আজ সোমবার। ২৫শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ। ১০ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ৯ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় রাত ১১:৪৩

কথা বলতে দিন, তাহলে গুজব ছড়াবে না : মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।

কথা বলতে দিন, তাহলে গুজব ছড়াবে না :  মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
নিউজ টি শেয়ার করুন..

দ্যাটাইমসঅফবিডি.কম: ঢাকা -শুক্রবার -১১ আগস্ট ২০১৮ : ২৭ শ্রাবণ ১৪২৫

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, সত্যকে প্রকাশ হতে দিতে হবে। সত্য প্রকাশ হতে না দিলে গুজব ছড়াবে। তিনি বলেন, ‘কথা বলতে দিন, তাহলে গুজব ছড়াবে না।’

আজ শুক্রবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘গুজব তো তখনই ছড়ায় যখন আপনি সত্য প্রকাশে বাধা দেবেন, কথা বলতে দেবেন না। যারা সত্য প্রকাশ করবে, বলবে, তাদের গ্রেপ্তার নির্যাতন করবেন, তখনই গুজব ছড়াবে। তাই এসব বন্ধ করতে হলে সত্য প্রকাশ করতে দিতে হবে, কথা বলতে দিতে হবে।’

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের মধ্যে বিএনপি–ভীতি আছে। আওয়ামী লীগ বিএনপির নাম শুনলে জলাতঙ্ক রোগীর মতো ভয় পায়। এ কারণে যা কিছু হয়, সেখানে আওয়ামী লীগ বিএনপিকে দেখতে পায়। মনে হয় বিএনপি–ভীতিতে প্রত্যেক রাতে তারা ঘুমাতে পারে না।’

ফখরুল ইসলাম বলেন, শহিদুল আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে কেন? যখন তিনি আল–জাজিরাতে একটি সাক্ষাৎকার দিয়েছেন যে, এ দেশে বাকস্বাধীনতা, কথা বলার অধিকার নেই। সরকার গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করছে, বাকস্বাধীনতা রুদ্ধ করছে, এ সরকার একটি অনির্বাচিত সরকার, তখনই তাঁকে গ্রেপ্তার করে নির্যাতন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, এ সরকার ধরেই নিয়েছে জনগণের কাছে তাদের জবাবদিহির দরকার নেই। জনগণের কোনো মতামতের দরকার নেই। তারা এভাবে ‘স্বৈরাচারী’ কায়দায় ক্ষমতা দখল করে শাসন করে যাবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক দাবি করেছেন তাঁদের দলীয় কার্যালয়ে আক্রমণ নাকি বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা করেছে। হেলমেট পরা ও মুখোশধারী আক্রমণকারীরা ছাত্রলীগ-যুবলীগের কর্মী ছিল, এটি আহত সব সাংবাদিক এবং ছাত্রছাত্রী বলার পরেও তিনি (ওবায়দুল কাদের) তাদের বিচার করার জন্য নাম চান। এমন বাজে রসিকতায় ওবায়দুল কাদের আনন্দ পেতে পারেন, কিন্তু দেশবাসী লজ্জিত হয়।

আওয়ামী লীগই পুলিশ নিয়ন্ত্রণ করে, অভিযোগ করে ফখরুল ইসলাম বলেন, পুলিশ আওয়ামী লীগের নির্দেশে হেলমেট ও মুখোশধারীদের নির্বিঘ্নে সরে যেতে দিয়েছে। এরপর হামলায় আহতদের কাছে নাম চাওয়া একটি নোংরা রসিকতা ছাড়া আর কিছু হতে পারে না। তিনি বলেন, সাংবাদিক ও টিভি চ্যানেলগুলোর ওপরে কড়া নিয়ন্ত্রণ রাখার পরও এই সত্যগুলো টিভি ক্যামেরার চোখ এড়িয়ে যায়নি এবং তা জনসমক্ষে প্রকাশ পেয়েছে।

বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘পত্রিকায় আক্রমণকারীদের অনেকেরই ছবি ছাপা হয়েছে। কোনো কোনো ইলেকট্রনিক মিডিয়া, অনলাইন পত্রিকা এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণকারীদের ছবির ছড়াছড়ির পরও অপরাধীদের গ্রেপ্তারের জন্য ওবায়দুল কাদের সাহেব কেন ছবি ও নাম চান? কী বিচিত্র এই দেশ। আর বিচিত্র বলেই তারা অপরাধ করে তার দায় চাপানোর চেষ্টা করছে বিএনপির ওপর।’

আন্দোলনে সমর্থনের বিষয়ে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা ছাত্রছাত্রীদের আন্দোলনের প্রতি প্রকাশ্যেই সমর্থন জানিয়েছি। এটা অপরাধ হলে প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে পুলিশ কর্মকর্তারা পর্যন্ত একই অপরাধে অভিযুক্ত হওয়ার কথা। কিন্তু যে সরকার প্রার্থী, ভোটার এবং ভোট ছাড়া নিজেরাই নিজেদের নির্বাচিত ঘোষণা করে জোর করে রাষ্ট্র চালাতে লজ্জাবোধ করে না, তাদের কাছ থেকে পক্ষপাতমূলক বক্তব্য ও আচরণ ছাড়া আর কী আশা করা যেতে পারে?’

সড়ক আইন বিষয়ে বিএপির মহাসচিব বলেন, শিক্ষার্থীদের দাবি মানার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে সরকার মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইনের যে সংশোধনী অনুমোদন করেছে, তা ইতিমধ্যেই পরিবহন মালিক সমিতি ছাড়া সবাই প্রত্যাখ্যান করেছে। সংশোধিত এই আইনে ছাত্রছাত্রীদের দাবি করা নিরাপদ সড়ক অর্জিত হবে না। কারণ এই আইনে সড়ক পরিবহন খাতে মানুষ হত্যা ও অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা এড়ানোর স্পষ্ট দিকনির্দেশনা কিংবা কঠোর শাস্তির বিধান নেই।

আইনে বিআরটিএর অভ্যন্তরীণ দুর্নীতি দমনের কোনো বিধান রাখা হয়নি। দুর্ঘটনায় মৃত্যুকে হত্যাকাণ্ড বলা হবে কি না, এটি নির্ধারণের দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট কাউকে রাখা হয়নি। এই আন্দোলন এবং দীর্ঘদিন ধরে যারা নিরাপদ সড়কের জন্য কাজ করছেন, তাঁদের সঙ্গে অর্থবহ আলোচনা করে প্রস্তাবিত আইনে প্রয়োজনীয় সংশোধনীর দাবি জানান তিনি।

এ ছাড়া সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের বাড়ির সামনে মার্কিন রাষ্ট্রদূত মার্শা বার্নিকাটের ওপর হামলা এবং বদিউল আলম মজুমদারের বাড়ি আক্রমণ ও ভাঙচুরের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগের ‘গুন্ডাদের’ গ্রেপ্তার না করায় তীব্র নিন্দা জানান ফখরুল।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য খন্দকার মোশাররফ হোসেন, মওদুদ আহমদ, গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, উপদেষ্টা আবদুস সালাম, জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আবদুস সালাম আজাদ প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।সূত্র:প্রথম আলো।


নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর