আজ রবিবার। ২৪শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ। ৯ই আশ্বিন, ১৪৩০ বঙ্গাব্দ। ৮ই রবিউল আউয়াল, ১৪৪৫ হিজরি। এখন সময় রাত ১২:২৩

এ যেন প্রকৃত বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ,অসাধারণ সব উদ্যোগ

এ যেন প্রকৃত বঙ্গবন্ধুর ছাত্রলীগ,অসাধারণ সব উদ্যোগ
নিউজ টি শেয়ার করুন..

দ্যাটাইমসঅফবিডি.কম: ঢাকা -রবিবার-০৯ আগস্ট ২০১৮ : ২৩ ভাদ্র ১৪২৫ বঙ্গাব্দ

একটা বিশ্ববিদ্যালয়ে নির্বাচিত ছাত্র সংসদ আছে, তারা তাদের নির্বাচনের সময় প্রতিশ্রুতি দেওয়া ১২ দফা নির্বাচনী ইশতেহারের প্রায় সবগুলো তো পূরণ করেছেই, এর বাইরেও সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের কল্যাণে অসাধারণ সব উদ্যোগ নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসের চেহারাটাই পাল্টে দিচ্ছে!

না, কোন সুখস্বপ্নের কথা বলছি না। এমন ঘটনা ঘটেছে সত্যিই! বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে কার্যকরী ছাত্র সংসদের জন্য প্রায়ই আফসোস করি আমরা। একটা কার্যকরী ছাত্র সংসদ যে কি অসাধারণ সব কাজ করতে পারে, সেটার যুগান্তকারী আদর্শ প্রতিষ্ঠার যুদ্ধেই যেন নেমেছে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্র সংসদের নেতৃত্বদানকারী চমেক ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। ডেডিকেশন আর নিরলস প্রচেষ্টায় রীতিমত বিপ্লব ঘটিয়ে যাচ্ছেন তারা।চমেক ছাত্রলীগ, চমেক ছাত্র সংসদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, নির্বাচনী ইশতেহার

চলুন শুরুতেই জেনে আসি, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ছাত্র সংসদ ২০১৭-২০১৮ নির্বাচনে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ চমেক মনোনীত সাব্বির-আকাশ প্যানেল থেকে যে নির্বাচনী ইশতেহারগুলো পূরণ করা হয়েছে, সেগুলো কি কিঃ

  • চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রধান লাইব্রেরী শীততাপ নিয়ন্ত্রিতকরণ।
  • ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার পথ সুগম করার জন্য একটি অত্যাধুনিক Bones Library (বোনস লাইব্রেরী) স্থাপন।
  • ছাত্র-ছাত্রীদের স্বাস্থ্যসেবা নির্বিঘ্ন করতে প্রত্যেকের জন্য হেলথ কার্ড চালু।
  • অস্বচ্ছল মেধাবী শিক্ষার্থীদের জন্য “CMCSU” বৃত্তির ব্যবস্থা করা।
  • চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ক্যাম্পাসে মুক্তমঞ্চ স্থাপন।
  • সালাম (ULG) ও বরকত (LLG) লেকচার গ্যালারী সংস্কার।
  • ছাত্র-ছাত্রীদের গবেষণার সুবিধার্থে স্টুডেন্ট রিসার্চ কর্ণার স্থাপন।
  • প্রধান ছাত্রাবাসে ছাত্রদের নিরাপত্তার জন্য সিসিটিভি ক্যামেরা স্থাপন।
  • শাহ্ আলম বীর উত্তম অডিটোরিয়াম এর সংস্কার ও অবকাঠামোগত উন্নয়ন।
  • ক্যাম্পাস এবং প্রধান ছাত্রাবাসের বাস্কেটবল গ্রাউন্ড সংস্কার!

ইশতেহারগুলো যেমন অভিনব ঠিক তেমনি এর বাস্তবায়নও কষ্টসাধ্য হওয়াই স্বাভাবিক! কিন্তু ছাত্রলীগের নেতৃত্বে সাব্বির-আকাশ প্যানেল জয়ী হবার পর গত দেড় বছরে অবিশ্বাস্য পরিশ্রম আর দায়বদ্ধতার জায়গায় থেকে শুধু যে এই প্রতিশ্রুতিগুলোই বাস্তবায়ন করেছে, তাই-ই নয়, ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণে করেছে আরো অনেকগুলো কাজ। গত বছর নির্বাচিত হয়েই সবার প্রথমে তারা তাক লাগিয়ে দিয়েছিল সাহিত্য লাইব্রেরি বানিয়ে। দারুণ কনসেপ্ট, আলো-আধারির খেলা, দেয়ালে চমৎকার সব শেলফ, মাঝে মাঝে বাংলার সাহিত্যের সব পুরোধাদের ছবি, আর বসে বই পড়বার দারুণ ব্যবস্থা। এরপর আর তারা থেমে থাকেনি। তবে তাদের কাজগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অসাধারণ ছিল বোনস লাইব্রেরী। সাধারণ শিক্ষার্থীদের জন্য বিশ্বে সম্ভবত এই প্রথমবারের মত বোনস লাইব্রেরী তৈরি হলো। এ নিয়ে ফেসবুকে বিস্তারিত লিখেছেন চমেক ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক মোঃ জামিউর রহমান আকাশ। স্ট্যাটাসটি দ্যা টাইমসঅফবিডি.কম পাঠকদের জন্য হুবহু তুলে ধরা হল।চমেক ছাত্রলীগ, চমেক ছাত্র সংসদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, নির্বাচনী ইশতেহার

এবারের সংসদ এর ইশতেহারের সবচেয়ে ব্যাতিক্রমী ইশতিহার ছিল বোনস লাইব্রেরী কারণ আমাদের ইশতিহারে দেয়ার আগে বোনস লাইব্রেরী এর নাম কেউ কখনো আগে শোনেনি। বলতে গেলে বিশ্বে প্রথম বোনস লাইব্রেরী স্থাপনের উদ্যোগ আমরাই নিয়েছি। তাই প্রথম যে সমস্যা গুলোর মুখোমুখি আমরা হয়েছি তা হল সঠিক দিক নির্দেশনার অভাব। কি কিভাবে করবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। রুম কোথায় হবে? বোনস কোথায় পাবো কিছুই বুঝে উঠতে পারছিলাম না। চিন্তা ভাবনা করতে করতে লাইব্রেরীর পাশে একটা খালি জায়গা পেলাম যা কোন কাজে ব্যবহার হতো না।

যেই চিন্তা সেই কাজ। স্যারের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে শূন্যের উপর বানানো শুরু করলাম আমাদের স্বপ্নের বোনস লাইব্রেরী। এই কাজে আমরা সব থেকে বেশি সাহায্য পাই চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ভাইয়ের। তিনি আমাদের পুরো রুমটি তৈরী করতে সহযোগিতা করেন। আমরা দ্বিগুণ উদ্যমে কাজ করতে থাকি। প্রথম প্রথম অসম্ভব মনে হচ্ছিলো কাজটা। কিন্তু আমাদের অনুপ্রেরণার জায়গাটায় ছিলো আমাদের চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের ছাত্রছাত্রীদের আামাদের উপর বিশ্বাস এবং চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের মেধাবী শিক্ষাথীদের প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা।চমেক ছাত্রলীগ, চমেক ছাত্র সংসদ, চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ, নির্বাচনী ইশতেহার

সরকারী মেডিকেল কলেজের অধিকাংশ শিক্ষার্থী আসে মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র পরিবার থেকে। মেডিকেলে চান্স পাওয়ার পর ১ম বর্ষে সম্পূর্ণ নতুন জায়গায় এসে মেডিকেলের এতো এতো দামী বই খাতা কিনার পরে ৩০-৪০ হাজার টাকা দিয়ে এক সেট বোনস কিনে পড়া আসলেই অনেক পরিবারের সাধ্যের বাইরে চলে যায়। সেই চিন্তা ভাবনা থেকেই আমাদের বোনস লাইব্রেরী বানানোর উদ্যোগ। কিন্তু এই উদ্যোগ হয়তো বা কখনোই সম্ভব হতো না যদি আমরা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের শিক্ষকবৃন্দের সহযোগীতা না পেতাম। ধন্যবাদ দিতে চাই আমাদের অর্থোপেডিক্স ওয়ার্ডের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা ইকবাল হোসেন স্যার, অধ্যাপক ডা চিরঞ্জীব বড়ুয়া স্যার, ডা সায়েদা রুমানা সিদ্দিকী ম্যাম, চমেকসুর সাবেক প্রো ভিপি Atnamis Roy দাদা, ৫৪ তম প্রজন্মের ধ্রুব রায় দাদা এবং আই ডি এ ১৮-১৯ কে আমাদের বোনস লাইব্রেরী তে বোনস দিয়ে আমাদের সহযোগিতা করার জন্য। আরো ধন্যবাদ দিতে চাই আামাদের শ্রদ্ধেয় অধ্যক্ষ অধ্যাপক ডা সেলিম মো জাহাঙ্গীর স্যারকে আমাদের সকল ধরনের সহযোগিতা করার জন্য।

আপাতত ১৫ সেট বোনস এবং এনাটমির প্রায় ১৩০ টি মেইন বই নিয়ে যাত্রা শুরু করছে আমাদের বোনস লাইব্রেরী। প্রতিনিয়ত বাড়বে আমাদের বোনস লাইব্রেরীর বোনসের সংখ্যা। এভাবেই একদিন আসবে যেদিন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের কোন শিক্ষার্থীর আর বোনস কিনতে হবে না। আমরা সেই দিনের অপেক্ষায়।

সবশেষে আমরা এই বোনস লাইব্রেরী চট্টগ্রাম মেডিকেল এনাটমী বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান, যিনি ছাত্রদের কাছে পিতার সমতুল্য ছিলেন, যিনি ছাত্রদেরকে তার সন্তানের চেয়েও বেশী ভালো বাসতেন, যার হাত ধরে আমাদের এনাটমী বিভাগ সাফল্যের চূড়ায় আরোহণ করেছিল সেই মহাপ্রাণ অধ্যক্ষ প্রফেসর ডাঃ মনসুর খলিল স্যারকে উৎসর্গ করলাম এবং এই লাইব্রেরী এর নাম দিলাম “প্রফেসর ডাঃ মনসুর খলিল বোনস লাইব্রেরি”। স্যার ওপারে ভালো থাকবেন।

ঠিক এভাবেই চমেক ছাত্র সংসদ রীতিমত দেখিয়ে দিয়েছে কিভাবে প্রতিশ্রুতি রাখতে হয়। তাদের নির্বাচনী ইশতেহারগুলো যেমন চমৎকার, ঠিক তেমনি তারা সেগুলো বাস্তবায়নও করে দেখিয়েছে। তৈরি করে চমেকের প্রথম মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্যালারী নির্মাণের মত অসাধারণ সব কাজ। ছাত্র সংসদের ভিপি ও চমেক ছাত্রলীগের ভাইস প্রেসিডেন্ট সাব্বির আহমেদ ফেসবুকে দেওয়া স্ট্যাটাসে কথা বলছিলেন এ নিয়েইঃ

এই সংসদ শুরুতে ১২ টি ইশতেহার দিয়েছিল এবং সেই ভাবেই কাজ শুরু করেছিল। তবে সংসদের মাঝপথে এসে আমরা অনুভব করি এই ক্যাম্পাসের কমন রুম থাকলেও তা অনেকটা না থাকার মতই। ক্যাম্পাসে দেশীয় খেলা খেলার জায়গা বা কোথাও বসে অবসরে আড্ডা দেয়ার জায়গার বড়ই অভাব ছিল। সেই থেকে প্রায় ৫ মাস ধরে ইশতেহারের বাইরে গিয়ে সংসদের পাশে আস্তে আস্তে আমরা কমন রুম টাকে ঢেলে সাজানো শুরু করি। লুডো, ক্যারাম, দাবা, টেবিল টেনিস, ডার্ট, সিএমসি মনোপলিসহ বিভিন্ন রকম দেশী খেলার সুযোগ তৈরী করতে থাকি। এর মাঝে আমরা সবাই সম্মিলিতভাবে একটি সিদ্ধান্ত নেই আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে কিছু করব।

এর মধ্যেই ৫৭ তম ব্যাচ এর ছোট ভাইরা মুক্তিযুদ্ধের ১০০ টি ব্যতিক্রমী ও তথ্যবহুল ছবি জোগাড় করে। আমরা আরও কিছু দুর্লভ ছবি সংগ্রহ করে “স্মৃতিতে স্বাধীনতা” নামক মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গ্যালারী তৈরীর কাজ শুরু করি। কাজগুলো খুব কঠিন ছিল, সময় সাপেক্ষ ছিল। দেশে মুক্তিযুদ্ধকে বেচে খাওয়ার লোক এখন অনেক, তবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে ছড়িয়ে দেয়ার লোকের এখনো অভাব আছে। আমরা এই গ্যালারী এর জন্য ১ টাকা স্পন্সরও পাই নাই। টাকার অভাবে ৪ বার কাজ বন্ধ হয়ে গেছে তবে থেমে যাইনি আমরা। মনের জোরে কাজ চালিয়ে গিয়েছি। এনাটমি থেকে নষ্ট কাঠ নিয়েছি, নষ্ট চেয়ার নিয়ে ঠিক করেছি, উচ্ছিষ্ট কাঠ থেকে বোর্ড বানিয়েছি। তারপর দেখতে দেখতে একসময় কাজটা শেষ হয়ে গেল। এখন শুধু উদ্বোধনের অপেক্ষা। এই জায়গা আমাদের অনেক কষ্টের জায়গা, আবেগের জায়গা। যদি একজন শিক্ষার্থীও এই কমনরুম থেকে উপকৃত হয়, যদি একজন শিক্ষার্থীও মুক্তিযুদ্ধের সঠিক ইতিহাস জানতে পারে তবে আমাদের এই উদ্দেশ্যে সফল।

সাব্বিরের লেখা পড়ে আগ্রহী হয়ে কথা বলতে চাই ছাত্র সংসদের দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতাকর্মীদের সাথে। তখন ২০১৪-২০১৫ মেয়াদের চমেক ছাত্রলীগের সভাপতি শুভ পাটোয়ারী ফেসবুকেই আলাপ করিয়ে দেন সাব্বির আহমেদের সাথে। সাব্বিরের কাছে জানতে চাই বাস্তবায়ন কঠিন হবে জেনেও কিভাবে এই ইশতেহারের দাবীগুলো নির্ধারণ করলেন?

সাব্বির বলেন, আমি গত ছাত্রসংসদে সাধারণ সম্পাদক হিসেবে ছিলাম। থাকা অবস্থায় আমার একটা ধারণা মনে প্রাণে বিশ্বাস করতাম যে যদি ভালো কাজের উদ্দেশ্য থাকে, তাহলে কিভাবে যেন তা বাস্তবায়নের একটা রাস্তা বের হয়ে যায়। কিন্তু তবুও আমরা ইশতেহারগুলো দেয়ার আগে কিছু মানুষের সাথে কথা বলে নিয়েছিলাম। তারা আমাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তারাও আমাদের সাহায্য করবেন। আমাদের কিছু কাজ ছিল যেগুলো আসলে সরকারী কাজ। যেমন মুক্ত মঞ্চ স্থাপন, লাইব্রেরী শীততাপ নিয়ন্ত্রিত করণ ইত্যাদি। আমরা ভেবেছিলাম সরকার থেকেও আমরা কিছু সাহায্য পাবো। যেহেতু ছাত্রসংসদের ভিপি হিসেবে আমি একাডেমিক কাউন্সিল এর মেম্বার। সেখানে আমি কোন সরকারী কাজের দাবী উত্থাপন করতে পারি। সেটি বাস্তবায়নের দায়িত্ব কলেজ কর্তৃপক্ষের। তবে সবচেয়ে বড় ভরসার স্থল ছিল আমার ছাত্রলীগের ৮৯ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি। যদিও ছাত্রসংসদ এর সদস্য মাত্র ২০ জন, কিন্তু আসলে আমরা ৮৯ জনই ছাত্রসংসদের সদস্য মনে করি। ভরসা ছিল ৮৯ টা ছেলে একই সাথে চললে বিন্দু থেকেও সিন্ধু গড়া যায়। আর একটা গাট ফিলিং তো ছিলই যা উদ্দেশ্যে যদি মহৎ হয় তাহলে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। তাহলে কেন লক্ষ্যটা বড় রাখবো না? এই থেকেই আমাদের ১২ টি ইশতেহার দেয়া।

সাহিত্য লাইব্রেরী

এরপর জানতে চাই নির্বাচিত হয়েই প্রথম কোন ইশতেহারটি বাস্তবায়নের কাজে হাত দিলেন তারা? সাব্বির জানান, আমরা ১ম ইশতেহার পূরণ করার উদ্যোগ নেই ফেব্রুয়ারী, ২০১৮ তে। সেটি হল লাইব্রেরী শীততাপ নিয়ন্ত্রিতকরণ। সাধারণ চোখে এটি বিলাসিতা হলেও চমেকের ছাত্র ছাত্রীদের জন্য এটি বিলাসিতা ছিল না মোটেও। এর পেছনে কয়েকটি কারণ ছিল-

১। প্রায় ৩,০০০ স্কোয়ার ফিট এর লাইব্রেরীতে জানালা মাত্র ১০ টি। তাও ছোট ছোট।
২। লাইব্রেরী এত চারপাশে খাবারের দোকান এবং সেখান থেকে নির্গত তাপে লাইব্রেরীতে বসে পড়া খুবই কষ্টকর হয়ে পড়ে।
৩। দুপুর ১ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত রোদটা যেই দেয়ালে এসে পড়ে সেখানে কোন সানসেটও নেই। পুরোপুরি খোলা। এই সব কারণে লাইব্রেরীতে বসে পড়াশুনা করার মত পরিবেশ থাকত না। আর যেহেতু মে থেকে আবার প্রফ শুরু হবে। আমরা চেয়েছিলাম পরের প্রফ শুরুর আগে এসি করার কাজটি শেষ করতে।

সাহিত্য লাইব্রেরী

তবে কাজগুলো করতে গিয়ে যে নানা রকমের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে তাদের, সেটাও উল্লেখ করেন সাব্বির। জানান, কাজটা সরকারীভাবে অথবা অনুদানের মাধ্যমে করার অপশন ছিল। সরকারীভাবে চেষ্টা করে প্রায় তিন মাস ধরে প্রতিদিন পিডব্লিউডির অফিসে ঘুরেও লাভ হয়নি। তাদের নাকি এসি লাগাতে ১৮ মাস লাগবে। অথচ এই সংসদের মেয়াদ হচ্ছে ১১ মাস। বাধ্য হয়েই তারা নানা জায়গায় অনুদানের আবেদন করে বহু কষ্টে টাকা যোগাড় করে ২২ টনের এসি লাগান।

তবে ছাত্র সংসদের যে কাজটি নিয়ে সবচেয়ে বেশি আলোচনা হয়েছে, সেই বোনস লাইব্রেরী নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সাব্বির জানালেন আরো আশাবাদের কথাঃ

“আমাদের যদি বলা হত ১২টি ইশতেহার এর মধ্যে শুধুমাত্র একটি ইশতেহার পূরণ করতে হবে তাহলে আমরা সেই ইশতেহারটি পূরণ করতাম যেটিতে আমার গরীব কিংবা মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা ছাত্র ছাত্রীদের উপকার হবে। একজন মেডিকেল ছাত্রের জন্য ১ সেট বোনস এর কোন বিকল্প নেই। সিন্ডিকেট এর কারণে প্রতি সেট বোনস এর দাম এখন প্রায় ৩০,০০০-৪০,০০০ টাকায় গিয়ে পৌছেছে। তবে প্রয়োজন আর বাস্তবতা সবার জন্য মিলে না। সরকারী মেডিকেল এর মধ্যবিত্ত পরিবার থেকে উঠে আসা ছেলে মেয়ে গুলো যখন মেডিকেলে টিকে বাবা মায়ের মুখ উজ্জ্বল করে তার পরমুহূর্তেই এক সেট বোনসের দাম শুনে সেই মুখে অমাবস্যার অন্ধকার এসে ভর করে। মেডিকেল এর পড়াশুনা,বই খাতা, বা সামগ্রী এমনিতেই অনেক ব্যয়বহুল, তার মধ্যে এক সেট বোনস কেনার সামর্থ্য অনেকেরই হয় না। আরেক জনের সাথে শেয়ার করে কেনা, বা বন্ধুর কাছ থেকে বোনস চেয়ে নিয়ে পড়ার কারণে অনেকেই এনাটমি বিষয়ে সাফল্য লাভ করতে পারে না। আবার অনেক সময় বোনস চেয়ে বন্ধুর কাছে প্রত্যাখাত হয়ে ইনফিরিওরিটি কম্পলেক্স এ ভোগা সবকিছুই এই ৪০,০০০ টাকার কাছে হার মেনে নেয়। এই সব সমস্যার সমাধান করতে আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম একটি বোনস লাইব্রেরি স্থাপন করব।
প্রথম যখন আমরা এই ইশতেহারটা বললাম খুব কম মানুষ বলেছিল এটা সম্ভব। তবুও বিশ্বাস রেখেছিলাম নিজেদের উপর। সবচেয়ে কঠিন ছিল মানুষকে বোঝানো, জিনিসটা কি, কিভাবে করব। এই উদ্যোগ বাস্তবায়নে আমাদের ১ম বাধা ছিল বোনস সেট কালেক্ট করা। কাউকে যখন আপনি বোঝাতে পারবেন না, দেখাতে পারবেন না তখন সেই ব্যাপারে তাকে কনভিন্স করা খুব কঠিন। তারপরেও আমাদের পূর্বসূরীরা অসাধারণ কাজ করে গিয়েছিলেন বলেই মনে হয় আমাদেরকে অন্ধের মত বিশ্বাস করে বোনস ডোনেট করা শুরু করলেন আমাদের পরিচিতরা।
কারও হয়ত একটা স্যাক্রাম রয়ে গিয়েছিল সেটি আমাদের দিয়ে দিল, অথবা কারো হয়তো দুই ভাই বোন ডাক্তার তার মধ্যে এক সেট দিয়ে দিল, কেউ আবার নিজ উদ্যোগে এক সেট বোনস কিনেও দিল। এভাবে বোনস আসা শুরু করল। আমরা বোনস গুলো ঘষা মাজা শুরু করার জন্য একটা রুম খুঁজতে লাগলাম। এর মধ্যে আমাদের এনাটমী বিভাগ আমাদের ৫০,০০০ টাকা দিল তাদের ফান্ড থেকে। সেটি দিয়ে বোনসগুলো প্রসেস করার একটা রুম বানালাম। কোন বোনস ভেঙ্গে হয়ে থাকলে সেটি জোড়াতালি দিলাম, এক ফিমারের হেড নিয়ে অন্য ফিমারে লাগালাম। এর পরের সমস্যা ছিল পড়ার মত একটা পরিবেশ তৈরী করা। আমরা সিদ্ধান্ত নিলাম, আমরা এত সুন্দর করে জিনিসটা বানাবো, যাতে প্রচণ্ড ডিপ্রেশনে ভোগা ছেলেটাও সেখানে গিয়ে যেন মন ভালো করে পড়তে বসতে পারে।
তবে পুরো মেডিকেল ঘুরে আমরা এমন কোন জায়গা পেলাম না যেটি সকাল ০৮ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। শেষে হঠাৎ একদিন বের করি আমরা যে প্রধান লাইব্রেরী এর পাশে একটা ১০০০ স্কোয়ার ফিটের জায়গা আছে। আমরা গণপূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে বিল্ডিং-এর ডিজাইন বের করলাম। দেখলাম সেখানে পরবর্তীতে আর কোন কিছু করার প্ল্যান নেই। আর যেহেতু লাইব্রেরী সংলগ্ন রুম তাই সেটি সকাল ৮ টা থেকে রাত ১০ টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। সাথে প্রধান লাইব্রেরীয়ানের সাপোর্টও পাওয়া যাবে। এই ভেবে সেই জায়গা তে কিছু করার জন্য একাডেমিক কাউন্সিল বরাবর আবেদন করলাম।
আমরা আমাদের পুরো পরিকল্পনা সেখানে পেশ করলাম, যে এই লাইব্রেরী কিভাবে গরীব ছাত্রদের স্টাডির বিভীষিকাময় অবস্থা দূর করবে সেটা ব্যাখ্যা করলাম। প্রস্তাবে একাডমিক কাউন্সিলের ৬০ জন প্রফেসর একসাথে হাততালি দিলেন।এই জীবনে একজন প্রফেসরের প্রশংসা শোনাও ভাগ্যের ব্যাপার, সেখানে একসাথে ৬০ জন প্রফেসরের হাততালি পাওয়াটা তখন অবাস্তব ঠেকেছিল। একইসাথে কর্মস্পৃহা বাড়িয়ে দিয়েছিল শত গুণ।
বোনস লাইব্রেরী বানাবার প্রাক্কালে
তবে যতটা সহজ ভেবছিলাম তা ততটা সহজ হল না। আমরা ভেবেছিলাম মাত্র ১০০০ স্কোয়ার ফিট, ৩ লক্ষ টাকা দিয়ে হয়ে যাবে। হিসেব করতে গিয়ে দেখি এই রুম বানাতে কমপক্ষে ৭ লক্ষ টাকা খরচ হবে। আবারো ডোনেশনের খোঁজ চলল। প্রায় ৩ মাস পর দক্ষিণ জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আবু তৈয়ব ভাই আমাদের আগ্রহ দেখে রুমের কিছু অংশ করে দিতে রাজি হলেন। আর একই সময়ে আমরা আরো ছোটখাট কিছু ফান্ড ম্যানেজ করলাম। নানা ঘাত-প্রতিঘাত পেরিয়ে একসময় রুমটাও হয়ে গেল। আমরা নিজেরাই যত কম খরচে পারি ডেকোরেশনের কাজ শুরু করলাম। ভাটিয়ারি থেকে গিয়ে জাহাজের পরিত্যক্ত টেবিল চেয়ার এনে কাঠ মিস্ত্রী দিয়ে ঠিক করে, রঙ করে বসিয়ে দিলাম, আমাদের ছেলেরা নিজের হাতে কাঠ কেটে, গ্লাস কেটে এই কাজগুলো করল। আর এর মাঝে আমাদেরকে আরো কিছু মানুষ বোনস দিলেন। আমরা কিছু বোনস কিনলাম, কিছু এনাটমী বিভাগ থেকে নিলাম। দেখতে দেখতে ১৫ সেট বোনস আর একটী লাইব্রেরী হয়ে গেল।
সাব্বির আরও জানান, এই মুহূর্তে আমাদের বোনস লাইব্রেরী তে ১৫ টি ফুল সেট বোনস আছে। যার আর্থিক মূল্য কম করে হলেও ৫ লক্ষ টাকা। আছে এনাটমী এর ১৩০ টি টেক্স বুক। যার মধ্যে গ্রেস এনাটমি, স্নেল, এটলাস সহ সব গুরুত্বপূর্ণ বইগুলো আছে। রুমটি সম্পূর্ণ শীততাপ নিয়ন্ত্রিত। এক সাথে কমপক্ষে ৪২ জন ছাত্র ছাত্রী এখানে পড়তে পারবে। খোলা থাকবে সকাল ০৮:০০ টা থেকে রাত ১০:০০ টা। স্টুডেন্ট আই ডি কার্ড জমা রেখে বোনস টি নিয়ে পড়ে আইডি কার্ড তুলে বোনসটি ফেরত দিলেই হবে। এই পুরো প্রক্রিয়াটিতে কারো কাছ থেকে একটি পয়সাও নেয়া হবে না। শুধুমাত্র বোনস হারালে বা নষ্ট করলে থাকবে জরিমানার ব্যবস্থা। এর মাধ্যমে যদি একজন শিক্ষার্থীও উপকৃত হয়, তবে মনে করব আমরা সফল। আমাদের স্বপ্ন চট্টগ্রাম মেডিকেলের আর একজনকেও বোনস কিনতে হবে না। সেই লক্ষ্যেই পরবর্তী সংসদ গুলো কাজ করবে ইনশাল্লাহ।“রিসার্চ সেন্টারের ব্যাপারে জানতে চাইলে সাব্বির জানান,
আমরা আমাদের ইশতেহারে কথা দিয়েছিলাম ছাত্রদের জন্য রিসার্চ ফ্যাসিলিটি তৈরি করব। আমরা কথা রেখেছি। আমরা চট্টগ্রামের একটি বড় রিসার্চ অর্গানাইজেশনের সাথে চুক্তি করি এবং তার মাধ্যমে ইতোমধ্যে ৪০ জন ক্যান্সার ও ১৫ জন স্কুল হেলথ নিয়ে রিসার্চ করছে। সেইসব রিসার্চ পেপার ও জার্নাল প্রকাশ এখন সময়ের অপেক্ষা মাত্র। সামনের মাসে আমরা একটা ওয়ার্কশপের আয়োজন করতে যাচ্ছি আধুনিক রিসার্চের উপর। আমাদের এই প্রচেষ্টার আলোকে আগামী মাস থেকে ব্রেস্ট ক্যান্সার ও লিম্মফোমা এর উপর ২ টি রিসার্চ প্রোগ্রামে আমাদের ছাত্র ছাত্রীরা অংশ নিবে। আমরা একটি রুমে কম্পিঊটার, প্রজেক্টর ও চেয়ার টেবিলসহ একটি রিসার্চ ফ্যাসিলিটি তৈরী করার চেষ্টা করছি, যদিও টাকার অভাবে এই কাজ এখন থেমে আছে। তবে সম্ভবত ২-১ দিনের ভেতর এই সুখবরটাও আমরা দিতে পারব।
মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস পাঠ দিতে কমনরুমের দেয়ালে সাঁটানো আছে এই ছবি গুলো।এভাবে মোটামুটি প্রায় সবগুলো প্রতিশ্রুতিই সাব্বির-আকাশের নেতৃত্বাধীন ছাত্র সংসদ বাস্তবায়ন করেছে এবং করছে। যা ইতিমধ্যেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিশাল সাড়া ফেলেছে। অনুপ্রাণিত করছে আরো অসংখ্য ছাত্রলীগ নেতাকর্মী থেকে শুরু করে সাধারণ শিক্ষার্থীদের! ছাত্র সংসদের মাধ্যমে আসা এই ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে অসাধারণ কিছু কথা বললেন প্রাক্তন চমেক ছাত্রলীগ সভাপতি শুভ পাটোয়ারী। যাতে লুকিয়ে আছে চমেক ছাত্রলীগের এই ধারাবাহিক সাফল্যের গোপন সুত্রও,
সংগঠনকে শক্তিশালী এবং সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের ভালোবাসা অর্জন করতে হলে আমাদের প্রথম দিন থেকেই কাজ করতে হবে যেদিন থেকে নতুন শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাসে পা রাখে। ওদের সুবিধা অসুবিধা সব দেখভাল করতে হবে। সংগঠনের কর্মীদের প্রথম দিন থেকেই অনুধাবন করে নিতে হবে কোন শিক্ষার্থীর কি প্রয়োজন বা সে কি প্রত্যাশা করে। আমাদের সেইভাবে তাকে সহযোগিতা করা দরকার। যেমন কেউ পড়াশুনা করতে পছন্দ করে। আপনি সংগঠনের যে ছেলেটি একাডেমিকভাবে ভালো তাকে ঐ শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করার জন্য নির্দেশ দিতে পারেন। আবার কেউ ডিবেট করতে পছন্দ করে। ছাত্রলীগের যে ছেলেটি ডিবেটের সাথে জড়িত আমরা তাকেই ঐ শিক্ষার্থীকে সহযোগিতা করার জন্য বলি। এভাবেই যদি আপনি প্রয়োজনে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে দাঁড়াতে পারেন তাহলে আপনার সংগঠন অবশ্যই ছাত্রবান্ধব হতে বাধ্য! আর সংগঠন শক্তিশালী করার ব্যাপারেও আমরা বরাবরই সচেষ্ট। আমরা প্রথমেই আলোকপাত করি শিক্ষার্থীদের পারিবারিক ব্যাকগ্রাউন্ড এবং সেখানে আমাদের প্রথমেই খোঁজ নেই তার পরিবার স্বাধীনতাবিরোধী কিনা বা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী রাজনীতির সাথে জড়িত কিনা। এই কাজটির জন্য প্রয়োজনে আমরা ঐ এলাকার আমাদের ভাতৃপ্রতিম সংগঠনগুলোরও সাহায্য নিয়ে থাকি। আমরা কর্মীরা ধীরে ধীরে নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ শুরু করি। ঠিক ১ বছর পর্যবেক্ষণের পর আমরা একজন শিক্ষার্থীর ছাত্রলীগের ফরম পূরণ সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেই তাকে সংগঠনের সদস্য করার। সর্বোপরি আমি মনে করি সংগঠন শক্তিশালী করতে হলে এবং সাধারণ শিক্ষার্থীদের ভালোবাসা পেতে হলে নির্বাচিত ছাত্রসংগঠনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ।এমন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীই তো চেয়েছিলাম আমরা, তাই না?

আর ছাত্রকল্যাণ কর্মকান্ড ছাড়া সংগঠনের কোনো মূল্য নেই। কারণ সংগঠন তৈরিই হয় মানুষের কল্যাণের জন্য। সুতরাং মানুষেই আস্থা অর্জনের জন্য যেকোনো সংগঠনেরই উচিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করে জনকল্যাণমূলক কর্মকান্ডে অংশগ্রহণ করা। আর আরেকটা ব্যাপার হলো আপনাকে নতুন নেতৃত্বকে সুযোগ দিতে হবে। যেকোনো মূল্যে ক্ষমতাকে কুক্ষিগত করে রাখলে নতুন নেতৃত্ব তৈরি হবে না। সংগঠনে নতুনত্ব আসবে-আগাবেও না। এজন্য নির্দিষ্ট সময় পরপর সম্মেলন হওয়া জরুরি। শিক্ষার্থীদের কল্যাণে এমন ছাত্র সংসদ, এমন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীই তো চেয়েছিলাম আমরা, তাই না?

ছাত্রলীগ যখনই নেতিবাচক কিছু করেছে; এগিয়ে চলো সোচ্চার থেকেছে, প্রতিবাদ করেছে, কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে সিটিজেন জার্নালিজমের মাধ্যমে। সেই ছাত্রলীগ যখন এমন অভাবনীয় কাজ করেছে, তার প্রশংসা কি আমরা করব না? অবশ্যই করব। করতেই হবে। কারণ এমন ছাত্রলীগই আমরা চাই! বর্তমান ছাত্রলীগের মাঝে সেই প্রতাপশালী ছাত্রলীগের ছায়া দেখতে চাই, যারা বাংলাদেশের সৃষ্টির পেছনেও রেখেছে অসামান্য ভূমিকা। সেই ছাত্রলীগের ছায়া দেখতে চাই, যারা গণতন্ত্রের জন্য রাজপথে বিদ্রোহের ঝড় তুলেছিল। সেই ছাত্রলীগের ছায়া দেখতে চাই, যারা ছাত্রশিবির-জামায়াতে ইসলামের সাথে লড়াই করে জীবন দিয়েছে। ছাত্রলীগ সাম্প্রতিক বছরগুলোতে যে ভয়াবহ ইমেজসংকটে ভুগছে, সেখান থেকে ছাত্রলীগের বর্তমান নেতৃত্ব এমন অভাবনীয় সব উদ্যোগের মাধ্যমে নতুন এক ধারার সূচনা করবে, এটিই প্রত্যেকের প্রত্যাশা। তেলবাজি, টেন্ডারবাজি, ‘সহমত ভাই’ থেকে বেরিয়ে আসুক ছাত্রলীগ, হয়ে উঠুক বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের প্রাণের সংগঠন।

নিউজ টি শেয়ার করুন..

সর্বশেষ খবর

আরো খবর