ও অন্যান্য জিনিসপত্র সেখানে সাজিয়ে রেখে চলে যায়। আর যখন যাদের যা যা দরকার তারা মনে করে বাড়ি নিয়ে যায়। ব্যতিক্রমী স্কুলটির নাম – দক্ষিণ মুকসুদপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়। কিশোরগঞ্জে অবস্থিত।

স্কুলের সকল ছাত্র ছাত্রী থেকে শুরু করে তাদের শিক্ষক শিক্ষিকাদের অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। বিভেদের দেয়াল ভেঙ্গে ভালোবাসার মানবিকতার যে দেয়াল গড়ে তুলেছে দক্ষিণ মুকসুদপুরবাসী সে কথা জানুক পুরো বিশ্ব। ‘মহানুভবতার দেয়াল’ কনসেপ্ট ছড়িয়ে পড়ুক সারা বাংলার প্রতিটি স্কুলে স্কুলে।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর