কলকাতার মাটিতে পা দিয়ে বিজেপির নেতাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ জানিয়ে দেন, এই রাজ্যের লোকসভা আসনের ৫০ শতাংশ আসন চাই-ই বিজেপির। কোনো অজুহাত শুনবে না দল। এই ৫০ শতাংশ আসন জয়ের জন্য ১০০ শতাংশ আসনে জয়ের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে নির্বাচনী ময়দানে। আজ বুধবার কলকাতায় এসে বিজেপির নির্বাচনী কর্মকর্তাদের সঙ্গে প্রথম বৈঠকেই এ কথা জানিয়ে দেন অমিত শাহ।
ভারতের আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের কৌশল ঠিক করতে আজ বুধবার সকালে কলকাতায় এসেছেন অমিত শাহ। দুই দিনের এই সফরে তিনি বৈঠক করবেন বিজেপির নেতা ছাড়াও কলকাতার বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে। পূজা দিতে যাবেন বীরভূমের তারাপীঠ মন্দিরে। যোগ দেবেন পুরুলিয়ার জনসভায়ও। আজ সকালে কলকাতায় এসেই তিনি কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের অতিথি নিবাসে চলে যান। সেখানেই তিনি বৈঠক করেন বিজেপির নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে।
আজকের বৈঠকে অমিত শাহ বলেন, এই ৫০ শতাংশ আসনে জয়ের জন্য যে রণকৌশল নিতে হবে, তা ঠিক করুক রাজ্য বিজেপি। বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটি এ ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করবে। আগামী বছরের মার্চ-এপ্রিল মাসে ভারতের লোকসভার ৫৪৩টি আসনে নির্বাচন হওয়ার কথা। আর এ আসনের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের রয়েছে ৪২টি আসন।
এ বৈঠকে বিজেপি সভাপতি আরও বলেছেন, এবারের লোকসভা নির্বাচনে তৃণমূলের সঙ্গে কোনো আপস বা সমঝোতা চলবে না। তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়তে হবে বিজেপিকে। পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন বিজেপি মার খেয়েছে, সেই মার প্রতিরোধ করার জন্য বিজেপিকে আরও শক্ত হাতে এগোতে হবে। মনে রাখতে হবে, বিজেপিকে ৫০ ভাগ আসনে জিততেই হবে। তাই এখনই এই নির্বাচনী তৎপরতা এবং জনসংযোগ বাড়াতে গোটা পশ্চিমবঙ্গকে তিনটি অঞ্চলে ভাগ করে রাজনৈতিক তৎপরতা চালানোর নির্দেশ দেয় অমিত শাহ। উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এবং জঙ্গলমহল—এই তিনটি অঞ্চলে ভাগ করে মাঠে নামতে হবে বিজেপির কর্মী বাহিনীকে। পাশাপাশি গ্রামে বাড়াতে হবে জনসংযোগ। যেতে হবে মানুষের দ্বারে দ্বারে। গড়তে হবে গ্রামকেন্দ্রিক বিজেপির সংগঠন।
এবার বিজেপি পশ্চিমবঙ্গের ৪২টি লোকসভা আসনের মধ্যে ২২টি আসনে জয়ের জন্য ইতিমধ্যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। সেই ২২টি আসনের তালিকাও রাজ্য বিজেপির নেতারা পাঠিয়ে দিয়েছেন অমিত শাহের হাতে। এবার সেসব আসনের বিজেপির জয়ের সম্ভাবনা কতটুকু, তা মাপতেই কলকাতায় এসেছেন অমিত শাহ।
বিজেপির নির্বাচন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আজ বৈঠকের পর অমিত শাহ বিকেলে যোগ দিয়েছেন বিজেপির সোশ্যাল মিডিয়ার সদস্যদের সঙ্গে হাওড়ার শরৎ সদনে আয়োজিত এক বৈঠকে। এরপর সেখান থেকে চলে যাবেন দক্ষিণ কলকাতার জিডি বিড়লা সভাঘরে। সেখানে তিনি বৈঠক করবেন কলকাতার বিশিষ্টজনদের সঙ্গে।
কাল বৃহস্পতিবার সকালে অমিত শাহ যাবেন বীরভূমের তারাপীঠ মন্দিরে। সেখানে তিনি তারাপীঠের মা কালীমন্দিরে পূজা দেওয়ার পর বীরভূমের বিজেপি নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন। এরপর তিনি চলে যাবেন পুরুলিয়ার বলরামপুরে। বলরামপুরের শিমুরিয়া ময়দানে বিজেপি আয়োজিত এক জনসভায়ও ভাষণ দেবেন তিনি। বৈঠকও করবেন বিজেপির পুরুলিয়া জেলা কমিটির নেতাদের সঙ্গে। তারপর তিনি বর্ধমানের অন্ডালের বিমানবন্দর থেকে বিমানে করে ফিরে যাবেন রাজধানী দিল্লিতে।
দ্যাটাইমসঅফবিডি.কম/২৮/০৬/১৮